অনৈতিক সুপারিশ বন্ধসহ দেশের প্রধান নির্বাহীর জবাবদিহিতা চায় ঐক্য পার্টি


দ্যা সিলেট পোস্ট প্রকাশের সময় : জুন ১০, ২০২৫, ১১:৪০ অপরাহ্ন /
অনৈতিক সুপারিশ বন্ধসহ দেশের প্রধান নির্বাহীর জবাবদিহিতা চায় ঐক্য পার্টি

মুহাম্মদ আবদুর রহীম চৌধুরী

সাময়িক রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ ঐক্য পার্টি ( বিওপি) ২০২১ সালের ৫ ফেব্রুয়ারী প্রতিষ্ঠিত হয়। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের আকাঙ্খা অনুযায়ী বাংলাদেশ চললে বিওপি প্রতিষ্ঠার প্রয়োজন হতো না। যেসব বাধার কারণে দীর্ঘ ৫৪ বছরেও প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ সর্বজনীন শান্তি ও সমৃদ্ধির টেকসই রাস্তায় উঠতে পারেনি, সেসব বাধা চিহ্নিতপূর্বক জনগণের সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় গিয়ে তা দূরীকরণ করে নরওয়ে, জাপান কিংবা উন্নত অন্যান্য দেশের মতো টেকসই পরিবেশ সৃষ্টি করে দেশে বিরাজমান অন্যান্য ক্ষমতা প্রত্যাশী দলের জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করে বিওপি তার যাবতীয় রাজনৈতিক কর্মকান্ড স্থগিত করে দেবে। পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিওপি’র ব্যানারে কেউ নির্বাচন করবে না। বিওপি’র ফর্মূলা বাস্তবায়নের সাথে সম্পৃক্ত সবাই বিওপিতে যোগদানের পূর্বে যে দলে ছিলেন, সেই দলে ফেরত যেতে পারবেন।

জনগণের সমর্থন নিয়ে প্রথম ও শেষ বারের মতো বিওপি যেদিন সরকার গঠন করবে, সেদিনই দলটির সকল কার্যক্রম স্থগিত করে দিয়ে দলটিকে কারা ভোট দিয়েছে, কারা দেয়নি কিংবা কারা বিরোধিতা করেছে- এরকম বাছ-বিচার না করে দল, মত, ধর্ম নির্বিশেষে দলটি সবার সরকারে পরিণত হবে। দলটির পক্ষে তথা দলটিকে ক্ষমতায় আনতে অক্লান্ত পরিশ্রম যারা করেছে, তাদের কারো জন্য চাকরী কিংবা অন্য কোনো রাষ্ট্রীয় সুবিধার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে কেউ প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে সুপারিশ করবে না। এরকম কেউ করে থাকলে তাকে সরকারের পদ থেকে বাদ দেওয়া হবে। অন্যদিকে কোনো এমপি কিংবা মন্ত্রীর কোনো দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেলে পরিশুদ্ধ দুদক তার বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিবে। অভিযুক্ত ব্যক্তি সরকারের কেন্দ্রীয় প্রথম সাত জনের সাথে যোগাযোগ করতে পারবে না। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় উক্ত ৭ জন দুদকে কিংবা বিচারালয়ের কোনো বিচারকের কাছে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে বাঁচাতে কোনো প্রকার প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ যোগাযোগ করতে পারবে না। উল্লেখ্য যে দুদক ও বিচারালয় সম্পূর্ণ স্বাধীন করা হবে এবং তারা দেশের প্রধান নির্বাহীর বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে তারও ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতাপ্রাপ্ত হবে। অন্যদিকে দুদক ও বিচারালয় কঠোর জবাব দিহিতার আওতায় থাকবে। রাষ্ট্রের কেউ জবাবদিহিতার বাইরে থাকবে না।

৮ আগস্ট ২০২৪ থেকে শুরু করে এই দশ মাসে অস্বচ্ছ ও গোপনে নিয়োগ, অনৈতিক সুপারিশসহ অনেক দুর্নীতি হয়েছে। যা দেশপ্রেমিক কারো কাম্য নয়। অপেক্ষাকৃত কম যোগ্যদের নিয়োগ দিয়ে দেশের কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে। দেশের সব সেক্টরে সবচেয়ে যোগ্যদের বসানোর ক্ষেত্রে কোনো ধরনের আপোষ চলবে না। দেশকে এগিয়ে নিতে হলে যোগ্যদের অবশ্যই মূল্যায়ন করতে হবে। শতভাগ স্বচ্ছতা, যোগ্যতা ও মেধার ভিত্তিতে মূল্যায়ন হলে চাকরী প্রার্থীরা তদবির এর পিছনে ঘোরা বন্ধ করে যোগ্যতা অর্জনের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়ে আউটস্ট্যান্ডিং যোগ্য ব্যক্তি সৃষ্টি হবে।

একাধিক উপদেষ্টার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। তাছাড়া অনেক উপদেষ্টা যোগ্যতার সহিত জাতীয় দায়িত্ব পালন করছেন না। অভিযুক্তদের বাদ দিয়ে এবং কম উপযুক্তদের স্থলে সবচেয়ে বেশী যোগ্যদের দায়িত্ব দিয়ে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। এই দশ মাসে যা অনিয়ম হয়েছে, তারজন্য সরি বলে আর কোনো অনিয়ম হবে না, পিতা কিংবা পুত্র হলেও হবে না কোনো অনিয়ম বা পক্ষপাতিত্ব এরকম আশ্বাস দিয়ে দল, মত, ধর্ম নির্বিশেষে সবার হয়ে সব ধরনের অনিয়মে জিরো টলারেন্স দেখিয়ে দেশ চালানোর ঘোষণা দেওয়ার জন্য ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নিকট আহবান জানাচ্ছি।

বাংলাদেশ ঐক্য পার্টির ফর্মূলা বাংলাদেশ ঐক্য পার্টির নেতৃত্বে কিংবা একই মানসিকতার যে কারো নেতৃত্বে বাস্তবায়ন হোক-এমনটাই আমরা চাই। আমাদের পক্ষ থেকে বিগত ২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ইং তারিখ থেকে ২৫ মে ২০২৫ ইং তারিখ পর্যন্ত মোট ৬ বার প্রিয় মাতৃভূমিকে উন্নত দেশে রূপান্তরে করণীয় বিষয়ে বিভিন্ন পরামর্শ লিখিত আকারে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বরাবরে জমা দেওয়া হয়। দুঃখজনক হলেও সত্য যে আমাদের পরামর্শ মতো তিনি কাজ করছেন না। ফলে দেশ আবারো খারাপের দিকে চলে যাওয়ার উপলক্ষ সৃষ্টি হচ্ছে। এইবার শেখ হাসিনার আমলের ন্যায় পূনরায় খারাপ অবস্থা সৃষ্টি হলে দেশী-বিদেশী শত্রু দেশের মারাত্মক ক্ষতি করে দিবে। দেশপ্রেমহীন বিশ্বাসঘাতকরা বিদেশি প্ররোচনা ও সহযোগিতায় দেশের ক্ষতি করার সুযোগ যাতে না পায় তারজন্য বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নিকট বাংলাদেশ ঐক্য পার্টির ফর্মূলা বাস্তবায়নের জন্য উদাত্ত আহবান জানাচ্ছি। যদি বাংলাদেশ ঐক্য পার্টির ফর্মূলা বাস্তবায়ন হয় তাহলে প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ মারাত্মক ক্ষতি থেকে বেঁচে গিয়ে সত্যিকার শান্তি, ঐক্য ও সমৃদ্ধির জনপদে পরিণত হবে।

লেখকঃ দেশীয় ও আঞ্চলিক রাজনৈতিক সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানের প্রবক্তা ও প্রতিষ্ঠাতা বাংলাদেশ ঐক্য পার্টি।