রবিরবাজারের সেই পুরনো পুকুর এখন ময়লার ভাগাড়


দ্যা সিলেট পোস্ট প্রকাশের সময় : মার্চ ৮, ২০২৫, ৮:১৭ অপরাহ্ন /
রবিরবাজারের সেই পুরনো পুকুর এখন ময়লার ভাগাড়

কুলাউড়া প্রতিনিধি

কুলাউড়া উপজেলার পৃথিমপাশা ইউনিয়নের রবিরবাজারের কাঁচাবাজারসংলগ্ন পুকুরটি এখন ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে বাজারের ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে পুকুরটিতে। এতে ভরাট হয়ে পুকুরটির অস্তিত্ব বিলীনের পথে। জনগুরুত্বপূর্ণ পুকুরটি খনন ও সংস্কারের মাধ্যমে ব্যবহার উপযোগী করার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

জানা গেছে, রবিরবাবাজার এলাকায় ছোট-বড় মিলিয়ে দুই হাজারের বেশি দোকানপাট রয়েছে। বাজারের মাঝখানে ২৬ শতাংশ জায়গাজুড়ে পুকুরটির অবস্থান। আগে নানা কাজে স্থানীয়রা পুকুরের পানি ব্যবহার করতেন। বাজারের ভেতরে কোনো ডাস্টবিনের সুবিধা না থাকায় ব্যবসায়ীরা ময়লা-আবর্জনা পুকুরে ফেলতে শুরু করেন। তদারকি না থাকায় বর্তমানে ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে পুকুরটি। ময়লা-আবর্জনা থেকে চারদিকে দুর্গন্ধ ও দূষণ ছড়াচ্ছে।

এদিকে পুকুরের পাকা ঘাট পর্যন্ত দখল করে দোকান বসানো হয়েছে। পুকুরের চারপাশের পাড় দোকানপাট দিয়ে ঘেরা। ময়লা-আবর্জনায় পুকুরটিকে একটি বিশাল ভাগাড় বলে মনে হয়। পুকুরটি ভরাট হয়ে বিপুল আগাছা জন্ম নিয়েছে সেখানে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী মনু মিয়া, আনোয়ার আলী, ইনাম উদ্দিন, ইউসুফ আলী জানান, আগে বাজারের ব্যবসায়ীরা পুকুরে অজু, গোসল ছাড়াও সবজি পরিষ্কার করতেন। বর্তমানে এই পুকুরে কোনো পানিই নেই। আছে শুধু ময়লা আর আবর্জনা। বাজারের ভেতরে কোনো ডাস্টবিন না থাকায় লোকজন ময়লা-আবর্জনা ফেলে পুকুরটিকে ডাস্টবিনে পরিণত করেছেন।
রবিরবাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি মাসুক আহমদ বলেন, এটি সরকারি বাজারের পুকুর। বাজারে কোনো অগ্নিকাণ্ড ঘটলে যে পুকুরটি থেকে পানি পাওয়া যেত সেটি এখন ময়লা-আবর্জনায় ভরাট হয়ে গেছে। পুকুরটি পরিষ্কার করে পুরোনো পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে উপজেলা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্টদের কাছে কয়েকবার আবেদন জানানো হয়েছে। পুকুরটি পরিষ্কারের উদ্যোগ নিতে প্রশাসনের কাছে দাবি জানান তিনি।

পৃথিমপাশা ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রকিব আহমদ বলেন, রবিরবাজার ভূমি অফিসের পার্শ্ববর্তী পুকুরটিতে অনেক দিন ধরে ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। এটি পরিষ্কার করার জন্য স্থানীয় ভূমি অফিসে কোনো সরকারি বরাদ্দ নেই। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

পৃথিমপাশা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য গোলাম হোসেন বলেন, পুকুরটি খনন করা গেলে রবিরবাজার ও আশপাশে কোনো অগ্নিদুর্ঘটনা ঘটলে সেখান থেকে পানি সরবরাহ করা যেত। বাজারে ডাস্টবিন নির্মাণ ও পুকুরটি সংস্কারের উদ্যোগ নিতে উপজেলা প্রশাসনের কাছে দাবি জানান তিনি।

রবিরবাজারের ইজারাদার দীপক দে বলেন, নিজস্ব উদ্যোগে বাজারের ময়লা-আবর্জনা অন্যত্র ফেলার ব্যবস্থা করেছেন। ওই পুকুরে ময়লা-আবর্জনা না ফেলতে তাঁর পক্ষ থেকে বাজারের ব্যবসায়ীদের বারবার নিষেধ করা হয়েছে।
কুলাউড়া সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহ জহুরুল হোসেন বলেন, তিনি পুকুরটি সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন। এটি খননে একটি প্রকল্প প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়েছে। অর্থ বরাদ্দ এলে পুকুরটি দ্রুত খনন করা হবে। পুকুরে ময়লা না ফেলতে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।