
কুলাউড়া প্রতিনিধি
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার হাজীপুর ইউনিয়নের দাউদপুর গ্রামের ইমানি মিয়ার ছেলে আব্দুল আহাদ (৪৫) নিখোঁজ হওয়ার ৬ বছর পর বুধবার (২৯ অক্টোবর) ফেনী জেলার ছাগলনাইয়া উপজেলা থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনাটি মুহুর্তের মাঝে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। প্রথমে অজ্ঞাত হিসেবে ধরে নিলেও পরবর্তীতে সেখানকার পুলিশ মরদেহের পকেটে থাকা একটি ব্যাংক চেকের মাধ্যমে তার লাশ সনাক্ত করে। পরে পরিবারের লোকজন লাশ আনতে ফেনী পৌঁছেছেন।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, আব্দুল আহাদ একসময় সিলেটের ব্রিটানিকা উইমেন্স কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক ছিলেন। পরবর্তীতে সিলেট বিমানবন্দরে কাস্টমস্রে অডিটর পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে চাকুরি করেন। পরে একই পদে ঢাকা হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর ও চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে চাকুরি করেন। চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে দায়িত্বপালনরত অবস্থায় ২০১৯ সালের পহেলা মে হঠাৎ তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পরে অন্য একটি নাম্বার থেকে আহাদকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার ফোন আসে। মুক্তিপণ হিসেবে বিকাশ নাম্বারে ২ লক্ষ টাকা পাঠালে তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে। অপহরণকারীদের দাবী অনুযায়ী ২ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ পাঠানো হয়। পরে তাদের নাম্বারে যোগাযোগ করা হলে মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। অন্যদিকে আব্দুল আহাদের সাথেও আর যোগাযোগ করা যায়নি। তখন পরিবারের পক্ষ থেকে কুলাউড়া থানায় নিখোঁজের জিডি করা হয়। এরপর ৬ বছর পার হলেও আর তার খোঁজ মেলেনি। বুধবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আব্দুল আহাদের লাশ পাওয়ার কথা তারা প্রথমে জানেন।
জানা গেছে, আব্দুল আহাদের দুই কন্যা সন্তান রয়েছে। ছোট মেয়ে গর্ভে থাকাবস্থায় তিনি নিখোঁজ হয়েছিলেন। আর ছেলেকে খোঁজে না পাওয়ার আর্তনাদে মা-বাবা দুজনই মারা গেছেন। আব্দুল আহাদের মৃত্যুকে রহস্যজনক বলে দাবী করছেন পরিবারের সদস্যরা।
এদিকে ছাগলনাইয়া পুলিশের বরাত দিয়ে পরিবারের লোকজন জানান, বুধবার (২৯ অক্টোবর) সেখানকার উপজেলা হাসপাতালের সামনে অজ্ঞাত এক ব্যক্তিকে অজ্ঞান অবস্থায় পেয়ে উদ্ধার করে স্থানীয় লোকজন হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নিয়ে যান। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। খবর পেয়ে ছাগলনাইয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল বাশার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান। এসময় মরদেহ শনাক্ত করতে পুলিশ তল্লাশি চালিয়ে মৃত ব্যক্তির পকেটে উত্তরা ব্যাংক ফেনীর বিরিঞ্চি শাখার একটি চেক পান। ব্যাংক হিসাবের নাম আব্দুল আহাদ দেখে পুলিশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে হিসাব নম্বর জানায়। সেখান থেকেই পুলিশ আব্দুল আহাদের পরিচয় নিশ্চিত করে।
ছাগলনাইয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল আহাদ মুঠোফোনে জানান, নিহতের পকেটে পাওয়া উত্তরা ব্যাংকের একটি চেকের হিসোব নাম্বারের মাধ্যমে ব্যাংক কর্মকর্তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী আব্দুল আহাদের লাশ শনাক্ত করা হয়েছে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ফেনী হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
নিহতের বোন নাঈমা নাসরিন মনি জানান, আব্দুল আহাদের লাশ নিয়ে আসা হচ্ছে। শুক্রবার তাকে দাফন করা হবে।
 
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                        
আপনার মতামত লিখুন :