নূরুজ্জামান ফারুকী হবিগঞ্জ থেকে ॥
প্রবাসী এক মহিলার সাথে প্রেমের অভিনয় করে প্রায় ২ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় সুনামগঞ্জের দোয়ারা বাজার থানার রহিমের পাড়া এলাকার আলী আমজদ নামের এক ইমাম। তাকে শায়েস্তা করতে মসজিদে চাকুরীর কথা বলে নবীগঞ্জের আউশকান্দি এলাকায় এনে শুক্রবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে অপহরণ করে নির্ঝন নিয়ে যাওয়ার পথে স্থানীয় জনতার হাতে আটক হয় অপহরণকারী রায়হান মিয়া (৩০) কে। পরে স্থানীয় জনতা রায়হানসহ অপহরণের শিকার ওই ইমাম এবং তাদের ব্যবহৃত গাড়ীসহ পুলিশে সোর্পদ করেছেন। অপর অপহরণকারীরা পালিয়ে যায়। এ ব্যাপারে ইমাম আলী আমজদ বাদী হয়ে ঘটনার সাথে জড়িত রায়হান মিয়া (৩০), বুলবুল আহমদ (৩৫) নাম উল্লেখ্য করে অজ্ঞাতনামা ২/৩ জনকে আসামী করে নবীগঞ্জ থানায় মামলা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সুনামগঞ্জ জেলার দোয়ারাবাজার থানার রহিমের পাড়া এলাকার মৃত জালাল উদ্দিনের ছেলে মাওঃ আলী আমজদ দীর্ঘদিন ধরে বি-বাড়িয়া জেলার বিজয় নগর এলাকায় একটি মসজিদে ইমামতি করার সুযোগে ওই এলাকার জনৈক মহিলার সাথে পরিচয় হয়। ওই মহিলা প্রবাসে চলে গেলে মোবাইল ফোনে তাদের ফোনালাপ চলতো। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। সেই সুবাধে প্রবাস থেকে ওই মহিলা ইমাম আলী আমজদকে টাকা পয়সা পাটাতো। তাদের সম্পর্ক গভীর পর্যায়ে গেলে ভিডিও কলে সেক্সওয়াল চিত্রে ধারন করে। এই সব ডকুমেন্ট সংরক্ষন করেন ইমাম আলী আমজদ। এক পর্যায়ে ইমাম বিজয় নগর এলাকা থেকে চাকুরী ছেড়ে নিজ এলাকায় এসে অন্যত্র বিয়ে করেন ওই ইমাম। খবর পেয়ে প্রবাসী মহিলা তার টাকা ফেরৎ দাবী করে। ফলে আলী আমজদ ওই প্রবাসী মহিলার আত্মীয় স্বজনের কাছে তার নগ্ন ছবি দেখাবে বলে হুমকী দিয়ে ওই প্রবাসীর মহিলার কাছে মোটা অংকের টাকা দাবী করে ওই ইমাম। এরই মধ্যে ওই মহিলার সাথে মোবাইল নেটওয়ার্কে পরিচয় হয় নবীগঞ্জের ফুটারচর গ্রামের আহমদ মিয়ার পুত্র রায়হান মিয়ার। সেই সুবাধে ওই মহিলা বিস্তারিত রায়হান জানায়। রায়হান মিয়া ওই মহিলার প্রেমের মুহে ওই ইমাম আলী আমজদের নিকট থেকে তার মোবাইল উদ্ধার করে মহিলার নগ্ন ছবি ডিলেট করার ফন্দি আটেঁ। রায়হান মিয়া মাওঃ আলী আমজদের সাথে ফোনে যোগাযোগ করে তাদের গ্রামের মসজিদে ভাল বেতনে ইমাম নিয়োগ দেয়ার কথা বলে তাকে নবীগঞ্জ আসতে বলে। ইমাম আলী আমজদ মসজিদে চাকুরী করার সুযোগ পেতে রায়হানের ডাকে সারা দিতে শুক্রবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে নবীগঞ্জের আউশকান্দিতে আসে। পুর্ব থেকে দাড়িয়ে থাকা রায়হান ওই ইমামকে রিসিভ করে মিঠাপুর এলাকার বুলবুল আহমদসহ অজ্ঞাতনামা ২/৩ জনকে সাথে নিয়ে একটি প্রাইভেট কার ভাড়া করে পানিউন্দা বাজারের দিকে রওয়ানা দেয়। সেখানে গিয়ে নির্ঝন পাহাড়ের দিকে গাড়ী নিয়ে যেতে চাইলে ওই ইমাম বিষয়টি আচঁ করতে পেরে চলন্ত গাড়ী থেকে লাফ দেয়ার চেষ্টা করলে চালক গাড়ী দাড় করায়। এ সময় তাদের বাকবিতন্ডায় স্থানীয় লোকজন জড়ো হলে গাড়ীসহ রায়হান ও ইমাম আলী আমজদকে পুলিশে সোর্পদ করেন। পুলিশ ওই ইমামের মোবাইল জব্দ করে ওই প্রবাসীর মহিলার বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি নগ্ন ছবি দেখতে পায়। শেষ পর্যন্ত ইমাম আলী আমজদ বাদী হয়ে ৩৬৪/৩৬৫ ধারায় খুন করা অথবা অবৈধ অবরোধ করার উদ্দেশ্যে মানব অপহরণ করার অপরাধে রায়হান মিয়া, বুলবুল আহমদ সহ অজ্ঞাতনামা ২/৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। ঘটনাটি এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। শনিবার সকালে রায়হান মিয়া জেল হাজতে প্রেরন করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন