কুলাউড়া প্রতিনিধি
চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে কুলাউড়ায় আশানুরূপ ফলাফল অর্জন করতে পারেনি কলেজগুলো। সিলেট শিক্ষাবোর্ডের অধীনে এইচএসসি পরীক্ষায় কুলাউড়া উপজেলায় ১৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দুই হাজারের অধিক শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। যার অর্ধেকই ফেল করেছে। সিলেট বোর্ডে ফল বিপর্যয়ের মধ্যেও গড় পাশের হারে শীর্ষে রয়েছে নবপ্রতিষ্ঠিত পাইকপাড়া এম এ আহাদ আধুনিক কলেজ। প্রথমবারের মতো (কলেজের নামে) বোর্ড পরীক্ষায় অংশ নিয়ে এই প্রতিষ্ঠানটি চমক দেখিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির গড় পাশের হার ৮৫.৭১ শতাংশ।
অপরদিকে কুলাউড়া উপজেলায় পাশের হারও নিম্নগামী। ২ হাজার ২শত ১ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১ হাজার ১শত ১ জন পাশ করে। পাশের হার মাত্র ৪৯.৩৩ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২০ জন। সর্বাধিক ইয়াকুব তাজুল মহিলা ডিগ্রি কলেজ থেকে ৬ জন জিপিএ-৫ পায়।
এদিকে পাইকপাড়া এম এ আহাদ আধুনিক কলেজ থেকে ২৮ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাশ করেছে ২৪ জন। ২১ জন মানবিক শাখায় ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখার ৩ জন পাশ করে।
ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় শতভাগ পাশ অব্যাহত রয়েছে। শুরু থেকে এ পর্যন্ত ৪ ব্যাচে শতভাগসহ ২০২৪ সালের ব্যাচে ৩ জন জিপিএ-৫ লাভ করে কৃতিত্ব দেখিয়েছে।। কলেজের এই ফলাফলে উচ্ছ্বসিত শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক, কলেজ নির্বাহী কমিটির সংশ্লিষ্টরা ও এলাকাবাসী। প্রসঙ্গত এবার সিলেট বোর্ডে পাশের হার মাত্র ৫১.৮৫ শতাংশ। সেই দিক থেকে নব প্রতিষ্ঠিত একটি কলেজের প্রথম ব্যাচের ফলাফলে অভিভূত সংশ্লিষ্টরা। কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ হানিফ বলেন, এই ফলাফল সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফসল। কলেজের প্রতিষ্ঠাতা মোঃ আব্দুল আহাদ, নির্বাহী কমিটির সভাপতি মেজর (অবঃ) নুরুল মান্নান চৌধুরীসহ সংশ্লিষ্ট সকলেই যথাযথ পরামর্শ ও আন্তরিক সহযোগিতা করেছেন। শিক্ষক- শিক্ষিকা ও শিক্ষার্থীদের নিরলস প্রচেষ্টা এবং শ্রমের বিনিময়ে অর্জিত এই ভালো ফলাফল কলেজের ভবিষ্যতের পথ সুগম করবে।
সূত্র জানায়, শিক্ষাদীক্ষায় পিছিয়ে পড়া কুলাউড়া উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলের হাজীপুর ও শরীফপুর ইউনিয়নে কোন সতন্ত্র কলেজ না থাকায় স্থানীয় বাসিন্দা নিউইয়র্ক প্রবাসী মোঃ আব্দুল আহাদ ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রতিষ্ঠিত করেন পাইকপাড়া এম এ আহাদ আধুনিক কলেজ।
শুরু থেকে মনু মডেল কলেজের অধীনে টানা ৩ বছর ভালো ফলাফল বয়ে আনে প্রতিষ্ঠানটি। মফস্বল পর্যায়ে নানা প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলা করে ভালো ফলাফল বয়ে আনা অনেকটা চ্যালেঞ্জের মতোই। বিশেষ করে নারী শিক্ষার অগ্রগতিতে কলেজটি আশার আলো ছড়াচ্ছে।
কলেজ নির্বাহী কমিটির সভাপতি মেজর (অবঃ) নুরুল মান্নান চৌধুরী বলেন, এই সাফল্য একা কারোর নয়, সমগ্র অঞ্চলের। উত্তীর্ণদের প্রতি অভিবাদন। আমি দৃঢ় আশাবাদী পিছিয়ে পড়া জনপদকে আলোকিত করতে কলেজটি আগামী দিনে অগ্রণী ভূমিকায় থাকবে।
কলেজের প্রতিষ্ঠাতা নিউইয়র্ক প্রবাসী মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ বলেন, এই সাফল্য সকলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ও সহযোগিতার বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে। শিক্ষক-শিক্ষিকা, নির্বাহী কমিটি, এলাকাবাসীসহ যারা কলেজের অগ্রযাত্রায় নিরলস শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন তাদের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। আমার দৃঢ় বিশ্বাস শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিগণসহ সর্বস্তরের এলাকাবাসীর সহযোগিতা নিয়ে কলেজটি আরো এগিয়ে যাবে।
আপনার মতামত লিখুন :