সিলেট প্রতিনিধিঃ বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা: এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেছেন, আওয়ামী দুঃশাসনে অতিষ্ঠ দেশের গণতন্ত্রকামী মানুষ মুক্তির জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। আওয়ামী জাহেলিয়াত থেকে মুক্তি পেতে দেশপ্রেমিক জনতা বিএনপির দিকে চেয়ে আছে। শহীদ জিয়ার বিএনপিই দেশে প্রথম বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিল। তাই গণতন্ত্রের উপর আঘাত আসলে জনগন বিএনপির উপর ভরসা করে।
জনগণের দাবীকে বাস্তবে রুপ দিতেই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনের জন্য বিএনপি পুরোপুরি প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। এর অংশ হিসেবেই বিএনপি দেশব্যাপী দল পূনর্গঠন প্রক্রিয়াকে গুরুত্ব দিয়েছে। শক্তিশালী সংগঠন ছাড়া আওয়ামী ফ্যাসিবাদের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা সম্ভব নয়। আর তৃনমূল বিএনপি শক্তিশালী হলে দলও শক্তিশালী হবে। কারণ তৃনমূল বিএনপিই হচ্ছে দলের প্রাণ।
আর সময়ক্ষেপন করা যাবেনা। অক্টোবরের মধ্যেই অসমাপ্ত ওয়ার্ড সমূহ, ইউনিয়ন, পৌরশাখা ও উপজেলা বিএনপির সম্মেলন শেষ করতে হবে। নভেম্বরের মধ্যেই জেলা বিএনপির কাউন্সিল সম্পন্ন করতে হবে।
তিনি শনিবার ২৫ সেপ্টেম্বর সিলেট জেলা বিএনপি আয়োজিত বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথা বলেন। নগরীর একটি অভিজাত হোটেলের হলরুমে অনুষ্ঠিত সভায় জেলা আহবায়ক কমিটির সদস্যবৃন্দ, জেলার আওতাধীন সকল উপজেলা ও পৌর বিএনপির আহবায়কবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সভায় জেলা ও উপজেলা নেতৃবৃন্দকে কাউন্সিল সম্পন্ন করার জন্য প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
জেলা বিএনপির আহবায়ক- কামরুল হুদা জায়গীরদারের সভাপতিত্বে ও ১ম সদস্য আবুল কাহের চৌধুরী শামীমের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, বিএনপির সিলেট বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা: সাখাওয়াত হাসান জীবন ও কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক এমপি কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন। সভার শুরুতে পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াত করেন জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য ও ওসমানীনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মঈনুল হক চৌধুরী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিলেট বিভাগ বিএনপির সাংগঠনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা ডা: এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, সিলেট জেলা হচ্ছে বিএনপির শক্তিশালী ঘাঁটি। সকল আন্দোলন সংগ্রামে সিলেট বিএনপির গৌরবোজ্জল ইতিহাস রয়েছে। এই ধারা অব্যাহত রাখতে হলে তৃনমূল বিএনপিকে শক্তিশালী করতে হবে। ব্যক্তি ও ক্ষুদ্র স্বার্থ পরিহার করে জাতির ও দলের স্বার্থকে প্রাধান্য দিতে হবে। ত্যাগী ও সক্রিয় নেতাদের মাধ্যমেই দল পূনর্গঠন করা হবে। জেলা, উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে বিএনপিকে সুসংগঠিত করতে সকল ভেদাভেদ ভূলে ইস্পাত কঠিন ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া দেশে কোন সংসদ নির্বাচন হতে দেয়া হবেনা।
সভায় উপস্থিত ছিলেন, সিলেট জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য এডভোকেট আব্দুল গাফফার, আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী, অধ্যাপিকা সামিয়া বেগম চৌধুরী, আব্দুল মান্নান, ফখরুল ইসলাম ফারুক, মাহবুবুর রব চৌধুরী ফয়সল, মামুনুর রশীদ মামুন, ইশতিয়াক আহমদ সিদ্দিকী, এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী, সিদ্দিকুর রহমান পাপলু, মাজহারুল ইসলাম ডালিম, আব্দুল আহাদ খান জামাল, মাহবুবুল হক চৌধুরী, আবুল কাশেম। উপজেলা ও পৌর আহবায়ক নেতৃবৃন্দের মধ্য থেকে উপস্থিত ছিলেন, সদর উপজেলা বিএনপির আহবায়ক এ কে এম তারেক কালাম, দক্ষিণ সুরমা উপজেলার আহŸায়ক মোঃ তোফাজ্জল হোসেন, গোলাপগঞ্জ উপজেলা আহবায়ক ডা: আব্দুল গফুর, গোয়াইনঘাট উপজেলা আহবায়ক মোঃ ওসমান গণি, জকিগঞ্জ উপজেলা আহবায়ক কাওসার রশিদ বাহার, জৈন্তাপুর উপজেলা আহবায়ক এ বি এম জাকারিয়া, বিশ্বনাথ উপজেলা আহবায়ক কমিটির ১নং সদস্য জালাল উদ্দিন চেয়ারম্যান, গোলাপগঞ্জ পৌর বিএনপির আহবায়ক হাসান ইমাদ, জকিগঞ্জ পৌর বিএনপির আহবায়ক ইকবাল আহমদ, বিয়ানীবাজার উপজেলা আহবায়ক নজরুল ইসলাম খান, বিয়ানীবাজার পৌর বিএনপির আহবায়ক নুরুল হুদা বাবুল, কানাইঘাট উপজেলা আহবায়ক আব্বাস উদ্দিন, কানাইঘাট পৌর বিএনপির আহবায়ক আবিদুর রহমান, ওসমানীনগর উপজেলা আহবায়ক জরিদ আহমদ, বালাগঞ্জ উপজেলার আহবায়ক আব্দুর রশিদ, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি মোঃ আলী আকবর, ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি ওয়াহিদুজ্জামান চৌধুরী সুফি, বিশ^নাথ পৌর বিএনপি প্রতিনিধি আহমেদ নুর উদ্দিন প্রমূখ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ডা: সাখাওয়াত হাসান জীবন বলেন, সরকারের সীমাহিন জুলুম নিপীড়ন উপেক্ষা করে বিএনপি এখনো স্বমহিমায় ঠিকে রয়েছে। বিএনপি একটি বড় দল। তাই এখানে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা থাকাটাই স্বাভাবিক। তবে সেটা যেনো প্রতিহিংসায় রুপ না নেয় সেদিকে সবাইকে দৃষ্টি রাখতে হবে। সামনে আমাদেরকে কঠিন পথ পাড়ি দিতে হবে। সেজন্য একটি ঐক্যবদ্ধ সুসংগঠিত তৃনমূল বিএনপি গড়ে তুলতে সবাইকে ভেদাভেদ ভুলে কাজ করতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন বলেন, আওয়ামী ফ্যাসিবাদ জাতির ঘাড়ে জগদ্দল পাথরের ন্যায় চেপে রয়েছে। গণতন্ত্রকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়ে তারা উন্নয়নের কথা বলে জাতিকে বিভ্রান্ত করছে। তারা যদি এতই উন্নয়ন করে তাহলে নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে এত ভয় কেন তাদের। কারণ তারা জানে নিরপেক্ষ ভোট হলে তারা জনগণের দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হবে।
সভাপতির বক্তব্যে কামরুল হুদা জায়গীরদার বলেন, দল পূণগর্ঠন প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। করোনা মহামারীর কারণে আমরা কাঙ্খিত সময়ের মধ্যে কাউন্সিল সম্পন্ন করতে পারিনি। তবে দল পুনর্গঠন প্রক্রিয়া থেমে থাকেনি।
মন্তব্য করুন