সিলেট প্রতিনিধিঃ জাল কাবিন করে এক নারীকে বিয়ে করে টানা ৫ বছর একসঙ্গে সংসার করলেও দেয়নি স্ত্রীর মর্যাদা। নষ্ট করেছে গর্ভের তিনটি সন্তান। একপর্যায়ে ওই নারী প্রতিবাদী হয়ে স্ত্রীর মর্যাদা দাবি করেন এবং চতুর্থ বাচ্চাকে নষ্ট না করে দেখান পৃথিবীর আলো। মামলা করেন আদালতে এবং অভিযোগ করেন পুলিশের কাছেও। অবশেষে বিদেশে পালানোর আগমুহুর্তে ১লা সেপ্টেম্বর শুক্রবার স্বামীরূপী এ প্রতারককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃত তাজ উদ্দিন রনি (৪০) সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার চন্দরপুর বাজার এলাকার কালিডহর গ্রামের হাজী নুরুল হকের ছেলে। বর্তমানে সে নগরীর এয়ারপোর্ট থানাধীন চৌকিদেখি এলাকার আঙ্গুর মিয়া গলির একটি বাসায় প্রথম স্ত্রী ও ওই স্ত্রীর ঘরের সন্তানদের নিয়ে থাকে। রনি একজন চাল ব্যবসায়ী।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালে স্ত্রী-সন্তানের কথা গোপন করে নগরীর মজুমদারীর সুলতানা আক্তার লুবনার (৩২) সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে তাজ উদ্দিন রনি। নানা প্রলোভনে গোলাপগঞ্জে নিয়ে গিয়ে লুবনাকে বিয়ে করে। তবে সে বিয়ের কোনো কাবিন পরবর্তীতে লুবনা সংগ্রহ করতে পারেননি। বিয়ের পর জানতে পারেন, রনি বিবাহিত এবং প্রথম স্ত্রীর ও তিনটি সন্তানও রয়েছে। সবকিছু জানতে পেরে ভেঙে পড়েন লুবনা। কিন্তু রনিকে ভালোবাসেন তাই সবকিছু মেনে নিয়ে সঠিক কাবিননামার মাধ্যমে শরিয়ত মোতাবেক বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে রনিকে চাপ দিতে শুরু করেন তিনি। লূবনার পীড়াপিড়িতে ২০২০ সালে নগরীর বালুচর এলাকার এক কাজী দিয়ে ভুয়া কাবিন নামা তৈরি করে লুবনার সঙ্গে আবারও বিয়ের নাটক করে রনি। পরবর্তীতে বিষয়টি বুঝতে পেরে চলতি বছরের ফেব্রয়ারীতে আদালতে মামলা করেন লুবনা। পৃথক অভিযোগ দায়ের করেন সিলেট মেট্রোপলিট পুলিশ কমিশনার বরাবরে।
এ বিষয়ে এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খান মুহাম্মদ মাইনুল জাকির বলেন, রনির বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেছেন লুবনা। এর মধ্যে ধর্ষণ মামলায় শুক্রবার রনিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার তাকে আদালত কারাগারে প্রেরণ করেন।
তিনি বলেন, লুবনার অভিযোগ জাল কাবিন তৈরি করে তার সঙ্গে প্রতারণা করেছে রনি। তার গর্ভের ৩টি বাচ্চা নষ্ট করা হয়েছে। এছাড়াও লুবনার কাছ থেকে ব্যবসার কথা বলে ১৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে রনি। এ সংক্রান্ত কাগজপত্র তিনি দাখিল করেছেন। তদন্তসাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :