প্রতারনার গল্প নাম্বার ১.এটিএম কার্ড


দ্যা সিলেট পোস্ট প্রকাশের সময় : মার্চ ৪, ২০২৫, ১১:২৫ পূর্বাহ্ন /
প্রতারনার গল্প নাম্বার ১.এটিএম কার্ড

joyosree mohan talukder

আমি সেদিন অফিসে বসে আছি।প্রচন্ড বৃষ্টি হচ্ছে বাহিরে। দুপুর তিনটা। এমন সময় আমার স্বামী আমাকে ফোন করে বলে জয়শ্রী ভাষা বৃত্তির কিছু টাকা সম্ভবত পায় নাই তাই সিলেট বোর্ড থেকে ফোন করেছে আমিনুল ইসলাম নামে একজন। উনি আমাকে বললেন যে আপনাদের বাসায় যদি এটিএম কার্ড কারো থাকে তাহলে এটিএম কার্ডের ছবি আপনারা তুলে আমাদেরকে পাঠিয়ে দেন। আমরা আপনার মেয়ের বকেয়া টাকা পাঠিয়ে দেব।

আমি বললামএটিএম কার্ড কেন? তোমার একাউন্টেই তো তারা দিতে পারে তখন আমার স্বামী আমাকে বলল যে না উনি তো এরকম বলেছে । এখন ডিজিটাল বাংলাদেশ। আমি বললাম ও তাই।

আমি আমার পতি দেবতাকে বললাম ওনার নাম্বারটা আমাকে দাও। আমার স্বামীকে নাকি এও বলেছে যে স্যার আপনার যদি এটিএম কার্ড না থাকে তাহলে আপনার ওয়াইফের টা দিলেও হবে।

আমি বুঝলাম ভিতরে অবশ্যই কিছু গন্ডগোল আছে। সময় নষ্ট না করে আমার স্বামীর দেয়া নাম্বারে করলাম ফোন। রিং হচ্ছে তিনটা রিংবাজার পরে একজন ফোন ধরলেন। আমি বললাম আপনি কি আমিনুল ইসলাম? উনি বললেন জি বলেন।

ভদ্র মার্জিত কন্ঠস্বর। বুঝতে পারলাম উনি অবশ্যই শিক্ষিত হবেন।আমি বললাম যে আপনি আমার স্বামীর কাছে সম্ভবত ফোন করেছেন এবং বলেছেন যে আমার মেয়ের বৃত্তির কিছু টাকা আপনাদের কাছে পাওনা আছে এবং সেই টাকা আপনারা পরিশোধ করতে চান। পরিশোধের পদ্ধতি হচ্ছে এটিএম কার্ড।

উনি বললেন যে ম্যাডাম এখন আমাদের সিলেট শিক্ষা বোর্ড এটিএম কার্ডের মাধ্যমেই সবাইকে বকেয়া টাকা পরিশোধ করছে । এটা দেয়া হচ্ছে ২০২৪ সাল থেকে আমরা এই ধরনের পদ্ধতি ইউজ করছি কারণ অনেক প্রতারণা হচ্ছে। আপনি পাঠিয়ে দেন ম্যাডাম কোন অসুবিধা হবে না।
আমি বললাম যে না ব্যাংক থেকে আমাদের বলেছে এটিএম কার্ড সম্পর্কিত কোন তথ্য আমরা যেন কাউকে না দেই। তবেআমি আপনাকে বিশ্বাস করছিএবং কথা দিলাম আমি আপনাকে দেবো তবে আগামীকাল সকালে আমি আপনার অফিসে আসছি।বলুন আপনি কোথায় বসেন?সাক্ষাতে দেখা হবার পরে হাতে হাতেই আপনাকে দেয়া যাবে।
উনি আমাকে বললেন যে আমি শিক্ষা বোর্ডের তিন তালাতে আছি।আসুন ম্যাডাম কফি খেয়ে যাবেন এবং আপনার সঙ্গে পরিচিত হলে আমাদেরও ভালো লাগবে। কথা হবে দেখা হবে বলে ফোনটি রেখে দিলাম। কিছুক্ষণ পরে আমার কেন জানি মনে হল দেখি ওনাকে আর একবার ফোনকরি।কিন্তু না যত বাড়ি ফোন করি ততবারই শুধু সংযোগ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। আজ পর্যন্ত ওই একটি কথাই ভেসে আসে এই মুহূর্তে সংযোগ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

কিন্তু আমি এতোটুকু বুঝলাম আমার কিছু একটা করা উচিত। মনের ইচ্ছা মনেই থাকলো করা হলো না কোন কিছু ।কয়েকদিন পর সিদ্ধান্ত নিলাম জিডি করব। থানায় গেলাম জিডি করলাম। থানার কর্মকর্তা যখন ওই নাম্বারটি একটি মেশিনের মধ্যে দিল তখন একটি নাম ভেসে আসলো। একটি নাম। আপনারা মনে করে নিন নিজের মত করে একটি নাম।

তারপর যা শিখেছি তা হল কখনো কাউকে এটিএম কার্ড সম্পর্কিত কোন তথ্য দেবেন না। কারো সঙ্গে শেয়ার করবেন না। ভেবে দেখুন, বিবেচনা করুন, সিদ্ধান্ত আপনার।

সমাপ্ত