হবিগঞ্জে ভারতীয় গরু প্রবেশের হটস্পট গুইবিল, চিমটিবিল ও গাজীপুর সীমান্ত


দ্যা সিলেট পোস্ট প্রকাশের সময় : মে ২৮, ২০২৫, ১১:৪১ অপরাহ্ন /
হবিগঞ্জে ভারতীয় গরু প্রবেশের হটস্পট গুইবিল, চিমটিবিল ও গাজীপুর সীমান্ত

নুরুজ্জামান ফারুকী হবিগঞ্জ প্রতিনিধি 

 ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে জেলার চুনারুঘাটের কয়েকটি সীমান্তে সক্রিয় হয়ে উঠেছে পশু চোরাচালান চক্র। রাতের অন্ধকারে সীমান্তের কাঁটাতার পেরিয়ে জেলায় প্রবেশ করা এসব ভারতীয় পশুর চালান স্থানীয় আমরোড বাজারে টাকার বিনিময়ে বৈধ করা হচ্ছে। পরে ব্যবসায়ীরা পশু গুলো ছড়িয়ে দিচ্ছেন জেলা বিভিন্ন বাজারে। এদিকে, ভারতীয় গরু জেলায় প্রবেশ করায় দুশ্চিন্তায় প্রান্তিক খামারি ও ব্যবসায়ীরা। লাগাম টেনে ধরতে বিজিবি চেষ্টা চালালেও প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় বেপরোয়া চোরাকারবারিরা। কৃষকদের অভিযোগ, ভারতীয় গরু আসলে দেশি গরুর দাম কমে যাবে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন দেশি খামারিরা।

অভিযোগ রয়েছে, গরু চোরাচালান সিন্ডিকেট চক্রের সদস্যের তালিকায় রয়েছেন প্রায় ২ ডজন প্রভাশালী। এর মধ্যে সুন্দরপুুরের মাখন, তাইস, করইটিলার রুপন, মানিক ভান্ডার, ছয়শ্রীর রহিম, সাদ্দাম বাজারের অমৃত, গনশ্যামপুর গ্রামের মাসুুক লস্কও, চিমটিবিলের কালা কাজল, চিমটিবিল খাসপাড়ার সোহাগ, সাদেক, শফিক, ইসমাইল, আবুল হোসেন, লাল কাজল ও বাবলু কালামন্ডল সরাসরি জড়িত রয়েছেন। তাদের মধ্যে রুপন মিয়া ও মাসুক লস্কর অন্যতম। তারা সকলেই ভারতীয় গরু সংগ্রহ থেকে শুরু করে বিক্রি পর্যন্ত জড়িত রয়েছেন। এসব গরু বিক্রিতে কেউ নেন ট্যাক্স আবার কেউ কমিশন। প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের সহযোগিতায় দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে পশু চোরাচালান।

স্থানীয়রা জানান, রাতে সবাই যখন ঘুমিয়ে পড়ে ঠিক তখনই যেন দিনের শুরু পশু চোরাকারবারিদের। ভারত সীমান্তের কাঁটাতার পেরিয়ে চুনারুঘাটের আহম্মদাবাদ ইউনিয়নের গুইবিল, চিমটিবিল ও গাজীপুর ইউনিয়নের গাজীপুর সীমান্ত দিয়ে পশু প্রবেশ করছে প্রতিনিয়ত। এর মধ্যে চিমটি বিল সীমান্ত দিয়ে কাজল মিয়াসহ তার সহযোগিরা খাসপাড়ায় পশু  নিয়ে আসে। আর গুইবিল সীমান্ত দিয়ে পশু নিয়ে আসে সত্তর মিয়াসহ তার সিন্ডিকেট চক্র। পরে খাসপাড়া থেকে স্থানীয় পশু ব্যবসায়ী তারা মিয়া আমরোড বাজারে তুলে বিক্রি করেন। এসব গরুর লোকাল ট্যাক্স নেন মাসুক লস্কর গ্যাং। অন্যদিকে গাজীপুর সীমান্ত দিয়ে আসা গরুর লোকাল ট্যাক্স নেন রুপন মিয়া ও তার চক্র। সীমান্তরক্ষীদের চোখ ফাঁকি দিতে নানা কৌশলে এসব চোরাকারবারিরা চুনারুঘাটের কয়েকটি সীমান্ত দিয়ে দিয়ে বছরের পর বছর করছে ব্যবসা।

স্থানীয়দের মতে, সবকিছুই চালাচ্ছে প্রভাবশালী সিন্ডিকেট। এটি সবার চোখের সামনেই ঘটছে। প্রতিদিন অসংখ্য ট্রাকে করে গরু আসে। পায়ে হাঁটিয়ে নিয়ে আসা হয় গরু। তবে বিজিবির অভিযান প্রায়ই ধরা পড়ছে পশুর চালান। তবুও থামছেনা অসাধু এ কারবার। ঈদুল আজহা সামনে রেখে পশুর চোরাচালান বাড়াতে সক্রিয় চক্রের সদস্যরা। গত ২২ মে মাধবপুর ও চুনারুঘাট উপজেলার গুইবিল, সাতছড়ি, তেলিয়াপাড়া, মনতলা, হরিণখোলা ও বাল্লা সীমান্ত ফাঁড়ির সদস্যরা পৃথক ছয়টি অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে ভারতীয় নয়টি গরু তারা জব্দ করেন।

চুনারুঘাট উপজেলা সহকারী কমিশনার বলেন, ‘বিষয়টি আমি অবগত ছিলাম না। তবে ভারতীয় গরু প্রবেশ বন্ধে প্রশাসন কঠোর রয়েছে। তাছাড়া আমরোড বাজারে ভারতীয় গরু বিক্রির ব্যাপারে প্রমান পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে।

হবিগঞ্জ ৫৫ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. তানজিলুর রহমান জানান। চোরচালান বন্ধে তৎপর ভ‚মিকা পালন করছে বিজিবি। সীমান্ত গুলোতে টহল জোরদার করা  হয়েছে। আমরা ইতিমধ্যে কয়েকটি ভারতীয় পশু জব্দ করেছি।