স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও বৈষম্যের শিকার হবিগঞ্জের চা-শ্রমিকরা


দ্যা সিলেট পোস্ট প্রকাশের সময় : মে ২, ২০২৫, ৯:১০ অপরাহ্ন /
স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও বৈষম্যের শিকার হবিগঞ্জের চা-শ্রমিকরা
নুরুজ্জামান ফারুকী হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
রোদ বৃষ্টি ঝড়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাতা তুলেন চা শ্রমিক নারীরা। যাদের নরম হাতের পরশে সমৃদ্ধ হয় আমাদের অর্থনীতি। অতচ তাদেরই বেতন বৈষম্যের ও বঞ্চনার শিকার হতে হচ্ছে। যাদের জীবন পাতায় সুখের চেয়ে দুঃখের গল্পটাই বেশি। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস ৫৪ বছরের হলেও চা শ্রমিকদের শ্রমঘামের ইতিহাস প্রায় পোনে দুইশ বছরেরও বেশি। যাদের নরম হাতে উৎপাদিত হচ্ছে আমাদের সকালের সতেজতার গরম চা। সচ্ছল হচ্ছে দেশের অর্থনীতি। কিন্তু আজো  সচ্ছল হয়নি চা শ্রমিকদের জীবন মানের।
হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর-চুনারুঘাট ও বাহুবল-নবীগঞ্জ উপজেলায় ৩৩টি চা বাগানে স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে প্রায় ৩২ হাজার শ্রমিক চা পাতা উত্তোলনে জড়িত। প্রতিবছর মে দিবস এলেই নিজেদের অধিকার আদায়ে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন শ্রমিক নেতারা। কিন্তু শ্রমিকদের ভাগ্যে তেমন পরিবর্তন  হয়না। তবুও শ্রমিকদের দাবী আদায়ের আন্দোলন চলমান রয়েছে। এ বছরও অনেক গুলো দাবী নিয়ে মে দিবস উদযাপন করছেন হবিগঞ্জ চা শ্রমিকরা। এর মধ্যে এবার শ্রমিকদের অন্যতম দাবী ১৯২১ সালের ২০ মে বিট্রিশ সরকার কর্তৃক চা-শ্রমিকদের নির্যাতনের ঘটনায় ২০ মে চা-শ্রমিক দিবস হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান। এছাড়া বন্ধ চা-বাগাান গুলো দ্রুত চালু করতে সরকারী প্রদক্ষেপ দাবী,  চা-শ্রমিকদের ভূমি অধিকার নিশ্চিত করন। শ্রম আইনের ১১৫/১১৭ এবং ২৮/৩২ ধারা অনুুয়মাী বৈষম্য দুরীকরন, ইতিহাস ও ঐতিহ্য রক্ষায় চা শ্রমিকদের বিলুপ্ত সাংস্কৃতি অনুষ্ঠান পরিচালনায়  চা জনগোষ্টি শিল্পকলা একাডেমী স্থাপন,  যোগ্যতা অনুযায়ী চা-শ্রমিক সন্তানদের সরকারী বিভিন্ন দপ্তরের চাকুরীর সুযোগ প্রদানের দাবী প্রদান করা হবে।
আজ বৃহস্পতিবার (১ মে) শ্রীমঙ্গলের রাজঘাট চা বাগানে মে দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা, র‌্যালী অনুষ্ঠিত হবে। এতে হবিগঞ্জের ৩৩টি চা-বাগানের শ্রমিক ও নেতারা অংশ গ্রহন করবেন। ওই অনুষ্ঠানের জেলা প্রশাসক ড. ফরিদুর রহমান উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। আলোচনা সভা ও র‌্যালী শেষে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি তুলে দিবেন চা-শ্রমিকরা।
চা শ্রমিকরা জানান, শিল্পের উন্নয়ন ও শ্রমিকদের ভাগ্য পরিবর্তনে এগিয়ে আসবে সরকার এমনটাই চাওয়া তাদের।
শ্রমিক নেতারা বলেন, বসতি অনুযায়ী চা বাগানের বাহিরে অনান্যরা জমির মালিক হয়েছেন। এক জমিতে প্রায় দুইশ বছর বংশ পরমপরায় বসবাস করে আসলেও  এখনও চা শ্রমিকরা এই জমির মালিক  হতে পারেনি। এবারের মে দিবসে তাদের ভূমি অধিকারের পাশাপাশি তাদের দাবী চা বাগান এলাকায় কারিগরী প্রশিক্ষন কেন্দ্র স্থাপন এবং বাগানের শিক্ষিত ছেলেমেয়েদের চাকুরীর ব্যবস্থা করতে হবে’।

চা-শ্রমিক ইউনিয়ন ৭৭/বি বালিচিড়া ভ্যালীর ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক  সুভাষ দাস  বলেন, আমাদের চা-শ্রমিকদের ভূমি অধিকারের পাশাপাশি চা বাগান এলাকায় কারিগরী প্রশিক্ষন কেন্দ্র স্থাপন এবং বাগানের শিক্ষিত ছেলেমেয়েদের চাকুরীর ব্যবস্থা করতে হবে’। এছাড়া ২০ মে চা-শ্রমিক দিবস হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান ও চা-শ্রমিকদের ভূমি অধিকার নিশ্চিত করনে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হবে’।