নূরুজ্জামান ফারুকী নবীগঞ্জ, হবিগঞ্জঃ নবীগঞ্জ পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ৩ নং ওয়ার্ড। আর এই ওর্য়াড হয়ে হাজার হাজার লোকজনের চলাচলে একটি মাত্র ব্রীজের জন্য চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এ যেন অবিশ্বাস্য বিষয়। তবে এটাই বাস্তব।
পৌর এলাকার ৩নং ওয়ার্ড আনমনু গ্রাম হয়ে এই সড়কটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স রোডে লেগেছে। মধ্যেখানে রয়েছে শাখা-বরাক নদী। দিনের বেলা যেখানে সময় লাগার কথা ৫ মিনিট সেখানে ব্রীজ না থাকায় ঘুরতে হয় প্রায় ২ কিলোমিটার সড়ক। রাতের বেলা শ্বাসকষ্টজনিত বৃদ্ধ ব্যক্তিদের নিয়ে হাসপাতালে যেতে যানবাহন না পেলে এই ৫ মিনিটের সড়ক ঘুরতে হয় প্রায় ১ ঘন্টারও অধিক সময়। এতে করে প্রাণহানি ঘটারও সম্ভবনা রয়েছে।
শুধুমাত্র একটি ব্রীজের অভাবে বৃদ্ধ ব্যক্তি,গর্ভবতি মহিলা,ছোট ছোট বাচ্চা,ইমার্জেন্সি রোগীসহ অসুস্থ্য ব্যক্তিদের জীবন ঝুঁকি নিয় প্রায় ১ কিলোমিটার সড়ক ঘুরতে হয় হাসপাতালে যেতে। এসব দুর্ভোগ দেখবে কে? প্রশ্ন পৌরবাসীর।
ওপরদিকে একই নদীতে গ্রামের পাশে নির্মাণ হয়েছে ৪ টি ব্রীজ। মানুষ চলাচলে এই নদীতে ব্রীজ নির্মাণ করতে দু’বার টেন্ডার দিয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষ। বার, বার টেন্ডার করা হলেও অদৃশ্য এক পরাশক্তির কাছে আটকে থাকে ব্রীজ নির্মাণের কাজ। এতে করে দুর্ভোগ লেগেই আছে ৫/৭ গ্রামের বাসিন্দাদের। এখন তাদের একমাত্র ভরসা বাঁশের সাকো। তা ও আবার নড়বড়ে। যেকোনো সময় ভেঙে গিয়ে বড় ধরণের দুর্ঘটনার শিকার হতে হবে সাকো দিয়ে চলাচলরত লোকজনের।
স্থানীয়রা এ প্রতিবেদককে জানান, নবীগঞ্জ পৌরসভার অন্যান্য ওয়ার্ডে রয়েছে পাশাপাশি একাধিক ব্রীজ। তবে এই ব্রীজ নির্মাণেই কেন এত বাঁধা বিপত্তি? এখানে ব্রীজ নির্মাণ নিয়ে সংশ্লিষ্ট কারো কোনো মাথা ব্যাথা নেই। জনপ্রতিনিধিগণ, রাজনৈতিক নেতাগণ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিগণদের কারো চোখেই এ দুর্ভোগ পড়ে না। এজন্য হতাশা বিরাজ করছে হাজার হাজার লোকজনের মধ্যে। পৌরসভা নির্বাচন আসলে ফুলঝুড়ি প্রতিশ্রুতি দেন মেয়র ও কাউন্সিলরগণ।
অনুসন্ধানে জানাগেছে, শাখা-বরাক নদী বরাট হয়ে এই জায়গাটি ছোট একটা খালে পরিণত হওয়ায় নবীগঞ্জের কুখ্যাত ভুমিখেকোদের নজরকাড়ে জায়গাটি। একদল সংঙ্গবদ্ধ ভুমিখেকো জায়গাটি দখলে নিয়ে কোটি টাকার বাণিজ্য করতে চাচ্ছে। এদেরই রোষাণলে আটকে আছে ব্রীজ নির্মাণের কাজ। টেন্ডার হলেই নিজেদের ব্যক্তিমালিকানা জায়গা দাবি করে আইনি জটিলতা সৃষ্টি করছে ভুমিখেকু চক্রটি। প্রভাবশালীদের হয়রানির ভয়ে মুখ খুলছেন না কেউই।
এ বিষয়টি নিয়ে প্রিন্ট, ইলেক্ট্রনিক, স্থানীয়, জাতীয় পত্রিকায় একাধিকবার সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। এব্যাপারে পৌরসভার মেয়র ছাবির আহমেদ চৌধুরী বার বারই বলে আসছেন আইনি জটিলতা থাকায় এখানে ব্রীজ নির্মাণ সম্ভব হচ্ছে না।
মন্তব্য করুন