নুরুজ্জামান ফারুকী হবিগঞ্জ থেকে।
কোটা সংস্কার ছাত্র আন্দোলনের ডাকে হবিগঞ্জে কমপ্লিট শাটডাউনে অংশ নেয়া শিক্ষার্থী, ছাত্রদল ও পুলিশের মধ্যে সকাল থেকেই বিভিন্ন পয়েন্টে সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে হবিগঞ্জ শহর পুরো রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) দুপুর ১২টা থেকে বিকেল পর্যন্ত শহরের মুসলিম কোয়ার্টার থেকে সদর মডেল থানা, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সামন পর্যন্ত সংঘর্ষ চলছিল।
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৫জনক আটক করতে দেখা গেছে। এখন পর্যন্ত সংঘর্ষে পুলিশসহ শতাধিক আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়- প্রায় ১২শ’ রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করেছে পুলিশ। হবিগঞ্জ ডিবি পুলিশের সেকেন্ড অফিসার রফিকুল ইসলামসহ বেশ কয়েকজন পুলিশ আহত হয়েছেন।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়-সকাল ১২ টার দিকে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার সামনে দিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের একটি মিছিল যাবার সময় পুলিশ ধাওয়া দিলে সংঘর্ষ শুরু হয়। এসময় শিক্ষার্থীরাও ইট-পাটকেল ছুঁড়ে পুলিশের সাথে সংঘর্ষে জড়ায়। এসময় পুলিশ মূহুর্মুহু গুলি ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। সংঘর্ষে পুলিশ ও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এতে সাংবাদিকসহ উভয়পক্ষের কয়েকজন আহত হন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়- শিক্ষার্থীরা হবিগঞ্জ শহরে কয়েকটি গাড়ি ভাংচুর করেন। এছাড়াও ঝেলা প্রশাসকের কার্যালয়, নার্সিং ইন্সটিটিউট, সিভিল সার্জনের বাসভবনে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়- হবিগঞ্জ সদর সার্কেলের এএসপি খলিলুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশ শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করছে। সাঁজোয়া যান এপিবিএন সবার সামনে রয়েছে। একপর্যায়ে পুলিশের সাথে বিজিবি ও র্যাব যোগ দিয়েছে।
এদিকে সকাল থেকেই বিচ্ছিন্নভাবে শহরের বেশ কয়েকটি স্থানে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সকাল ১০টায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের পূর্ব নির্ধারিত বিক্ষোভের স্থান শহরের টাউন হলের সামনে মানববন্ধন শুরু করে হবিগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমাণ্ড। পরে সাধারণ শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে তারা সরে যেতে বাধ্য হন মানববন্ধনে অংশ নেয়া লোকজন। এরপর থেকে টাউন হলে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শত-শত শিক্ষার্থী জড়ো হয়ে কোটাবিরোধী শ্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মানববন্ধনের পাশে খাঁজা গার্ডেন সিটির সামনে অবস্থান নেন। এ সময় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে পুলিশ দু‘পক্ষের মাঝে অবস্থান নেন।
পরে সাধারণ শিক্ষার্থীরা পুলিশের ব্যারিকেট ভেঙ্গে মিছিল করে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে হবিগঞ্জ শহরের পুরো রাস্তায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দেখা যায়।
মন্তব্য করুন