সুনামগঞ্জ সংবাদদাতা।।
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার আসন্ন নরসিংপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রতিপক্ষ প্রার্থীর লোকজনকে চাবুক পেটা করার হুমকি দিয়েছেন ওই ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী নূর উদ্দিন। নির্বাচনী জনসমাবেশে প্রকাশ্যে হুমকি সম্বলিত নূর উদ্দিন চেয়ারম্যানের ভিডিও বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এ নিয়ে তুমুল আলোচনা সমালো থেমে নেই। একই ইউনিয়নের আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী ও ৪ নং ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি সদস্য ফজলুর রহমান এবং চশমা প্রতীকের আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ সামছুল হক নমুর নাম উল্লেখ করে বক্তব্য দিতে দেখা গেছে আ.লীগ মনোনীত প্রার্থীকে।
ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ভিডিওটিতে দেখা গেছে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী নূর উদ্দিন বলছেন, ‘আমার কিছু ইউপি সদস্য সুযোগ সুবিধা নিতে পারেন নাই, আমি ওয়াদা করেছি ফজলুর রহমান সাহেবকে কোনো কাজ দেবনা চেয়ারম্যান হলে, আমি দেইনি। উনার জন্য আমার কোনো আসে যায়না, উনি আমার কাছে ফ্যাক্টর নয়, ফ্যাক্টর হচ্ছে সামছুল হক নমু, উনি হলেন আমার প্রতিদ্বন্দ্বী।’
তিনি আরো বলেন, ‘ভূত ছাড়ানোর হাতিয়ার আমার কাছে আছে। ঘোড়ার চাবুক দুটি হাতে নেব, বারির চুটে সব ভূত ছেড়ে যাবে। দুইটা চাবুক আমার হাতে থাকে। কেউ যদি আমার কর্মীকে আঘাত করে চাবুক পেটা করে বাজারের গলিতে ধরে পেটাব….’ বক্তব্য চলাকালে উপস্থিত কর্মীদেরকে নৌকা, নৌকা বলে শ্লোগান দিতে দেখা গেছে।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত ১৬ অক্টোবর নরসিংপুর ইউনিয়নের খাইরগাঁও গ্রামে রাত আটটার দিকে এক নির্বাচনী জনসমাবেশে এ বক্তব্য দেন আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী নূর উদ্দিন।
বক্তব্যের সত্যতার বিষয়ে জানতে চাইলে নরসিংপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী নূর উদ্দিন বলেন, ‘এটা লিখতে পারেন সত্য। আমি বলছি আমার কোনো কর্মী, ভোটারকে কেউ মারলে চাবুক একটা না, ডাবল চাবুক দিয়ে পেটাব। ফজলুর রহমান মেম্বারকে আমি কোনো কাজ দেইনি, কারণ সে দুর্নীতি করে।’
নরসিংপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী ও ৪ নং ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি সদস্য ফজলুর রহমান বলেন, ‘চেয়ারম্যান নূর উদ্দিনের সেচ্ছাচারিতায় আমার ওয়ার্ড বিগত ৫ বছর উন্নয়ন বঞ্চিত ছিলো। সম্প্রতি তিনি খাইরগাঁও গ্রামে এক নির্বাচনী জনসমাবেশে নিজেই একথা স্বীকার করেছেন এবং আমাকে ও আমার নেতাকর্মীকে উদ্দেশ্য করে চাবুক পেটা করার হুমকি দিয়েছেন। আমি এবং আমার নেতাকর্মীরা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি। নির্বাচনী ব্যস্ততা ও শারিরীক অসুস্থতার কারণে থানায় যেতে পারিনি, শিঘ্রই থানায় গিয়ে জিডি করব। আর আমি দুর্নীতিবাজনা, তিনি নিজেই দুর্নীতির কারণে জেল হাজত খেটেছেন। ‘
দোয়ারাবাজার উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ও রিটার্নিং অফিসার ডাঃ মোঃ আব্দুল কাহির বলেন, ‘এধরনের কোনো অভিযোগ আমার কাছে আসেনি। নির্বাচনী আচরণ বিধি মেনে চলতে সব প্রার্থীদেরকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। যদি সত্যিই এধরনের কোনো ঘটনা ঘটে থাকে তবে এটা নির্বাচনী আচরণ বিধির স্পষ্ট লংগন।’
মন্তব্য করুন