বুধবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে এই সুপারিশ করা হয়।
বিভিন্ন দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত অসহায়, দুঃস্থ ও গরিব মানুষের মধ্যে মানবিক সহায়তা কর্মসূচির আওতায় দেশের সব জেলার জেলা প্রশাসক বরাবর জিআর চাল এবং টাকার থোক বরাদ্দ দেয় সরকার।
বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি এ বি তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, “কমিটির সদস্যদের অনেকে বলেছেন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা শতভাগ প্রতিপালন করা হচ্ছে না। এ জন্য তারা চিঠি বা নির্দেশনার একটি অনুলিপি স্থানীয় সংসদ সদস্যদেরও পাঠাতে বলেছেন।
“সংসদ সদস্যরা জনপ্রতিনিধি, এলাকায় কার কী অবস্থা এটা সরকারি কর্মকর্তাদের চেয়ে জনপ্রতিনিধিরা ভাল জানেন। এজন্য সবার সমন্বয়ে কাজ করতে বলেছে কমিটি, যাতে কাজটি গতিশীল হয় এবং প্রকৃত প্রাপ্য ব্যক্তিরা সহায়তা পান।”
জিআর বরাদ্দে সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কোনো অনিয়মের অভিযোগ পেয়েছেন কি না- এ প্রশ্নের জবাবে সাবেক মন্ত্রী এবি তাজুল বলেন, “বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তারা (সংসদ সদস্যরা) দেখেছেন, গৃহহীনদের দেওয়া ঘর অনেক জায়গায় ভেঙে পড়েছে। নদীর পাড়, পুকুর পার, নিচু জমিতে ঘর করা হয়েছে। অনেক জায়গায় নিচ থেকে মাটি সরে গেছে। এতে সরকারেরও ক্ষতি হচ্ছে। এটা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। কাজ যেন সময় নিয়ে টেকসই হয় সেটা তারা বলেছেন। সেসঙ্গে গৃহহীনদের ঘর নির্মাণে বরাদ্দ বাড়ানোর কথাও তারা বলেছেন।”
বৈঠকের অংশ নেওয়া এক সদস্য বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, বৈঠকে একাধিক সংসদ সদস্য অভিযোগ করেন, সরকারি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে ত্রাণ সহায়তার চাল ও টাকা (জিআর চাল ও ক্যাশ) বিতরণ করা হয়, এই তালিকা করার ক্ষেত্রে অনেক জায়গায় স্থানীয় সাংসদদের মতামত নেওয়া হয় না বা জানানো হয় না। এ নিয়ে সদস্যদের কেউ কেউ বৈঠকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। মুজিববর্ষ উপলক্ষে গৃহহীনদের ঘর নির্মাণ প্রকল্পে সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা।
এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত বৈঠকেও এই কমিটি একই সুপারিশ করেছিল।
বুধবারের বৈঠকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় জানায়, জিআর বরাদ্দের ক্ষেত্রে মানবিক সহায়তা কর্মসূচি বাস্তবায়ন নির্দেশিকা ২০১২-২০১৩ কার্যকর আছে। এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন কমিটিতে সংসদ সদস্যদের উপদেষ্টা রাখা হয়েছে। জেলা প্রশাসকদের অনুকূলে জিআর বরাদ্দ দেওয়ার ক্ষেত্রে মানবিক সহায়তা কর্মসূচি বাস্তবায়ন নির্দেশিকা অনুসর করে বণ্টন ও বিতরণ নিশ্চিত করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়ে থাকে। তবে মন্ত্রণালয়ের এই বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত জানান একাধিক সদস্য।
এ বি তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটি সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ, জুয়েল আরেং, মজিবুর রহমান চৌধুরী, মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী ও কাজী কানিজ সুলতানা অংশ নেন।
মন্তব্য করুন