হবিগঞ্জে কুরবানীর ঈদের হাট কাঁপাবে জিললু, ডন সুলতান, বাহাদুর ও লাল রাজা বাবুরা
দ্যা সিলেট পোস্ট
প্রকাশের সময় : মে ২৩, ২০২৫, ৮:০৩ অপরাহ্ন /
০
নুরুজ্জামান ফারুকী হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
শাহিওয়াল জাতের ২০ মণ ওজনের গরুর নাম জিললু। গরুটি এক বছর ধরে দেশীয় প্রদ্ধতিতে লালন-পালন করেছেন হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার নিশাপট গ্রামের খামারি তারেকুল ইসলাম সুজন। আসন্ন ঈদুল আযহার কোরবানীর পশুর হাটে তুলার জন্য গরুটি প্রস্তুত করেছেন তিনি। তিনি গরুটি ৫ লাখ টাকায় এবার কোরবানীর হাটে বিক্রি করতে চান। শুধু জিললু নয়, তার খামারে ডন ও সুলতান নামে ১৫ থেকে ১৬ মন ওজনের আরও দুটি গরু বাজারের জন্য প্রস্তুত করেছেন তিনি। একই গ্রামের শামীম মিয়া তার খামারে লালন-পালন করেছেন শাহিওয়াল জাতের কালো রাজা ও লাল রাজা বাবু নামে দুটি গুরু। তার খামারে ৪ গরু থাকলে ওই দুটি গরু সবচেয়ে বড়। দুটির ওজন ৯ থেকে ১০ মন। তিনি বাজারে দর ভাল হলে প্রত্যেকটি গরুর দাম ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা হাঁকছেন তিনি। এছাড়া বানিয়াচং উপজেলার ভবানীপুর এলাকার রতœা বাজার সংলগ্ন রফিক ডেইরী ফার্মে দেশী প্রদ্ধতিতে পালন করা হয়েছে কালো রংয়ের বাহাদুর ও রবিন নামে দুটি ফিজিয়ান ও শাহিওয়াল জাতের দুটি ষাড়। ওই দুটি ষাড়ের ওজন ১০ থেকে ১২ মন। কোরবানী বাজারে ষাড় দুটি তুলার শেষ প্রস্তুতি নিয়েছেন খামারী রফিক মিয়া। যার দাম হাঁকা হয়েছে ৫ থেকে ৪ লাখ টাকা।
শায়েস্তাগঞ্জের নিশাপট গ্রামের খামারী তারেকুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘আমার খামারে এবার সবচেয়ে বড় গরু জিললু। গরুটি দেখতে আকর্ষনীয় থাকায় আমি এর নাম রেখেছি জিললু। আশা করি বাজার দর ভাল থাকলে জিললুকে ৫ লাখ টাকা বিক্রি করা যাবে। আমার খামারে ডন, সুলতানসহ বিভিন্ন জাতের আরও ৫টি গরু রয়েছে। এবারের পশুর হাটে সবকটি বিক্রি করবো’। একই গ্রামের খামারী শামিম মিয়া বলেন, ‘আমি এ বছর ৪টি গরু হাটে তুলবো। তবে কালো রাজা ও লাল রাজা বাবু সবচেয়ে বড়। যদি বাজারে ভারতীয় গরু না আসে তাহলে প্রত্যেকটি ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা বিক্রি করতে পারবো’।
হবিগঞ্জ শহরের উমেদ নগরের সাব্বির ডেইরি ফার্মের স্বত্বাধিকারী মোঃ সাব্বির বলেন, ‘আমি প্রতি বছর কোরবানীর জন্য গরু লালন পালন করি। আমরা সম্পূর্ণ দেশি পদ্ধতিতে গরুগুলো কোরবানির জন্য মোটাতাজাকরণ করছি। গরুগুলোকে জার্মানি ঘাস, খইল ও হাওরের সবুজ ঘাস খাইয়ে প্রস্তুত করা হচ্ছে। আমার খামারে ফিজিয়ান, শাহিওয়ালসহ কয়েকজাতের গরু রয়েছে। ইতিমধ্যে কয়েকটি বিক্রি করা হয়েছে। ৬ থেকে ৭শ কেজি ওজনের কয়েকটি গরু রয়েছে। এগুলো কোরবানীর বাজারে তুলা হবে’।
বানিয়াচং উপজেলার ভবানিপুরের প্রান্তিক খামারী রফিক বলেন, ‘আমাদের গরুগুলোকে দেশি খাবার দেওয়ার কারণে এর চাহিদা অন্য গরুর চেয়ে বেশি থাকে। যে কারণে ক্রেতাই সরাসরি খামারে এসে তাদের পছন্দের গরু ক্রয় করে নিয়ে যায় কোরবানির জন্য। বাজারে ছোট ও মাঝারী গরুর অনেক চাহিদা রয়েছে। গরুর সঠিক মূল্য পেলে এসব বিক্রি করা হবে’। বাজারে গরুর দাম ভাল রাখতে হলে ভারতীয় গরু দেশে প্রবেশ বন্ধে সরকারকে কঠোর হতে হবে’।
জেলা প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তর অফিস জানায়, জেলায় ৯টি উপজেলায় প্রায় ৭ হাজার ২শ ৯৯টি ছোট-বড় গরুর খামার রয়েছে। এ বছর জেলায় কোরবানির চাহিদা রয়েছে প্রায় ৭০ হাজার ৫শ ৮৩টি তবে মজুদ রয়েছে ৭১ হাজার ৭শ ৪৬টি গরু। যা খামারগুলো ও বিভিন্ন বাড়িতে কৃষকরা কোরবানীর জন্য প্রস্তুত করেছেন। এতে এ বছর জেলায় পশু কোরবানিতে সংকট পড়বে না।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ আব্দুল কাদের বলেন, ‘সার্বক্ষণিক জেলার খামারগুলোতে নজরদারি করা হচ্ছে। ভারতীয় গরু দেশে প্রবেশের কোন সম্ভাবনা নেই। এ বিষয়ে সরকার তৎপর রয়েছে। এ বছর জেলায় চাহিদার চেয়ে বেশি গরু কোরবানীর জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। এতে করে বাহির থেকে গরু আসার প্রয়োজন নেই’।
আপনার মতামত লিখুন :