হাবিবুর রহমান হাবিব, শাল্লা (সুনামগঞ্জ) থেকেঃ
সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার শাল্লা ইউনিয়নের অন্তর্গত গ্রাম শাল্লা গ্রামের অনেক পরিবারের লোকজন নদী ভাঙ্গণের কবলে পড়ে ইতিমধ্যে সর্বস্ব হারিয়েছেন।
এই সরকার কিংবা স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের কার্যকরী কোন পদক্ষেপ না থাকায় দিশেহারা গ্রামের এ সকল ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার।
শনিবার (১২ জুলাই) সরজমিনে ঘুরে ও গ্রাম শাল্লার বাসিন্দা অনেক লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, গ্রাম শাল্লায় হাজারো হিন্দু-মুসলিম ভূমিহীন, দিনমুজুর ও কৃষকরা মিলেমিশে বসবাস করে আসছেন।
কিন্তু বিগত ২০১৯ সাল থেকে শুরু হওয়া ভয়াবহ নদীভাঙ্গনে ইতিমধ্যে এই গ্রামের অনেক পরিবার তাদের বসতভিটা হারিয়েছেন , চলতি বছরের গত ১৬ই জানুয়ারীর পর থেকে কালনী নদীর পানি কমতে শুরু করায় ব্যাপকভাবে নদীভাঙ্গণ দেখা দেয়, এতে আরো প্রায় শতাধিক পরিবারের ঘরবাড়ি হুমকির মধ্যে রয়েছে।
ফলে কালনী নদী তীরবর্তী এই গ্রামের মানুষজন তাদের বসতভিটা, মাদ্রাসা , কিন্ডারগার্টেন, বাজার নিয়ে শংঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন বলে গ্রামের লোকজন জানান।
অবিলম্বে বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার ও স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড কার্যকরী পদক্ষেপ না নিলে তারা আগামী হেমন্ত আসার আগেই বসতভিটা হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়লে পরিবার পরিজন নিয়ে কোথায় অবস্থান করবেন জানা নেই তাদের।
এ ব্যাপারে গ্রাম শাল্লার বাসিন্দা ভূক্তভোগী মোছাঃ নূরুন্নেছা বেগম ৫০ স্বামী ইশ্রাঈল পাঠান, আছিয়া বেগম ৭০স্বামী মৃত মোঃ আলাউদ্দিন মিয়া, মোঃ রাজিব মিয়া ৪০ পিতা মৃত মোঃ ওয়াহিদ মিয়া, মোঃ মকবুল খাঁ ৪৫ পিতা মৃত মর্তুব খাঁ, মোঃ মোস্তফা খান ৫৫, পিতা মৃত মোঃ জামানত খাঁ, সাত্তার মিয়া ৪৫ পিতা আব্দুল্লাহ মিয়া, সেলিম মিয়া ৪৪ পিতা মৃত মোঃ আহাদ মিয়া, দরছ মিয়া ৫৫ পিতা মৃত মোঃ আরজ আলী মিয়া, মোহাম্মদ মিয়া ৫৪ পিতা মৃত মোঃ তাজ মোহাম্মদ, মোঃ লিলু মিয়া ৪০ পিতা মৃত মোঃ লাল মোহাম্মদ, আমিনুল ইসলাম ৩৮ পিতা মৃত ছাবু মিয়া, নজরুল ইসলাম ৬৫ পিতা মৃত সোনা মিয়া, মোঃ তাউছ মিয়া ৪৭ পিতা মৃত ছোলাই মিয়া, সাজ্জাদ মিয়া ৪৫ পিতা মৃত আহাদ মিয়া, আমানত খাঁ ৬০ পিতা মৃত মোঃ চাঁন খাঁ, অলিউর মিয়া ৩৫ পিতা মৃত ওসমান মিয়া সহ আরো অনেকে এ প্রতিবেদককে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন- তাদের ঘরবাড়ি সহ ইতিমধ্যে পনেরোটি বসতবাড়ি নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে, আশংকা প্রকাশ করে আরো বলেন নদীর পানি বাড়ার সাথে সাথে নদী ভাঙ্গন বৃদ্ধি দেখা দিলে তাদের বাকি ঘরবাড়ি গুলো ও নদীগর্ভে বিলিন হয়ে যেতে পারে।
অবিলম্বে ঘরবাড়ি রক্ষার পাশাপাশি এই গ্রাম শাল্লা অঞ্চলটি রক্ষা করতে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে সরকারের নিকট জোর দাবীও জানানিয়ে গ্রামবাসী লোকজন আরো জানান বার বার পানি উন্নয়ন বোর্ডের ধারস্থ হয়ে কেবলই আশার বানী’ই শুনে আসছেন ,কিন্তু বাস্তবে কথার সাথে কাজের কোন মিল না পাওয়াতে তাঁরা হতাশাগ্রস্থ।
গ্রাম বাসি লোকজন নদী ভাঙ্গনের কবল থেকে তাদের রক্ষা করতে বর্তমান অন্তবর্তী কালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার মাধ্যমে পানি মন্ত্রনালয়ের উপদেষ্টার নিকট জোর দাবীও জানান, সরকার দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ না নিলে আগামী হেমন্ত আসার আগেই পুরো গ্রাম শাল্লা অঞ্চলটি নদীগর্ভে বিলিন হয়ে যেতে পারে বলে গ্রাম বাসি লোকজন আশংকা প্রকাশ করেন।
এবিষয়ে শাল্লা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পিয়াস চন্দ্র দাস বলেন ঘটনারস্থল পরিদর্শনে যাচ্ছি। শেষে নদী ভাঙ্গন রোধ প্রকল্পের আওতায় একটি প্রকল্প প্রস্তাবনা পাঠানো হবে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে।
আপনার মতামত লিখুন :