মুহাম্মদ আবদুর রহীম চৌধুরী
শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান শতভাগ দুর্নীতিমুক্ত সত্যিকার দেশপ্রেমিক ছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পর বাংলাদেশ টেলিভিশনে ছেঁড়া গেন্জি ও ভাঙ্গা সুটকেস দেখানো হয়েছিল। ছেঁড়া এবং ভাঙ্গা হলেও সর্বোচ্চ ব্যবহারের জন্য সেসব ফেলে না দিয়ে তিনি ব্যবহার করতেন। অপচয় করতেন না। তাঁর ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই বর্তমান ড. ইউনুসের মতোই সফলতা দেখা দিয়েছিল। চার বছরে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দেশে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছিলেন। আর তাই তাঁর মৃত্যুতে পুরোদেশ যেনো কেঁদেছিল। তাঁর জানাজার রেকর্ড এযাবৎ কেউ ভাঙতে পারেননি (সাঈদী সাহেরের জানাজা ঢাকায় পড়তে দিলে হয়তো ভাঙতো)।
জিয়াউর রহমানের গড়া দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের প্রায় সবাই জিয়ার আদর্শ থেকে যোজন যোজন দূরে। তাঁদের বেশীরভাগ কেন্দ্রীয় নেতাই দেশপ্রেমহীন, লোভী ও বিশ্বাসঘাতক। এই দলটিতে সংস্কার না হলে দলটির ভবিষ্যৎ অন্ধকার। ২০২৩ সালে আমি বিএনপিকে অনেক পরামর্শ দিয়েছিলাম। তারেক জিয়া ও শেখ হাসিনার নিকট খোলা চিঠিও দিয়েছিলাম। যা ঢাকা মেইল, ঢাকা টাইমস, The Business standard, United News of Bangladesh, The New Age, The Sylhet Post সহ বিভিন্ন পত্রিকায় ছাপানো হয়েছিল। তাছাড়া বিভিন্ন পেইজ ও ইউটিউব চ্যানেলে বলেছিলাম যে, বিএনপির নেতৃত্বে আওয়ামীলীগের পতন ঘটানো সম্ভব না হলে আগামী বিশ বছরেও বিএনপি ক্ষমতায় আসতে পারবেনা। তখন আমার বক্তব্যের পূর্বাপর ভালোভাবে না শুনে বিএনপির অনেকে খারাপ মন্তব্য করেছিল। কিন্তু এখন তাদের সেই সম্ভাবনা দিন দিন ফিকে হয়ে কি আসছেনা? আমার বলা কথা কি সত্যে পরিণত হচ্ছে না? শেখ হাসিনার পতন আন্দোলনে বিএনপি চাইলে অবশ্যই নেতৃত্বের আসনে থাকতে পারতো। বিএনপিতে, ছাত্রদলে কিংবা যুবদলে বাঘ কিংবা সিংহের ভূমিকা পালনকারী নেতা- কর্মী থাকলেও কেন্দ্রীয় বিএনপির বেশীরভাগ নেতাই ভেড়া তুল্য ভীরু। আর তাই তখন বিএনপিকে পরামর্শসহ “কে নেতৃত্ব দিচ্ছে? ভেড়া না বাঘ?” শিরোনামে একটি আর্টিকেল লিখেছিলাম, যা সিলেট পোস্টে ২০২৩ সালে ছাপানো হয়েছিল। তখন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের সিংহভাগ ভেড়ার মতো আচরণ করলেও এখন অনৈতিকতার আশ্রয় নিয়ে ফেক বাঘ কিংবা সিংহ সাজতে গিয়ে দলের আরো ক্ষতি করে যাচ্ছে।
ইলিয়াস আলীর গুম হওয়ার পেছনে শেখ হাসিনা গংরা দায়ী-এটা দেশে বিদেশে প্রতিষ্ঠিত হলেও শেখ হাসিনার সময়ে মির্জা আব্বাস বলেছিলেন যে, ইলিয়াস আলীর গুমের পিছনে বিএনপির কিছু নেতা জড়িত। শেখ হাসিনার এজেন্ট কিংবা শেখ হাসিনার অনুগত না হলে ইলিয়াস আলীর ঘটনা নিয়ে এরকম মিথ্যা কথা মির্জা আব্বাস বলতেন না।
মির্জা আব্বাসের মতো কেন্দ্রীয় অনেক নেতাকে বিএনপি থেকে আউট করে বিএনপিতে সংস্কার না হলে বিএনপি ক্রমান্বয়ে অজনপ্রিয় দলে পরিণত হয়ে যাবে। দেশের সহজ, সরল ও নিরীহ জনগণের কাছে তুমুল জনপ্রিয় এই দলটি, সেই সহজ, সরল মানুষদের দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হয়ে বাংলাদেশ মুসলিমলীগের করুণ পরিণতি বরণ করুক – তা আমরা চাই না। আর তাই দেশপ্রেমিক জনগণের চাহিদা অনুযায়ী দলটি সংস্কার হয়ে ঘুরে দাঁড়াক-এই প্রত্যাশা করছি।
লেখক: প্রতিষ্ঠাতা
বাংলাদেশ ঐক্য পার্টি।
আপনার মতামত লিখুন :