হবিগঞ্জে ৫ বছরে বজ্রপাতে ৮২ জনের মৃ ত্যু


দ্যা সিলেট পোস্ট প্রকাশের সময় : মে ২৩, ২০২৫, ৮:১২ পূর্বাহ্ন /
হবিগঞ্জে ৫ বছরে বজ্রপাতে ৮২ জনের মৃ ত্যু
নুরুজ্জামান ফারুকী হবিগঞ্জ প্রতিনিধি। 
হবিগঞ্জ জেলায় গত পাঁচ বছরে বজ্রপাতে ৮২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে ৫৬ জনই কৃষক, যা মোট মৃত্যুর প্রায় ৭০ শতাংশ। সরকারি তথ্য অনুযায়ী এ চিত্র উঠে এসেছে।
জানা গেছে, সর্বশেষ ১৭ মে চুনারুঘাট উপজেলার রতনপুর গ্রামের মর্তুজ আলী বাড়ির পাশে ধান কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে মারা যান। এর আগে, ১২ মে লাখাই উপজেলার স্বজনগ্রামের আজগর আলী মাঠে গরু চরাতে গিয়ে বজ্রপাতে প্রাণ হারান। একইভাবে, ১১ মে আজমিরীগঞ্জ উপজেলার ডেমিকান্দি গ্রামের যুবক সাজু মিয়া বাড়ির পাশে একটি খালে গোসল করতে গিয়ে বজ্রাঘাতে নিহত হন।
এভাবে প্রতিবছর হবিগঞ্জ জেলার বিভিন্ন স্থানে বজ্রপাতে প্রাণ হারাচ্ছেন নানা বয়সের নারী-পুরুষ। বিশেষ করে বোরো মৌসুমে হাওড়ে ধান কাটতে যাওয়া কৃষকরা বজ্রপাতের আতঙ্কে থাকেন। প্রতি বছরই জেলার কোথাও না কোথাও বজ্রাঘাতে মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। হতাহতদের অধিকাংশই হাওড়ে কাজ করতে যাওয়া কৃষক বা শ্রমিক।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০২১-২২ অর্থবছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় বজ্রপাত থেকে জানমালের সুরক্ষায় একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করে। প্রকল্পের আওতায় দেশের ১৫টি জেলায় ৩৩৫টি লাইটনিং অ্যারেস্টর (বজ্রনিরোধক যন্ত্র) স্থাপন করা হয়, যাতে ব্যয় হয় ১৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা। এর মধ্যে হবিগঞ্জ জেলায় ৩৩টি অ্যারেস্টর স্থাপন করতে ব্যয় হয়েছে প্রায় ২ কোটি টাকা।
স্থানভেদে অ্যারেস্টর স্থাপনার বিবরণ হলো—বাহুবল উপজেলায় ২টি, নবীগঞ্জে ৬টি, বানিয়াচঙ্গে ৭টি, আজমিরীগঞ্জে ৬টি, হবিগঞ্জ সদরে ৩টি, লাখাইয়ে ৩টি, শায়েস্তাগঞ্জে ২টি, চুনারুঘাটে ২টি এবং মাধবপুরে ২টি।
প্রত্যেকটি যন্ত্র চারপাশের ১০৮ মিটার এলাকায় বজ্রপাত নিরোধ ও তথ্য সংরক্ষণে সক্ষম বলে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু কোটি কোটি টাকায় প্রকল্প বাস্তবায়ন হলেও মাঠপর্যায়ে এসব যন্ত্রের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এখনো পর্যন্ত যন্ত্রগুলো কতটি বজ্রপাত ঠেকাতে পেরেছে সে সম্পর্কিত কোনো তথ্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে নেই।
হবিগঞ্জ জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আজাদের রহমান জানান, অ্যারেস্টরগুলো সচল কি না বা সঠিকভাবে কাজ করছে কি না, সে বিষয়ে তাদের কাছে কোনো তথ্য নেই।
হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. ফরিদুর রহমান বলেন, ‘বজ্রপাত থেকে জীবন রক্ষা করতে হলে শুধু অ্যারেস্টর বসালেই হবে না, জনসচেতনতা বাড়ানোও জরুরি। হাওড়পাড়ে বজ্রনিরোধক যন্ত্রসহ বজ্রপাত সহনশীল আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের প্রয়োজন রয়েছে। আমরা এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ পাঠিয়েছি।’