পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে মা ও তার পুত্রকে অস্ত্রের দিয়ে আঘাতে ছেলের কব্জি ,এবং মায়ের চারটি আঙুল বিচ্ছিন্ন


দ্যা সিলেট পোস্ট প্রকাশের সময় : এপ্রিল ১৯, ২০২৫, ১১:১৫ পূর্বাহ্ন /
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে  মা ও তার পুত্রকে অস্ত্রের দিয়ে আঘাতে ছেলের  কব্জি ,এবং মায়ের চারটি আঙুল বিচ্ছিন্ন

পঞ্চগড় প্রতিনিধি:

পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে এক মাদকাসক্তের কোপে গুরুতর আহত হয়েছেন মো. মামুন (৩০) নামের এক যুবক। একই ঘটনায় তার মা মাহফুজা বেগমও (৫০) গুরুতর আহত হয়েছেন।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টায় উপজেলার দণ্ডপাল ইউনিয়নের মাটিয়ার পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আঘাতের ফলে মামুনের দুই হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এছাড়া তার মায়ের ডান হাতের চারটি আঙুল বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। মামুন উপজেলার দণ্ডপাল ইউনিয়নের মাটিয়ার পাড়া গ্রামের মো. রঞ্জু সরকারের ছেলে।

ঘটনার পরপরই অভিযুক্ত মোস্তাফিজুর রহমান মিল্লাত (২৩)কে আটক করেছে পুলিশ। তিনি একই এলাকার মো. ফেরদৌসের ছেলে। মামুন ও মোস্তাফিজুর সম্পর্কে চাচাতো-জেঠাতো ভাই।

ঘটনার পর স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখান থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে মা-ছেলেকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

মামুনের স্ত্রী জাহানারা বলেন, “মোস্তাফিজুর নিয়মিত মাদক সেবন করে। সে তার স্ত্রীকে প্রায়ই মারধর করে। পারিবারিক কলহ মীমাংসার জন্য একবার বাড়িতে আলোচনা হয়। সেই সময় মামুন মোস্তাফিজুরকে শাসনের জন্য উপস্থিত বয়োজ্যেষ্ঠদের অনুরোধ করেন। প্রায় পাঁচ মাস আগে মোস্তাফিজুরের স্ত্রী বাবার বাড়ি চলে যান। এসব কারণে মোস্তাফিজুর মামুনের ওপর ক্ষিপ্ত ছিলেন।”

তিনি আরও বলেন, “বুধবার সকালে খাওয়ার পর আমার স্বামী মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন। তখনই মোস্তাফিজুর তাকে পেছন থেকে আঘাত করেন, ফলে তিনি পড়ে যান। এরপর ধারালো লোহার অ্যাঙ্গেল দিয়ে উপর্যুপরি কোপাতে থাকেন। প্রাণ বাঁচাতে মামুন দৌড়ে বাড়িতে ফিরে দরজা বন্ধ করেন। কিন্তু মোস্তাফিজুর দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে আবারও কোপাতে থাকেন। এতে মামুনের দুই হাতের কব্জি এবং ডান কান বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, মাথায়ও কোপ লাগে। মামুনকে বাঁচাতে গেলে আমার শাশুড়িকেও কোপায় মোস্তাফিজুর। এতে তার ডান হাতের চারটি আঙুল বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং বাম হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলিও প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।”

ঘটনার পর স্থানীয়রা মোস্তাফিজুরকে আটক করে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ আসার আগেই উত্তেজিত জনতা তাকে মারধর করে। পরে দেবীগঞ্জ থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে মোস্তাফিজুর নিজের অপরাধ স্বীকার করেছে।

পুলিশ আরও জানায়, কোপানোর সময় ব্যবহৃত লোহার অ্যাঙ্গেলটি পাশের একটি পুকুরে ফেলে দেয় মোস্তাফিজুর।

দেবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সোয়েল রানা বলেন, “অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।”