আব্দুল জলিল,যশোর প্রতিনিধিঃ জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী মুজিব বর্ষের উপহার হিসেবে ঢাকার বাইরে প্রথম যশোরে পার্সোনালাইজেশন সেল এর মাধ্যমে ই-পাসপোর্ট প্রিন্টিং চালু হলো।
গতকাল যশোর পাসপোর্ট অফিসে এ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আইয়ূব চৌধুরী, এসজিপি, পিবিজিএমএস, এনডিসি, পিএসসি। ঢাকার বাইরে এই প্রথম খুলনা বিভাগের ১০ জেলার মানুষ যশোরে ই-পাসপোর্ট প্রিন্ট দিতে পারবে।
পাশাপাশি এটি ঢাকার পার্সোনালাইজেশন সেন্টারের ব্যাকআপ হিসাবে কাজ করবে। চূড়ান্তভাবে পাসপোর্ট অধিদপ্তর দৈনিক ২৫ হাজার ই-পাসপোর্ট প্রিন্টি দিতে পারবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আইয়ূব চৌধূরী বলেছেন, নতুন করে পাসপোর্ট করতে হলে সঠিত তথ্য দিতে হবে। কর্তৃপরে ভুল না হলে পাসপোর্টের কোন তথ্য সংশোধন করা হবে না।
খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় ই-পাসপোর্ট সেবা যশোর থেকে সমন্বয় করা হবে। অনলাইনে আবেদন করার পরে ২০ থেকে ২৫ দিনের মধ্যেই ই-পাসপোর্ট পাওয়া যাবে। ই-পাসপোর্টের সকল তথ্য স্থায়ীভাবে নিরাপদে রাখা যাবে। ই-পাসপোর্ট থেকে ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে ব্যক্তির সকল তথ্য বের করা সম্ভব হবে। ই-পাসপোর্ট থাকলে বিদেশে কোন দূর্ভোগে পড়তে হবে না। যশোর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্বয়ংক্রিয় বর্ডার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইদুর রহমান খান। প্রধান অতিথি মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আইয়ূব চৌধূরী আরো বলেন, ই-পাসপোর্টে ফিঙ্গার ও মুখমন্ডলের ছাপ থাকবে। কোন ভাবেই পাসপোর্ট নকল করা যাবে না।
তাই ই-পাসপোর্ট আবেদন করার সময় সকল তথ্য যাচাই-বাছাই করে পূরণ করতে হবে। বয়স, নাম, ঠিকানা, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, জন্ম নিবন্ধন নম্বর সঠিক ভাবে পূরণ করতে হবে। তিনি আরও বলেন, যশোর পাসপোর্ট অফিসের কোন কর্মকর্তা যদি দূর্নীতির সাথে জড়িত থাকে তাহলে প্রমানসহ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। স্বাগত বক্তব্য রাখেন উপ প্রকল্প পরিচালক লেফট্যানেন্ট কর্ণেল সৈয়দ নাজমুর রহমান।
বক্তব্য রাখেন বিশেষ অতিথি জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান ও পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার। জেলা প্রশাসক বলেন, ঢাকার বাইরে প্রথম যশোরে ই-পাসপোর্ট প্রিন্টিং ব্যবস্থা চালু হলো। যা যশোরবাসীর জন্য অত্যান্ত সুখবর। আমার প্রশাসন এ কার্যক্রমে সর্বাত্বক সহযোগীতা করবে। এসময় পুলিশ সুপার বলেন, ই-পাসপোর্ট চালু হলে দেশে জঙ্গিবাদের পাশাপাশি আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রনে থাকবে। ই-পাসপোর্ট কেউ নকল করতে পারবে না। আরও বক্তব্য রাখেন জার্মানের টেকনিক্যাল প্রজেক্টের পরিচালক পার আলেকজান্ডার কোমারেক, প্রেসকাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, যশোর পাসপোর্ট অফিসের উপ পরিচালক মোহাম্মদ নূরুল হুদা। জাহিদ হাসান টুকুন তার বক্তব্যে পাসপোর্ট নিয়ে জনসাধারনের ভোগান্তি উল্লেখ করে বলেন, পাসপোর্ট প্রদানের নির্ধারিত তারিখ পার হলেও মানুষ তাদের পাসপোর্ট হাতে পায়নি। দিনের পর দিন এমনকি মাসের পর মাস তাদের অপেক্ষা করতে হয়েছে।
এবার হয়ত মানুষের ভোগান্তির পরিসমাপ্তি হবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মৌসুমী ইসলাম, মেহেরিস ইসলাম, স্বপ্না ও আজিজুর রহমানের ই-পাসপোর্ট বিতরণ করা হয়। পাসপোর্ট অফিস সূত্র জানায়, ২০২০ সালের জুন মাস নাগাদ দেশে মেশিন রিডেবল পাসপোর্টের কার্যক্রম শেষ হয়েছে। এরপর দেশ ই-পাসপোর্টের যুগে প্রবেশ করে। বিশ্বের ১২০টি দেশে বর্তমানে ইলেক্ট্রনিক্স পাসপোর্টের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ই-পাসপোর্ট ও স্বয়ংক্রিয় বর্ডার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের আওতায় ২০২০ সালের ২৮ জুন যশোর আঞ্চলিক অফিসে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। এরপর ঢাকা থেকে পাসপোর্ট ছেপে যশোরে পাঠানো হতো।
এরপর যশোর অফিস সেগুলো বিলি করতো। কিন্তু এবার ঢাকার বাইরে যশোর থেকেও ছাপা হবে। এর মাধ্যমে খুলনা বিভাগের ১০ জেলার গ্রাহকদের অল্প সময়ের মধ্যে ই-পাসপোর্ট পৌঁছে দেয়া সম্ভব হবে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রকল্প পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইদুর রহমান খান।
মন্তব্য করুন