মাহাদি হাসান, নিউজ ডেস্কঃ ইভ্যালি থেকে দালাল ডট কম, অথবা ই–অরেঞ্জ থেকে ধামাকা ডট কম, কিংবা সিরাজগঞ্জ ডক কম থেকে আলাদিনের প্রদীপ নতুবা রিং আইডি থেকে কিউকুম। ই–কমার্স ও সোশ্যাল মিডিয়া তথা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে পণ্য বিক্রয়কারী এসব প্রতিষ্ঠান দ্বারা লাখ লাখ মানুষ প্রতারিত হয়েছেন। আর এই প্রতারণার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে পুরো খাতে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত জুলাই থেকে কার্ডের মাধ্যমে ই-কমার্স, অর্থাৎ অনলাইনে লেনদেন কমেছে। সেই তুলনায় মোবাইল ব্যাংকিং সেবা (এমএফএস) ব্যবহারের মাধ্যমে মার্চেন্ট লেনদেন অনেক বেশি হচ্ছে। এর বড় একটি অংশ ই–কমার্স লেনদেন।
ব্যাংকাররা বলছেন, গ্রাহকেরা কয়েকভাবে ই-কমার্সে লেনদেন করে থাকেন। এগুলোর মধ্যে বড় মাধ্যম বিকাশ, রকেট ও নগদের মতো সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো। পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যাংকের ইস্যু করা ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন করেন গ্রাহকেরা। ইন্টারনেট ব্যাংকিং সেবা ব্যবহার করেও আজকাল কেনাকাটা করা যায়। এ ছাড়া পণ্য গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দেওয়ার পর কিছু নগদ টাকায় লেনদেন সম্পন্ন হয়।
করোনাভাইরাসের কারণে দোকান ও মার্কেট বন্ধ থাকায় অনেক প্রতিষ্ঠান অনলাইনে পণ্য বিক্রি বাড়িয়ে দেয়। অন্যদিকে ভোক্তারাও স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতে অনলাইন কেনাকাটা শুরু করেন। এই সুযোগে বহু বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান বড় ছাড় দিয়ে পণ্য বিক্রির ঘোষণা দেয়। তবে এদের অনেকেই টাকা নেওয়ার পরও ভোক্তাদের পণ্য দিতে বিলম্ব করে। আবার কেউ কেউ গ্রাহকের টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। এ ধরনের প্রতারণার ঘটনায় গ্রাহকেরা অনলাইনে কেনাকাটায় অনেকটা বিমুখ হয়ে পড়েছেন। সব মিলিয়ে পুরো ই–কমার্স খাতে অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়ে। গ্রাহকের টাকার সুরক্ষায় ইতিমধ্যে স্ক্রু সেবা চালু হলেও খাতটি এখনো আস্থাহীনতায় ভুগছে।
গত ২৫ এপ্রিল থেকে আবার দোকানপাট ও মার্কেটগুলো খোলার কারণেও অনলাইনে কেনাকাটা কমেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত এপ্রিল মাসে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ৭ লাখের বেশি লেনদেন হয়েছিল, টাকার অঙ্কে যা ৩৯৮ কোটি টাকা। মে মাসে প্রায় কাছাকাছি লেনদেনে ৪৮৩ কোটি টাকা খরচ করেন গ্রাহকেরা। আর জুন মাসে লেনদেন আরও বেড়ে ৫২১ কোটি টাকায় ওঠে। কিন্তু জুলাইয়ে কেনাকাটা ৩৩৮ কোটি টাকায় নামে।
ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে গত এপ্রিলে ৪৪০ কোটি টাকা, মে মাসে ৬০৮ কোটি টাকা ও জুনে ৬৫৯ কোটি টাকার লেনদেন হয়। তবে জুলাইয়ে লেনদেন অর্ধেক কমে হয় ৩০৮ কোটি টাকা। ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে লেনদেন আরও অনেক কমেছে। এদিকে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে মার্চেন্ট পেমেন্ট এখন বেশি হচ্ছে।
মন্তব্য করুন