কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি॥ এক সময়ের বৃহত্তর সিলেটের শস্যভান্ডার খ্যাত মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় এ বছর আমন ধানের ভালো ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী কৃষিনির্ভর এ উপজেলায় প্রায় তিন লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। আমন মৌসুমে আবহাওয়া অনকুল, পর্যাপ্ত বর্ষার পানি এবং বন্যা না হওয়ায় আমন ধানের ক্ষেত যেন এবার বাতাসের সাথে হাসছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১৭ হাজার ২৭০ হেক্টর জমিতে আমনের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে ১৩০ হেক্টর জমিতে স্থানীয় চাষ হয়েছে। এছাড়া হাইব্রিড জাতের রোপা আমন ধান, সুগন্ধি জাতের ধান চাষ করা হয়েছে। শতভাগ লক্ষ্যমাত্র পূরণ হয়েছে। আর এক থেকে দেড় মাসের মধ্যেই কৃষক তাদের কাঙ্খিত আমন ধান কেটে ঘরে তুলতে পারবেন।
জানা যায়, কৃষকদের নিরবিচ্ছিন্ন সেবা দিতে উপজেলা কৃষি বিভাগ আমন ধানকে পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে ও নির্বিঘ্নে ঘরে তুলতে সচেতনামূলক আলোচনা সভাসহ মাঠপর্যায়ে বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে কৃষকদের উদ্ধুদ্ধ করছেন। এছাড়া মাঠের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যাবেক্ষণ উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাসহ উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিকভাবে কৃষকের জমিতে গিয়ে ফসলের তদারকিসহ নিয়মিত পরামর্শ দিচ্ছেন। জরিপের মাধ্যমে নিয়মিতভাবে রোগ ও পোকার আক্রমণ সংক্রান্ত পূর্বাভাস জরিপ করছেন কৃষি কর্মকর্তারা।
উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের কৃষক ময়নুল ইসলাম বলেন, দুই একর জমি বর্গা নিয়ে চাষ করেছি। এই মাঠে সবার জমিতে আমন চাষ ভালো হয়েছে। পোকায় আক্রমণ ও রোগে যদি না পায় তাহলে ধান অনেক ভালো হবে। প্রতিদিন ধান ক্ষেতে এসে দেখাশোনা করি। পতনঊষার ইউনিয়নের কৃষক শাহীন মিয়া বলেন, আমার ৪ একর জমি আছে। পানির অভাবে আউশধান চাষ করতে পারিনি। আমন মৌসুমে ৪ একর জমিতে ধান চাষ করেছি। উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে এ ফসল ফলিয়েছি। ভালো ফলন হবে আশা করছি।
সার্বিক বিষয়ে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার বিশ্বজিৎ রায় বলেন, বেশি ফলন হওয়ায় কৃষকদের হাইব্রিড ও উফশীতে আগ্রহ বেশি। গেল কয়েক বছর ধরে স্থানীয় জাতের ধানের আবাদ কমে উফশী জাতের আবাদ বেড়েছে। আশা রাখছি এসব ধানে এবারও বাম্পার ফলন হবে। অতিরিক্ত গরমে উপজেলার কিছু জমিতে মাজরা পোকায় আক্রমণকরেছিল বর্তমানে তা কমে এসেছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ফলন ভালো হবে।
মন্তব্য করুন