কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি:
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নের চৈত্রঘাট বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ও যুবলীগ নেতা নাজমুল হাসান হত্যা মামলার এজাহারভূক্ত ২ জন আসামী শ্রীমঙ্গলের মাজদিহি চা বাগানে র্যাবের সাথে বন্ধুকযুদ্ধে নিহত
হয়েছেন। নিহতরা হলেন হত্যা মামলার এজাহারভূক্ত ২ নম্বর আসামী রহিমপুর ইউনিয়নের প্রতাপী গ্রামের আব্দুল আহাদ নাইছ মিয়ার পুত্র তোফায়েল মিয়া (৩৫) ও ৮ নম্বর একই ইউনিয়নের জগনশালা গ্রামের মৃত মনির মিয়ার পুত্র শহীদ
মিয়া (৪০)। রোববার (৭ নভেম্বর) ভোরে এ ঘটনা ঘটে।
শ্রীমঙ্গল র্যাব-৯ সূত্রে জানা যায়, রোববার ভোরে মাজদিহি চা বাগানের পাহাড়ি এলাকায় র্যাবের গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি করে একদল দুর্বৃত্ত। এ সময় র্যাবও পাল্টা গুলি চালায়। র্যাবের সঙ্গে কথিত ব›ন্দুযুদ্ধে ঘটনাস্থলেই দুই জন নিহত হয়েছেন। র্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নিহত দুই জন কমলগঞ্জের চৈত্রঘাট বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ও যুবলীগ নেতা নাজমুল হাসান হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি।
শ্রীমঙ্গল র্যাব-৯ এর ব্যাটালিয়ান কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বসু দত্ত চাকমা জানান, রোববার ভোরে মাজদিহি চা বাগান এলাকায় নিহত দুই জন র্যাবের গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালায়। আত্মরক্ষায় র্যাবের পক্ষ থেকেও পালটা গুলি ছোঁড়া হয়। এসময় র্যাবের ৩ সদস্য আহত হন। র্যাব জানায়, গোলাগুলি থামার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে অজ্ঞাত পরিচয় দুই ব্যক্তিকে পড়ে থাকতে দেখা যায়। র্যাব তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়, দায়িত্বরত চিকিৎসক তাদের দুইজনকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে লাশ দুটি শ্রীমঙ্গল থানায় হস্তান্তর করা হয়।
নিহতরা নাজমুল হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি বলে জানিয়েছেন কমলগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সোহেল রানা। তিনি বলেন, বন্দুকযুদ্ধে নিহত তোফায়েল মিয়া নাজমুল হত্যার ২ নম্বর ও শহীদ মিয়া ৮ নম্বর এজাহারভুক্ত আসামি।
উল্লেখ্য, কমলগঞ্জের চৈত্রঘাট বাজারে গত ৩১ অক্টোবর দুপুরে ২টায় সন্ত্রাসীরা একটি মাইক্রোবাসে এসে প্রকাশ্যে ব্যবসায়ী নেতা নাজমুল হাসানকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেন। ওই দিন সন্ধ্যা ৭টার দিকে সিলেটের উইম্যান্স মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নাজমুল মারা যান। এ ঘটনায় পরদিন নিহত নাজমুল হাসানের বড় ভাই শামসুল হক বাদী হয়ে ১৪ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ৪-৫ জনকে আসামি করে কমলগঞ্জ থানায় একটি হত্যা
মামলা করেন। এ ঘটনার সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ ফেসবুকে ভাইরাল হয়।
ফুটেজে দেখা যায়, কালো একটি মাইক্রোবাসে আসা ৯ ব্যক্তি নাজমুলকে ধাওয়া করে। এক পর্যায়ে নিজ বাসার সামনে এসে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন নাজমুল। তখন নাজমুলকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ফেলে যায় ওই ৯ সন্ত্রাসী। মৃত্যুর আগে নাজমুল ফেসবুক লাইভে জানিয়েছিলেন, হামলাকারীদের মধ্যে চার জনকে চিনতে পেরেছেন। তারা হলেন স্থানীয় তোফায়েল, রাসেল, মাসুদ ও তোফাজ্জল। তার দাবি, ইউপি নির্বাচনে সদস্য পদে নির্বাচন করার ঘোষণায় তার ওপর হামলা হয়েছে। তার মৃত্যু হলে খুনিদের যেন সাজা হয় সেই দাবিও জানিয়েছিলেন নাজমুল।
মন্তব্য করুন