নূরুজ্জামান ফারুকী , হবিগঞ্জ থেকে॥ সৌদি ফেরত এক প্রবাসী তরুণীকে গণধর্ষণের অভিযোগে আলী হোসেন (২৮) নামে এক যুবককে নবীগঞ্জ উপজেলা থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৯। গতকাল শুক্রবার (১৫ অক্টোবর) বিকেলে গণমাধ্যমে প্রেরিত র্যাব-৯ এর মিডিয়া অফিসার মাহফুজুর রহমান কর্তৃক স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। র্যাব জানায়- গোপন সংবাদের ভিত্তিতে (১৪ অক্টাবর) গভীর রাতে র্যাব-৯ (ইসলামপুর ক্যাম্প) এর আভিযানিক দল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ সামিউল আলমের নেতৃত্বে হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার কাজীগঞ্জ বাজারস্থ মোঃ দিদারুল ইসলামের বাসায় অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় ওই বাসা থেকে গণধর্ষণ মামলার প্রধান আসামী আলী হোসেন (২৮) কে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাকে জালালাবাদ থানায় হস্তান্তর করা হয়। উল্লেখ্য- মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ধর্ষণের শিকার জনৈক তরুণী সৌদি আরবে ৩ বছর ৮ মাস চাকরি শেষে দেশে ফিরেন। ঘটনার দিন গত (১ অক্টোবর) সকালে তিনি তার সৌদি আরবে থাকাকালীন এক বান্ধবীকে ডাক্তার দেখানোর উদ্দেশ্যে সিলেটের স্টেডিয়াম মার্কেটে বান্ধবীর সাথে দেখা করেন। কাজ শেষে বিকেল আনুমানিক ৫ টার দিকে জগন্নাথপুর উপজেলার নিজ বাড়িতে ফেরার জন্য অপেমান অবস্থায় বাদিনীর পূর্ব পরিচিত মামলার ১ নম্বার আসামী আলী হোসেনের সাথে দেখা হয়। আলী হোসেন বিদেশে লোক পাঠানোর দালালী করেন। বাদিনী সৌদি আরবে যাওয়ার সময় দালালীর কারণে আলী হোসেন বাদিনীর বাড়িতে কয়েক বার যাওয়া আসা করেন। ওই তরুণী জানান, এলাকার পরিচিত লোক আলী হোসেন তাকে বলে তাদের সাথে প্রাইভেট কার আছে। তাদের সাথে তিনি বাড়ি ফিরতে পারবেন। তখন বাদিনী সরল বিশ্বাসে এক নম্বর আসামির দেখানো প্রাইভেট কারে আরোহন করেন। গাড়িতে উঠে বাদিনী আরো ৩ জন যুবককে দেখতে পান। গাড়িতে উঠার পর শহরে অনেক ঘোরাঘুরির পর রাত আনুমানিক ৯ টায় আসামিগন তাকে শহরের পনিটুলা পল্লবী আবাসিক এলাকায় দুই নম্বর আসামি আফরোজ আলীর বাসায় নিয়ে যায়। বাদিনী প্রতিবাদ করলে আসামিগন তার গলায় চাকু ধরিয়ে হত্যা করবে বলে হুমকি দিয়ে বলে তিনি তার মায়ের নিকট থেকে দুই লাখ টাকা চাঁদা এনে দেওয়ার জন্য। না দিলে আসামীরা তাকে মেরে ফেলবে বলে জানায়। তখন বাদিনী তার মায়ের নিকট ফোন দিলে বন্ধ পান। রাতে আসামীগন তাকে মারপিট করে এবং তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে রাতভর পালাক্রমে ধর্ষণ করে। পরদিন ভোরবেলা পালাক্রমে ধর্ষণের কারণে বাদিনী অজ্ঞান হয়ে পড়েন। আসামীগণ তাকে অজ্ঞান অবস্থায় তারাপুর রাগিব আলী চা বাগানে ফেলে যায়।পরবর্তীতে মাজহারুল ইসলাম রুকন নামে এক ব্যক্তি অজ্ঞান অবস্থায় তাকে নিয়ে ওসমানী হাসপাতালে ওসিসিতে ভর্তি করেন। (২ অক্টোবর) তিনি সিলেট ওসমানী হাসপাতালে ওসিসিতে ভর্তি হন এবং (৩ অক্টোবর) একটু সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরে যান। পরে আসামিদের বিস্তারিত ঠিকানা সংগ্রহ করে আত্মীয় স্বজনের সাথে আলাপ আলোচনা করে মামলা দায়ের করেন। মামলার আসামীরা হলেন, আলী হোসেন, আফরোজ আলী, জাহাঙ্গীর আলম ও জুনেদ মিয়া। আলী হোসেন ও জাহাঙ্গীরের বাড়ি জগন্নাথপুর উপজেলার কেশবপুর ও জুনেদ এর বাড়ি ছাতক উপজেলার মঈনপুর গ্রামে। মামলা দায়েরের পরপরই জালালাবাদ থানার পুলিশ মামলার ২য় আসামী আফরোজ আলীকে গ্রেফতার করেন। পরবর্তীতে পুলিশ তাকে দুই দিনের রিমান্ড শেষে গত (৮ অক্টোবর) কারাগারে প্রেরণ করেন।
|
মন্তব্য করুন