তাপস কর,ময়মনসিংহ প্রতিনিধিঃ ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলার দশমাইল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোর্শেদা নাজনীন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। প্রধান শিক্ষক ও তার স্বামীর ঢাকায় চিকিৎসা চলছে। প্রধান শিক্ষক করোনা আক্রান্ত হওয়ার পরও ৯ দিন ধরে ঐ বিদ্যালয়ে ক্লাশ চলছে। আতংকে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমেছে বিদ্যালয়ে।
প্রধান শিক্ষক করোনা আক্রান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা শিক্ষা অফিসার আবদুল্যাহ আল বাকী।
বিদ্যালয়ের নাজমুন্নাহার নামের এক সহকারী শিক্ষিকার করোনার উপসর্গ দেখা দেয়ায় ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে তিনিও ছুটিতে রয়েছেন।
উপজেলার দশমাইল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩২৪ জন। তার মধ্যে ৫ম শ্রেনীর শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৪৫ জন।
গত ১২ সেপ্টেম্বর বিদ্যালয় খোলার দিন ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা যান আঃ মালেক খান (৬৫) নামের এক বৃদ্ধ। উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরনকারী মালেক খানকে দাফন করা হয় বিদ্যালয়ের পাশেই। বিদ্যালয়ে ঐ পাশে বাউন্ডারী দেয়াল না থাকায় মালেক খানের পরিবার বিদ্যালয়ের নলকূপ থেকে পানি নিয়ে ব্যবহার করে থাকে বলে শিক্ষার্থীরা জানান।
গত ২১ সেপ্টেম্বর বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মোর্শেদা নাজনীন তার স্বামীসহ করোনায় আক্রান্ত হন। বর্তমানে তাদের চিকিৎসা চলছে ঢাকায় বলে জানান বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা রোকসানা পারভীন। গত ২১ সেপ্টেম্বর প্রধান শিক্ষক করোনায় আক্রান্ত হলে ৯ দিন ধরে বিদ্যালয়ে প্রতিদিন ক্লাশ চলছে। প্রধান শিক্ষক করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতংক বিরাজ করছে। বিদ্যালয় শিক্ষার্থীর উপস্থিতি কমে গেছে।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা নাজমুন্নাহারের শরীরে করোনার উপসর্গ দেখা দেয়ায় গত ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে ছুটিতে রয়েছে। ছুটির আগের দিন পর্যন্ত তিনি বিদ্যালয়ে এসেছেন বলে জানান সহকারী শিক্ষকরা। মাহবুবা আকতার নামে ঐ বিদ্যালয়ের এজমা আক্রান্ত সহকারী শিক্ষিকা জানান, আমাকে সাবধানে থাকতে হচ্ছে। আতংকিত না হলেও মনটা দূর্বল থাকে।
রূপম, ইমন নামের ৫ম শ্রেনীর শিক্ষার্থী জানান, ম্যাডামের করোনা আক্রান্তের খবর আমরা জানি। আতংক থাকার পরও বিদ্যালয় খোলা এ কারনে ক্লাশ করার জন্য আসি।
উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার ফারাহ্নাজ পাঠান জানান, প্রধান শিক্ষক করোনায় আক্রান্তের খবর তিনি জানেন। বিদ্যালয়ে ক্লাশ চলার বিষয়ি তিনি বলেন, ক্লাস তো চলছেই। ক্লাশ কি বন্ধ করা যাবে।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার আবদুল্যাহ আল বাকী জানান, প্রধান শিক্ষক করোনা আক্রান্ত হওয়ায় ২১ সেপ্টেম্বর থেকে ছুটিতে আছেন। তিনি কোথায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন বিষয়টি সম্পর্কে ধারনা না থাকায় বিদ্যালয় লকডাউন না দিয়ে ক্লাশ চলছে। প্রধান শিক্ষক মোর্শেদা নাজনীন করোনায় আক্রান্তের পর সহকারী শিক্ষকসহ শিক্ষার্থীদের মধ্যে করোনার উপসর্গ দেখায় বিষয়টি তার জানা নেই বলে জানান ঐ কর্মকর্তা।
ফুলবাড়ীয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশরাফ ছিদ্দিক জানান, বিষয়টি তার জানা নেই। খোজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহনের কথা জানান তিনি।
মন্তব্য করুন