পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধি:
পঞ্চগড় ছাত্রলীগের জেলা শাখার সভাপতি আবু মো. নোমান হাসানকে (৩২) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে তাকে রিকশাচালক আল আমিনকে (২১) হত্যা ও লাশ গুমের অভিযোগে করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করে পুলিশ।
এ সময় পঞ্চগড়ের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নাহিদ আকতার জুলিয়েট তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এর পরপরই তাকে আদালত থেকে কারাগারে নেয়া হয়। এর আগে গত বুধবার রাতে নীলফামারী সদর উপজেলার ধনীপাড়া এলাকা থেকে আবু মো. নোমান হাসানকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ জানায়, পঞ্চগড় সদর থানা পুলিশের সহায়তায় তাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। পরে র্যাব তাকে নীলফামারী সদর থানায় হস্তান্তর করে। সেখান থেকে পঞ্চগড় সদর থানা পুলিশ নোমান হাসানকে পঞ্চগড়ে নিয়ে এসে আদালতে হাজির করে। তার বিরুদ্ধে ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, জবর দখলসহ নানা সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িয়ে থাকার অভিযোগ রয়েছে।
মামলার সূত্রে জানা গেছে, রিকশাচালক আল আমিন পঞ্চগড় পৌরসভার দরজিপাড়া এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। গত ৫ আগস্ট সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে পঞ্চগড় জেলা শহরের শেরে বাংলা পার্কে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে অংশ নেন। সেদিন দুপুরে দুই তরুণের সঙ্গে বাড়িতে ফেরার পথে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান সাকিবের বাড়ির সামনে আল আমিনকে আটক করেন মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কয়েকজন। পরে আওয়ামী লীগের নেতাদের নির্দেশে তার ওপর হামলা চালানো হয়। এ সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আল আমিনকে এলোপাতাড়ি আঘাত করা হয়। তারপর তাকে টেনেহিঁচড়ে ছাত্রলীগ নেতা সাদমান সাকিবের বাড়ির দিকে নিয়ে যাওয়া হয়। আল আমিনের সঙ্গে থাকা রায়হানুল ইসলাম ও সুজন ইসলাম নামের দুই তরুণও আহত হন। তবে তাদের দুজনকে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করলেও আল আমিনকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। ১৪ আগস্ট আল আমিনের পরিবারের পক্ষ থেকে পঞ্চগড় সদর থানায় সাধারণ ডায়েরিও করা হয়।
এ ঘটনায় গত ১০ নভেম্বর রিকশাচালক আল আমিনের বাবা বাদী হয়ে পঞ্চগড় সদর থানায় হত্যা ও লাশ গুমের মামলাটি করেন। সাবেক রেলমন্ত্রী ও পঞ্চগড়-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নূরুল ইসলামসহ ১৯ জনকে এ মামলার আসামি করা হয়। এ ছাড়া মামলায় অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে ১৫০ জনকে।
এ মামলার এজাহারনামীয় ৫নং আসামি নোমান। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে আরও তিনটি মামলা আছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তিনি পঞ্চগড় পৌরসভার ডোরোপাড়া এলাকার প্রয়াত মোশারফ হোসেনের ছেলে।
পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস এম মাসুদ পারভেজ জানান, রিকশাচালক আল আমিন হত্যা ও লাশ গুমের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে নোমান হাসানকে আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। তার বিরুদ্ধে রিমান্ড আবেদন করা হবে।
এদিকে, গ্রেপ্তার নোমান হাসানকে কারাগারে নেয়ার সময় আদালত চত্বরে জড়ো হওয়া ছাত্রদল-যুবদলের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করে তার রিমান্ড ও বিচার দাবি করেন।
আপনার মতামত লিখুন :