কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি:
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের তফসিল এখনো ঘোষণা করা হয়নি। তবে ইতিমধ্যে উপজেলার ৯ ইউনিয়নে পুরোদমে নির্বাচনী তৎপরতা শুরু হয়েছে। এবার দলীয় প্রতীকে বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না। এ জন্য আওয়ামী লীগের নৌকার কান্ডারি হতে দলের প্রবীণ নেতাদের সাথে সাথে নবীনদেরও ভোটের মাঠে কাজ করতে দেখা গেছে। নবীনদের মধ্যে একাধিক নেতা নৌকা পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে দলীয় সূত্রে জানা যায়। তৃণমূলের ভোটের ওপর দলীয় প্রার্থী হওয়ার প্রাথমিক মানদন্ড নির্ধারণ করেছে জেলা আওয়ামী লীগ। তবে নৌকার কান্ডারি হওয়া নির্ভর করবে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ডের ওপর। তাই প্রার্থী হতে আগ্রহীরা ইতিমধ্যে মনোনয়ন পেতে ইউনিয়ন পর্যায় থেকে শুরু করে উপজেলা, জেলা ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের কাছে ঘোরাঘুরি ও দৌড়ঝাঁপ চালিয়ে যাচ্ছেন। দলীয় প্রার্থী হতে
আগ্রহী ৩২ নেতা দৌড়ঝাঁপ শুরু করছেন।
সূত্রমতে, বিগত ইউপি নির্বাচনে উপজেলার ৯ ইউনিয়নের মধ্যে ৭টিতে আওয়ামী লীগ ও ২টিতে বিএনপি প্রার্থী বিজয়ী হয়েছিল। উপজেলায় আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী ও সমাজসেবীরা ইউপি নির্বাচনের
প্রস্তুুতি নিতে শুরু করে দিয়েছেন। বিএনপি থেকে স্বতন্ত্র হিসেবে যারা নির্বাচনে অংশ গ্রহন করতে আগ্রহী তারা অনেকটাই নিববে প্রচারনা করছেন। প্রার্থী হতে আগ্রহীরা উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে নিজেদের ছবি সম্ভলিত পোষ্টার, ব্যানার টাঙিয়ে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারনা চালিয়ে দলীয় মনোনয়ন বোর্ডের নেতা ও ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। শুধু তাই নয় হাট-বাজারের বিভিন্ন দোকানে ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে।
সম্ভাব্য প্রার্থীরা একদিকে যেমন এখন থেকেই গ্রাম, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ ও বিভিন্ন পূজানুষ্ঠানসহ বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠানে যোগদান করে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে ভোটারদের কাছে ভোট প্রার্থনা করছেন। অন্যদিকে দলীয় মনোনয়ন পেতে ইউনিয়ন পর্যায় থেকে শুরু করে উপজেলা, জেলা ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের কাছে ঘোরাঘুরি ও দৌড়ঝাঁপ চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে আওয়ামী লীগ সমর্থীত প্রার্থীরা ভোটের আগেই দলীয় মনোনয়ন পাওয়াকেই বেশী প্রধান্য দিচ্ছেন। বিএনপির প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ অনেক কম লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সদস্য ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য প্রার্থীরা ভোটারদের মন জয় করতে
নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করে দিয়েছেন। এই কার্যক্রমে চেয়ারম্যান, সদস্য ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য মিলে প্রায় ৩ শতাধিক প্রার্থী নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন।
এবার আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশি গতবারের চেয়ে তুলনামূলক কম হবে। প্রায় ৩০ জন প্রার্থী শেষ পর্যন্ত তৃণমূল ভোটে অংশ নিতে পারেন। এদের মধ্যে থেকে নৌকার ৯জন প্রার্থী বের হয়ে আসবেন। নেতাকর্মীদের বিশ্বাস,
এবার জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল নেতারা ঐক্যবদ্ধ থাকলে ইউনিয়নে বিদ্রোহী প্রার্থী অপেক্ষাকৃত কম হবে। এ ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আছলম ইকবাল মিলন বলেন, আমরা ঐক্যবদ্ধ। দলীয় প্রধান শেখ
হাসিনার সিদ্ধান্তই চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত। তিনি যাকে নৌকার প্রার্থী হিসেবে বিবেচনা করবেন তাকে নিয়েই আমরা ভোটযুদ্ধে মাঠে নামব। এবারও আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করবে। এলক্ষ্যে আমরা দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা করছি।
কমলগঞ্জে এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেতে তৎপরতা চালাচ্ছেন প্রায় ৩০ জন নেতাকর্মী। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজন তরুন প্রার্থী ও রয়েছেন।
উল্লে¬খযোগ্য সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে ১নং রহিমপুর ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইফতেখার আহমেদ বদরুল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও রহিমপুর ইউনিয়ন
আওওয়ামীলীগ সভাপতি জুনেল আহমদ তরফদার এবং রহিমপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি বিকাশ পাল। ২নং পতনউষার ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার তওফিক আহমদ বাবু, উপজেলা আওয়ামী লীগ সদস্য বদরুজ্জামান চৌধুরী জহির, উপজেলা বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সদস্য সচিব সিনিয়র প্রভাষক মো: আব্দুল আহাদ ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বর্তমান ইউপি সদস্য রিপন ইসলাম মইনুল, ৩নং মুন্সীবাজার ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মতলিব
তরফদার, আওয়ামীলীগ নেতা রনেন্দু ভট্রাচার্য্য (রানা), ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল চন্দ্র দাস ও আওয়ামীলীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম, ৪ নং শমশেরনগর ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক জুয়েল আহমদ, উপজেলা আওয়ামী লীগ সদস্য ও উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক আব্দুল মালিক বাবুল, সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগ নেতা মো: আব্দুল গফুর ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সদস্য এবিএম আরিফুজ্জামান অপু, ৫নং কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মো: আব্দুল হান্নান, উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক ছিদ্দেক আলী, উপজেলা জাতীয় শ্রমিক লীগের সাবেক সভাপতি তরুন আওয়ামীলীগ নেতা সুলেমান হোসেন ভুট্রো, ৬ নং আলীনগর ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ফজলুল হক বাদশা, কমলগঞ্জ পৌর ছাত্রলীগের সাবেক আহবায়ক ও যুবলীগ নেতা নিয়াজ মুর্শেদ রাজু ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মো: শাহীন মিয়া, ৭ নং আদমপুর ইউনিয়নে সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক সাব্বির আহমদ ভুঁইয়া, আওয়ামী লীগ নেতা হাজির বক্স, হাজী জয়নাল আবেদীন, উপজেলা আওয়ামীলীগ সদস্য আব্দুল গফুর, বিলেত প্রবাসী একেএম সালাম, ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি আনোয়ার হোসেন, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শাব্বির এলাহী, ৮ নং মাধবপুর ইউনিয়নে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আসিদ আলী ও কমলা কান্ত সিংহ এবং ৯নং ইসলামপুর ইউনিয়নের উপজেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ সুলেমান হোসেন, ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি বাবুল আহমদ। এছাড়া অনেকেই নির্দিষ্ট সময়ে
দলীয় প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করার আভাস পাওয়া গেছে।
মন্তব্য করুন