দেবীগঞ্জে বিদ্যালয়ের সভাপতিকে জোরপূর্বক পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর নেয়ার অভিযোগ 


দ্যা সিলেট পোস্ট প্রকাশের সময় : মার্চ ১১, ২০২৫, ১২:২৩ পূর্বাহ্ন /
দেবীগঞ্জে বিদ্যালয়ের সভাপতিকে জোরপূর্বক পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর নেয়ার অভিযোগ 

পঞ্চগড়  জেলা  প্রতিনিধি 

পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার কালীগঞ্জ সুকাতু প্রধান উচ্চ বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতিকে জোরপূর্বক পদত্যাগ পত্রে স্বাক্ষর নেয়ার অভিযোগ উঠেছে ওই এলাকার  বিএনপি ও যুবদলের এক অংশের  নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ উঠেছে ওই এডহক কমিটির সভাপতিকে তার দোকান থেকে কৌশলে ইউনিয়ন যুবদলের অফিসে ডেকে আনা হয়। সেখানে পূর্ব থেকেই ইউনিয়ন বিএনপি ও যুবদলের কমিটির  নেতাকর্মীরা সেখানে অবস্থান নেন। সেখানে পৌছা মাত্রই পূর্বেই কম্পিউটারে টাইপ করা পদত্যাগ পত্রে তার স্বাক্ষর নেন। এর আগেও তাকে পদত্যাগ করার জন্য মৌখিক ভাবে চাপ দিয়ে ছিলেন তারা।

জানা যায়, বিদ্যালয়ের পূর্বের কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ন হওয়ায় দেবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পদাধিকার বলে সভাপতির দায়িত্ব গ্রহন করেন। তারপর বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গত বছরের ১০ ডিসেম্বর দিনাজপুর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডে এডহক কমিটি গঠনের জন্য আবেদন করেন।

আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এডহক কমিটি গঠনের জন্য শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক শাখার বিদ্যালয় পরিদর্শক আবু হেনা মোস্তফা কামাল অনুমতি দেন।

এর পরিপ্রেক্ষিতে কালীগঞ্জ সুকাতু প্রধান উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মনোরঞ্জন রায় পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক বরাবরে ২৬ ডিসেম্বর প্রথম সিরিয়ালে দন্ডপাল ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি মমিনুল ইসলাম মমিন, দ্বিতীয় সিরিয়ালে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির দন্ডপাল ইউনিয়ন শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হান্নান তৃতীয় সিরিয়ালে দন্ডপাল ইউনিয়ন বিএনপির সহ সভাপতি আফাজ উদ্দিনের নাম প্রেরন করেন।

এরপর জেলা প্রশাসক ওই তিন জন ব্যক্তির নাম অনুমোদন দিয়ে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মনোরঞ্জন রায়ের নিকট প্রেরন করেন। পরে ওই বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মনোরঞ্জন রায় ওই তালিকা ৫ জানুয়ারী শিক্ষা বোর্ডে প্রেরন করে। পরবর্তীতে ১০ জানুয়ারী প্রেরন করা নামের তালিকার প্রথম সিরিয়ালে থাকা দন্ডপাল ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি মমিনুল ইসলাম মমিনকে এডহক কমিটির সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত করে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরন করে।

এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে দ্বিতীয় ও তৃতীয় সিরিয়ালে থাকা ব্যক্তি এবং তাদের অনুসারীরা এডহক কমিটির নির্বাচিত সভাপতির উপর ক্ষুদ্ধ হয়ে পড়েন৷ তারা মমিনুল ইসলাম মমিনকে সভাপতি হিসেবে মেনে না নিয়ে তার বিরুদ্ধে অবস্থান নেন৷ তাকে সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করতে বিএনপি ও যুবদলের নেতাকর্মীরা মানসিক চাপ ও হুমকি দিতে থাকেন। ৬ মার্চ রাতে ওই এডহক কমিটির সভাপতি মমিনুল ইসলাম মমিনকে যুবদলের অফিসে ডেকে নিয়ে গৃহবন্দিকে তাকে পদত্যাগ পত্রে স্বাক্ষর করাতে বাধ্য করেন।

ভুক্তভোগী ওই বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি মমিনুল ইসলাম মমিনের মুটোফোনে একাধিক বার ফোন দেয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করার কারনে তার বক্তব্য জানা যায়নি। দন্ডপাল ইউনিয়ন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গোলাপ আজম বলেন, আমি এ বিষয়ে কোন কিছু জানিনা। তবে সে নিজের ইচ্ছায় পদত্যাগ করেছে।

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মনোরঞ্জন রায় বলেন, আমি পদত্যাগ পত্র হাতে পাইনি।