ডেস্ক রিপোর্টঃ দেশে মাদকের সরবরাহ বন্ধ করতে হলে চাহিদা কমাতে হবে। এমনটিই মনে করেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে বাংলাদেশ পুলিশ কল্যাণ ট্রাস্ট পরিচালিত মাদকাসক্তি নিরাময় ও মানসিক স্বাস্থ্য পরামর্শ কেন্দ্র ওয়েসিসের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান।
ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, কেউ মাদকাসক্ত হলে তার পরিবারের কী অবস্থা হয়, পুলিশে চাকরির সুবাদে আমার তা দেখার দুর্ভাগ্য হয়েছে। সমাজের অনেক সম্মানিত ব্যক্তির নীরব কান্না দেখতে হয়েছে আমাকে। এ গোপন কান্না এত কষ্টের, যা কারও সঙ্গে শেয়ারও করা যায় না সামাজিক মর্যাদার কারণে। কিন্তু আমার কাছে এসে শেয়ার করেছেন। এমন ঘটনা একটি নয়, অহরহ আছে।
তিনি বলেন, প্রচলিত মাদক নিরাময় কেন্দ্রগুলোতে নাম-পরিচয় দিতে হয় বলে অনেকে ছেলে-মেয়েদের চিকিৎসা করাতে আগ্রহী হন না। আবার যার চিকিৎসার প্রয়োজন, তিনি চিকিৎসা নিতে চান না। পরিবার চায়, তাদের ধরে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে, যা অনেক সময় আইনসম্মত নাও হতে পারে। বাংলাদেশের সংবিধান বলে এ দেশের নাগরিকরা স্বাধীন ও মুক্ত। তাই কারো ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোথাও নিয়ে যাওয়া যায় না।
তিনি আরও বলেন, এনজিওসহ বিভিন্ন সংস্থার তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে মাদকাসক্তের সংখ্যা ৮০ লাখ, আবার কেউ কেউ বলেন এক কোটি ছাড়িয়ে গেছে। ২০১৮ সালে জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, বাংলাদেশে মাদকাসক্ত মানুষের সংখ্যা ৩৬ লাখ। কিন্তু বাংলাদেশে সরকারি-বেসরকারি মাদক নিরাময় কেন্দ্রে মোট বেড আছে সাত হাজার। তাহলে এত সংখ্যক মাদকাসক্ত ব্যক্তিদের আমরা কত বছরে চিকিৎসা দেব?
দেশে মাদক ও মাদকাসক্তি সমস্যা সমাধানের বিষয়ে আইজিপি বলেন, কোনো মাদকই দেশে তৈরি হয় না। ফেনসিডিল আসে প্রতিবেশী দেশ থেকে। ইয়াবাও আসে প্রতিবেশী আরেক দেশ থেকে। এখন আবার আসছে আইস। এসবের কোনটিই কিন্তু বাংলাদেশের অভ্যন্তরে তৈরি হয় না। আর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী হিসেবে আমরা যে কাজটি করার চেষ্টা করি তা হচ্ছে মাদকের সাপ্লাই কাট। মাদক দমনে ছয় থেকে সাতটি বাহিনী একসঙ্গে কাজ করে। এছাড়া কাস্টমস বিভিন্ন পোর্টে মাদক দমনে কাজ করে।
মন্তব্য করুন