হবিগঞ্জে দেশি পদ্ধতিতে গরু মোটা-তাজা করণে ব্যস্ত খামারিরা
দ্যা সিলেট পোস্ট
প্রকাশের সময় : মে ১৭, ২০২৫, ৭:৫১ অপরাহ্ন /
০
নুরুজ্জামান ফারুকী হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
কোরবানির ঈদ সামনে রেখে হবিগঞ্জে গরুর খামারগুলোতে চলছে দেশি পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজাকরণ। নিরাপদ গো-মাংস নিশ্চিতকরণে জেলায় ছোট-বড় ও পারিবারিক প্রায় ৭ হাজার গরুর খামার গড়ে উঠেছে। খামারগুলোতে কোনো নিষিদ্ধ ট্যাবলেট ও ইঞ্জেকশন ছাড়াই গরু মোটাতাজাকরণের কাজ চলছে।
এদিকে, কোরবানীর গরুর বাজারে দেশি গরুর চাহিদা ক্রেতাদের কাছে বেশি থাকলেও ভারতীয় গরুর আসার শঙ্কায় রয়েছেন খামারীরা। যে কারনে দেশী গরুর প্রকৃত দাম নিয়ে তাদের মধ্যে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। জেলা প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তর অফিস জানায়, জেলায় ৯টি উপজেলায় প্রায় ৭ হাজার ২শ ৯৯টি ছোট-বড় গরুর খামার রয়েছে। এসব খামারে শেষ সময়ে চলছে গরু মোটাতাজাকরণের কাজ। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত খামারে নিয়োজিত শ্রমিকরা দেশি পদ্ধতিতে গরুর যত্ন নিতে তৎপর রয়েছেন। হাওরের সবুজ ঘাস, খইল, ভুষি, খড় কচুরিপানাসহ দেশি প্রযুক্তির খাবার দিয়ে গরু মোটাতাজাকরণ করছেন খামারিরা। এ বছর জেলায় কোরবানির চাহিদা রয়েছে প্রায় ৭০ হাজার ৫শ ৮৩টি তবে মজুদ রয়েছে ৭১ হাজার ৭শ ৪৬টি গরু। যা খামারগুলো ও বিভিন্ন বাড়িতে কৃষকরা কোরবানীর জন্য প্রস্তুত করেছেন। এতে এ বছর জেলায় পশু কোরবানিতে সংকট পড়বে না।
খামারীদের দাবী, কিছুদিন পর বাজারে ওঠনো হবে গরুগুলো। দেশি পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজাকরণ করার কারণে দেশি গরুর চাহিদা ক্রেতাদের কাছে বেশি। তবে গো-খাদ্যের দাম বাড়ায়, গরু পালন খরচ বেড়েছে। আগের তুলনায় যে গরুটি ১ থেকে দেড় লাখ টাকা বিক্রি করা যেত। একই ওজনের গরু গুলো দেড় থেকে ২ লাখ টাকায় বিক্রি করতে হবে। তা না হলে লোকশান গুনতে হবে। এছাড়া ভারতীয় গরু দেশে বাজার গুলোতে প্রবেশ করায় দেশি গরুর দাম কমে যায়। তাদের দাবী, ভারতীয় গরু প্রবেশে সরকার যেন তৎপর ভ‚মিকা পালন করে।
এদিকে, বানিয়াচং উপজেলার ভবানীপুর এলাকার রতœা বাজার সংলগ্ন রফিক ডেইরী ফার্র্মে দেশী প্রদ্ধতিতে পালন করা হয়েছে কালো রংয়ের বাহাদুর ও রবি নামে দুটি ফিজিয়ান ও শাহিওয়াল জাতের দুটি ষাড়। ওই দুটি ষাড়ের ওজন ১০ থেকে ১২ মন। কোরবানী বাজারে ষাড় দুটি তুলার শেষ প্রস্তুতি নিয়েছেন খামারী রফিক মিয়া। যার দাম হাঁকা হয়েছে ৫ থেকে ৪ লাখ টাকা।
শহরতলীর উমেদ নগরের সাব্বির ডেইরি ফার্মের স্বত্বাধিকারী মোঃ সাব্বির বলেন, ‘আমি প্রতি বছর কোরবানীর জন্য গরু লালন পালন করি। আমরা সম্পূর্ণ দেশি পদ্ধতিতে গরুগুলো কোরবানির জন্য মোটাতাজাকরণ করছি। গরুগুলোকে জার্মানি ঘাস, খইল ও হাওরের সবুজ ঘাস খাইয়ে প্রস্তুত করা হচ্ছে। আমার খামারে ফিজিয়ান, শাহিওয়ালসহ কয়েকজাতের গরু রয়েছে। ইতিমধ্যে কয়েকটি বিক্রি করা হয়েছে। ৬ থেকে ৭শ কেজি ওজনের কয়েকটি গরু রয়েছে। এগুলো কোরবানীর বাজারে তুলা হবে।
প্রান্তিক খামারী শফিক মিয়া বলেন, ‘আমাদের গরুগুলোকে দেশি খাবার দেওয়ার কারণে এর চাহিদা অন্য গরুর চেয়ে বেশি থাকে। যে কারণে ক্রেতাই সরাসরি খামারে এসে তাদের পছন্দের গরু ক্রয় করে নিয়ে যায় কোরবানির জন্য। বাজারে ছোট ও মাঝারী গরুর অনেক চাহিদা রয়েছে। গরুর সঠিক মূল্য পেলে এসব বিক্রি করা হবে’।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ আব্দুল কাদের বলেন, ‘সার্বক্ষণিক জেলার খামারগুলোতে নজরদারি করা হচ্ছে। ভারতীয় গরু দেশে প্রবেশের কোন সম্ভাবনা নেই। এ বিষয়ে সরকার তৎপর রয়েছে। এ বছর জেলায় চাহিদার চেয়ে বেশি গরু কোরবানীর জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। এতে করে বাহির থেকে গরু আনার প্রয়োজন নেই’।
আপনার মতামত লিখুন :