ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ঢাকা- সিলেট ছয় লেন মহাসড়কের ভিত্তিপ্রস্থরের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী


দ্যা সিলেট পোস্ট প্রকাশের সময় : অক্টোবর ২৪, ২০২১, ১০:৪৬ অপরাহ্ন /
ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ঢাকা- সিলেট ছয় লেন মহাসড়কের ভিত্তিপ্রস্থরের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

সিলেট প্রতিনিধিঃ

দীর্ঘ প্রতিক্ষার অবসান ঘটিয়ে ঢাকা-সিলেট ছয়লেন মহাসড়কের উন্নয়ন কাজ ও সিলেট-তামাবিল সড়কের ভিত্তিপ্রস্থরের উদ্বোধন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রোববার ২৪ অক্টোবর সকালে এই দুটি প্রকল্পের উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

বহুল প্রত্যাশিত এই দুটি প্রকল্পের উদ্বোধন উপলক্ষে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় কর্তৃক আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সিলেটবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছয় লেন মহাসড়ক প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে এ অঞ্চলের সঙ্গে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার অভূতপূর্ব উন্নয়ন হবে।
বদলে যাবে এ অঞ্চলের অর্থনীতির চিত্র, গতি পাবে শিল্প ও পর্যটনে। শুধু তাই নয়, চার লেন হয়ে গেলে এ মহাসড়ক দিয়ে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হওয়ারও আশা দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।

আরো পড়ুনঃ উন্নত দেশ হওয়ার স্বপ্নে সড়ক পরিবহনের প্রস্তুতি কতটুকু?

জানা যায়, একনেকে অনুমোদনের প্রায় ৮ মাস পর আলোর মুখ দেখছে সিলেট-ঢাকা চার লেন মহাসড়ক মেঘা প্রকল্পটি। চলতি বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় চূড়ান্ত অনুমোদন মিলে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চার লেন প্রকল্পে’র। ১৬ হাজার ৯১৮ কোটি ৫৮ লাখ টাকা ব্যয়ে অনুমোদিত প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ১৩ হাজার ২৪৪ কোটি ৬৮ লাখ টাকা ঋণ দেবে এশিয়ান ডেভলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি)। বাকি ৩ হাজার ৬৭৪ কোটি টাকা দিবে সরকার।

ঢাকার কাঁচপুর থেকে সিলেটের পীর হবিবুর রহমান চত্বর পর্যন্ত প্রস্তাবিত সড়কটির দৈর্ঘ্য হবে ২০৯ দশমিক ৩২ কিলোমিটার। প্রকল্পটির বাস্তবায়ন করবে সরকারের সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ)। প্রকল্পটি ২০২৬ সালের ডিসেম্বর নাগাদ বাস্তবায়ন করবে সংস্থাটি।ঢাকা-সিলেট চার লেন প্রকল্প নিয়ে কম জল ঘোলা হয়নি।
সড়কটি ছয়লেনে উন্নীত করতে কখনো চীনের টাকায়, কখনো এডিবির টাকায়, আবার কখনো রাষ্ট্রীয় কোষাগারের টাকায় বাস্তবায়নের আলোচনা থাকলেও শেষ পর্যন্ত এডিবির ঋণেই বাস্তবায়ন হচ্ছে প্রকল্পটি। প্রকল্পটিতে মূল সড়কের উভয় পাশে ধীরগতির যান চলাচলের জন্য আলাদা সার্ভিস লেন নির্মিত হবে। বাঁক সরলীকরণসহ অধিকমাত্রার ট্রাফিক বিবেচনায় এনে ৮০ কিলোমিটার গতিবেগ নিশ্চিত করা হবে।

শিল্প ও বাণিজ্যে গতিশীলতা আনতে এশিয়া হাইওয়ে নেটওয়ার্ক, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সাত দেশের জোট ‘বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টি সেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশন (বিমসটেক) করিডোর, দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা (সার্ক) করিডোরসহ আঞ্চলিক সড়ক নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণে চারলেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে সংশ্লিষ্টদের অভিমত।উপ-আঞ্চলিক যোগাযোগ বিশেষ করে ভারত, মিয়ানমার, নেপাল, ভুটান এবং চীনের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য ভৌগলিকভাবে বাংলাদেশ কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে।

এসব বিবেচনায় প্রকল্পটি বিশেষভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। চারলেন বিশিষ্ট মহাসড়কের উভয়পাশে ধীরগতির যান চলাচলের জন্য ৫ দশমিক ৫ মিটার প্রশস্ত করাসহ প্রকল্পের আওতায় সড়ক নির্মাণে অতিরিক্ত ৯৮৬ দশমিক ৪৭ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হবে।

আরো খবরঃ কমলগঞ্জে ব্রিজের সন্নিকটে ও ধলাই নদীর বাঁকে বাঁকে বালু উত্তোলনের হিড়িক

এজন্য মোট ব্যয় হবে চার হাজার ২৭৫ কোটি টাকা। ভূমি অধিগ্রহণে কাঁচপুর থেকে সিলেট পর্যন্ত ইউটিলিটিও স্থানান্তর করা হবে, নির্মাণ করা হবে ৩২১টি আরসিসি কালভার্ট। কালভার্টগুলোর মোট দৈর্ঘ্য হবে প্রায় এক হাজার ৩৮১ মিটার। ছোট-বড় ৭০টি ব্রিজসহ থাকবে ৭টি ফ্লাইওভার/ওভারপাস, ৬টি রেলওয়ে ওভারপাস।

ঢাকা (কাঁচপুর) থেকে সিলেটের মোট দূরত্ব ২২৩ দশমিক ১২৮ কিলোমিটার। এর মধ্যে ১১ দশমিক ৫৬ কিলোমিটার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ থেকে বিশ্বরোড পর্যন্ত। এর উন্নয়ন এলওসির আওতায় বাস্তবায়িত হচ্ছে এবং ২ দশমিক ৩৪ কিলোমিটার দীর্ঘ ভৈরব ব্রিজ বাদ দেওয়া হয়েছে। ফলে প্রস্তাবিত সড়কের মোট দৈর্ঘ্য দাঁড়িয়েছে ২০৯ দশমিক ৩২৮ কিলোমিটার।