কুলাউড়া প্রতিনিধি:
অযত্ন ও অবহেলায় পড়ে আছে মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলার শিশু পার্কের শহীদ মিনারটি। প্রতিবছর শহীদ দিবসসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিবস আসলেই একটু ধোয়া মোছার কাজ হয় এ শহিদ মিনারে।
ভাষা শহিদদের স্মরণে শিশুপার্কে নির্মিত করা হয়েছিল একটি শহিদ মিনার। বিগত কয়েক বছর আগে শহিদ মিনারটি রক্ষণাবেক্ষণ করার জন্য প্রবেশ মুখে একটি গেটসহ শহীদ মিনারটি আধুনিকায়ন করা হয়। কিন্তু নির্মাণের পর থেকেই রক্ষণাবেক্ষণ আর অযত্ন-অবহেলায় শহিদ মিনারটি এখন পরিণত হয়েছে ময়লার ভাগাড়ে।
স্থানীয়রা জানায়, প্রতি বছর ২১ ফেব্রুয়ারি এলে কোনো রকম পরিষ্কার করা হলেও পরদিন থেকেই বাজারের সমস্ত ময়লা আবর্জনা এখানে ফেলা শুরু হয়। ময়লা আবর্জনা ফেলার পাশাপাশি দিনের আলোতেও সব সময় মানুষ এখানে প্রশ্রাব করে থাকে। এছাড়াও প্রতিদিন এখানে গরু, ছাগল চড়ানো হয়। ময়লা আবর্জনা, গরু, ছাগল ও মানুষের প্রশ্রাবের গন্ধে শহীদ মিনারের আশেপাশের পরিবেশ এখন অনেকটাই দূষিত।
শহিদ মিনারের বেহাল দশা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ ও দ্রুত রক্ষণাবেক্ষণের দাবি জানিয়েছেন সাংস্কৃতিককর্মীসহ উপজেলার বিশিষ্টজনেরা।
জানা গেছে, উপজেলার ঐতিহ্যবাহী কামিনীগঞ্জ বাজারে শিশুপার্কে নির্মাণ করা হয়েছে শহিদ মিনারটি। মিনারের চারপাশে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ। নানা ধরনের ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধে সাধারণ মানুষের চলাফেরা বিঘ্নিত হওয়ায় বেওয়ারিশ কুকুরের একমাত্র রাত্রিযাপনের স্থান হয়ে দাঁড়িয়েছে শহিদ মিনারটি।
সমাজকর্মী জাহিদুল ইসলাম সপু জানান, জুড়ী উপজেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এমন ময়লার ভাগাড় কোনভাবেই কাম্য নয়, এটি দুঃখজনক। পাশাপাশি তিনি এবিষয়ে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি তাজুল ইসলাম তারা মিয়া বলেন, ভাষা শহিদদের ত্যাগের বিনিময়ে আমরা মাতৃভাষা বাংলা পেয়েছি। আর ভাষা শহীদদের স্মৃতি ও আত্মত্যাগের সঠিক ইতিহাস প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতেই দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ পাড়া-মহল্লায় ও গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার তৈরি করা হয়। শহিদ মিনারে শুধু একদিন ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য নয়। শহিদ মিনার এভাবে ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হলে এ প্রজন্মের কাছে শহীদ মিনারের গুরুত্ব কমে যাবে।
জুড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোনিয়া সুলতানা বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত হয়েছি। শহিদ মিনার রক্ষণাবেক্ষণ, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আপনার মতামত লিখুন :