কুলাউড়া প্রতিনিধি
চলতি মাসের ১১ এপ্রিল রাতে মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলা প্রাণি সম্পদ দপ্তরের সীমানা দেয়ালে বিভিন্ন উস্কানিমূলক স্লোগান লিখার ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের সাথে জড়িত থাকার অপরাধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে থানা পুলিশ উপজেলার দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও স্পেন প্রবাসী আতাউল গনি উসমানীকে মামলায় ৯ নম্বর আসামি করেছে। অথচ উসমানী ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে কাতারে পাড়ি দেন। পরে সেখান থেকে স্পেনে পাড়ি দিলেও তার আর দেশে ফেরা হয়নি।
জানা গেছে, ওই মামলায় ছাত্রলীগের ১৫ জন নেতাকর্মীর নামোল্লেখ ও ১৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। গত ১২ এপ্রিল বড়লেখা থানার এসআই সুব্রত চন্দ দাস বাদি হয়ে ওই মামলাটি করেন।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, শুধু উসমানী নয়, একই মামলায় এজাহার নামীয় আসামি হিসাবে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত আরও তিনজন প্রবাসীকে আসামি করা হয়েছে। ওই মামলার ৫ নম্বর আসামি বড়লেখা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি জামিল আহমদ। অথচ জামিল ২০১৭ সাল থেকে সৌদি আরবে অবস্থান করেছেন। ৮ নম্বর আসামি করা হয় দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহসভাপতি কামরান আহমদকে। কামরান ২০২২ সালে থেকে ইউনাইটেড আরব আমিরাতে রয়েছেন। মামলার ১০ নম্বর আসামি দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আফতার আহমদ। আফতার ২০২৪ সালের মার্চ থেকে কাতারে রয়েছেন।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, তারা দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসে থাকলেও শুধু রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করার উদ্দেশ্যে তাদের ওপর গায়েবি মামলা করা হয়েছে। এতে প্রবাসীরা ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন।
প্রবাসী ছাত্রলীগ নেতা কামরান আহমদ বলেন, দেশে থাকতে ছাত্রলীগের রাজনীতি করেছেন। তিনি ২০২২ সালের ৬ জুন বাংলাদেশ ত্যাগ করেন। অথচ গত ১১ এপ্রিল দেশে সরকার বিরোধী মিছিল দিয়েছি উল্লেখ করে সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ আইনে তার উপর বড়লেখা থানায় মিথ্যা গায়েবি মামলা করা হয়েছে। এই মামলা দিয়ে তাকে ও তার পরিবারকে হয়রানি করা হচ্ছে। তিনি তার ওপর করা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান।
স্পেন প্রবাসী ছাত্রলীগ নেতা আতাউল গনি উসমানী বলেন, দুই বছর ধরে প্রবাসে রয়েছি। অথচ গত দুইদিন আগের মামলায় আমার নামে মামলা হয়েছে। আমার জানামতে আমি কোনোদিন কারো ক্ষতি করিনি। আমার নামে মামলা দিয়ে আমাকে ও আমার পরিবারকে হয়রানি ও অসম্মানি করার চেষ্টা করছে।
কাতার প্রবাসী আফতার আহমদ বলেন, পুলিশ মামলার এজাহারে বলেছে ঘটনার রাতে আমরা দেয়ালে উস্কানিমূলক স্লোগান লিখেছি। আমি দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসে রয়েছি।
তিনি বলেন, পরিকল্পিতভাবে আমাকে ও আমার পরিবারকে হয়রানির উদ্দেশ্যে এগুলো করা হয়েছে।
বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কাশেম সরকার জানান, নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ১৫ জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
আপনার মতামত লিখুন :