জয়গড় ও সত্যের মশাল: সত্য সন্ধানী এক যুবকের রূপক রোমাঞ্চ


দ্যা সিলেট পোস্ট প্রকাশের সময় : ডিসেম্বর ২৬, ২০২৫, ১১:০৪ অপরাহ্ন /
জয়গড় ও সত্যের মশাল: সত্য সন্ধানী এক যুবকের রূপক রোমাঞ্চ

সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার এক নিভৃত কাল্পনিক জনপদ ‘জয়গড়’। আপাতদৃষ্টিতে শান্ত এই জনপদের বুক চিরে দাঁড়িয়ে আছে এক রহস্যময় অরণ্য, যার নাম ‘গোলকধাঁধা’। লোকমুখে প্রচলিত, এই গহীন বনের ওপারে লুকিয়ে আছে এক জাদুকরী দিঘি। সেই দিঘির পবিত্র জল চোখে লাগালেই মানুষের চোখের সামনে থেকে ঘুচে যায় সব মিথ্যার মায়া, উন্মোচিত হয় পরম সত্য।

​এই রোমাঞ্চকর পটভূমিতেই গড়ে উঠেছে গল্পের নায়ক আরাফাত রহমান প্রিন্সের সত্য সন্ধানের দুঃসাহসী যাত্রা। সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছড়িয়ে থাকা মিথ্যার বেড়াজাল ছিন্ন করাই তার মূল লক্ষ্য। তবে এই পথচলা ছিল অত্যন্ত কণ্টকাকীর্ণ।

​যাত্রাপথে তাকে বারবার বাধা দেয় শত শত ‘এঁড়ে বিড়াল’ ও ‘নেড়ে বিড়াল’। এরা মূলত সমাজের সেই সংকীর্ণমনা ও কুচক্রী শ্রেণির প্রতীক, যারা শুভ কাজে অহেতুক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে এবং সত্যের পথকে বিভ্রান্ত করতে চায়।

​গল্পের সবচেয়ে রোমহর্ষক বাঁক আসে যখন প্রিন্সকে পাড়ি দিতে হয় উত্তাল ‘দাড়াইন নদী’। সেখানে জলের নিচে ওত পেতে আছে বিশাল সব ‘রাঘব বোয়াল’ ও ‘হাঙ্গর’। এরা সমাজের সেই সব প্রভাবশালী অপশক্তির প্রতীক, যারা সাধারণ মানুষের অধিকার হরণ করে এবং ক্ষমতার দাপটে সত্যের কণ্ঠরোধ করতে চায়।

​কিন্তু কোনো ভয়, সংশয় বা প্রলোভনই অকুতোভয় প্রিন্সকে দমাতে পারেনি। অদম্য মনোবল নিয়ে নদী ও বনের শত বাধা পেরিয়ে সে শেষ পর্যন্ত পৌঁছায় সেই আকাঙ্ক্ষিত দিঘির পাড়ে। দিঘির জলের স্পর্শে তার চোখের সামনে উন্মোচিত হয় এক নতুন জগৎ। সে মর্মে মর্মে অনুভব করে, সাধারণ মানুষ কীভাবে অদৃশ্য ভয় আর মিথ্যার শিকলে বন্দি হয়ে আছে।

​অবশেষে সেই মায়াবী অন্ধকার ভেদ করে সত্যের মশাল হাতে জয়গড় গ্রামে ফিরে আসে এক অন্যরকম রূপান্তরিত প্রিন্স। তার হাতের সেই জ্বলন্ত মশাল আজ কেবল আলোর উৎস নয়, বরং অন্যায় ও মিথ্যার বিরুদ্ধে এক অবিনাশী প্রতিরোধের শাশ্বত প্রতীক।

লেখক: সাংবাদিক  হাবিবুর রহমান হাবিব

শাল্লা-সুনামগঞ্জ।