হবিগঞ্জে নাশকতা রোধে তৎপর পুলিশ
দ্যা সিলেট পোস্ট
প্রকাশের সময় : নভেম্বর ১৪, ২০২৫, ১২:১১ পূর্বাহ্ন /
০
হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
সারাদেশ জুড়ে বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) আওয়ামী লীগের ঘোষিত ঢাকায় লকডাউন ঘিরে জেলাজুড়ে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। গতকাল বুধবার রাত ১০ টার পর থেকে হবিগঞ্জ শহরসহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় নিরব-নিঃস্তব্ধ হয়ে উঠে পরিবেশ। মানুষের চলাচল না থাকায় জনশুন্য হয়ে পড়েছে রাস্তা-ঘাট। এদিকে, নাশকতা ঠেকাতে তৎপর ভূমিকা পালন করছে পুুলিশ। গতকাল রাতে সদর থানা পুলিশের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। একই সাথে শায়েস্তাগঞ্জ, লাখাই, বাহুবল, নবীগঞ্জ, চুনারুঘাট, মাধবপুর, বানিয়াচং ও আজমিরীঞ্জ থানা পুলিশ মাঠে ছিল।
গতকাল বুধবার রাতে শহরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালায় সদর থানা পুলিশ। রাত ১২ টার পর থেকে সড়কে চলাচলরত জনগনকে জিজ্ঞাসাবাদ ও যানবাহনে তল্লাশিসহ নাশকতা রোধে বিভিন্ন পয়েন্টে দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়। এছাড়া বাহুবল থানা পুলিশ মহাসড়কের বিভিন্নস্থানে যানবাহন আটক করে তল্লাশি চালায়। এর আগে সদর ও চুনারুঘাট থানা পুলিশের যৌথ অভিযানে চুনারুঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক দপ্তর সম্পাদক আবুল কালাম আজাদকে গ্রেফতার করা হয়। একই দিন উবাহাটা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল মান্নানকে গ্রেফতার করে চুনারুঘাট থানা পুলিশ। এছাড়া মঙ্গলবার অভিযানের প্রথম দিনে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও পাইকপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওয়াহেদ আলী এবং গাজীপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ও ইউপি সদস্য সালেক মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। এদিকে, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নবীগঞ্জে নাশকতার অভিযোগে আওয়ামী লীগ নেতা আলী আকবর ও যুবলীগ নেতা আতাউর রহমানকে আটক করে পুলিশ। গতকাল রাত ৮টার সময় গোপলার বাজার থেকে তাদেরকে আটক করা হয়।
এদিকে, নাশকতা প্রতিরোধে মাধবপুর উপজেলা প্রশাসন কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সম্প্রতি খোলা বাজারে জ্বালানি তেল বিক্রির মাধ্যমে নাশকতার আশঙ্কা তৈরি হওয়ায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাঠে নেমেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জাহিদ বিন কাসেম। তিনি গতকাল বুধবার রাত ৮ টায় মাধবপুর থানা পুলিশের একটি দলকে সঙ্গে নিয়ে শহরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানকালে অনুমোদনবিহীনভাবে খোলা বোতলে ডিজেল ও পেট্রোল বিক্রি করার দায়ে দুই জ্বালানি ব্যবসায়ী অজিত পাল ও ধীরেন্দ্র ঘোষকে ৫ হাজার টাকা করে মোট ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। একই সঙ্গে বিপুল পরিমাণ খালি বোতল, প্লাস্টিকের জার ও তেল বিক্রির সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। এ সময় তিনি খোলা বাজারে জ¦ালানি তেল বিক্রি বন্ধের নির্দেশ দেন।
চুনারুঘাট থানার ওসি মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘অপারেশন ক্লিনহার্ট অভিযানের আওতায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। এলাকায় শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে নিয়মিত অভিযান অব্যাহত থাকবে’।
নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ কামরুজ্জামান বলেন, ‘দুুইজনকে আটক করা হয়েছে। তাদের নেতৃত্বে ঢাকা সিলেট মহাসড়কে বড় ধরনের নাশকতার জন্য প্রস্তুতি নেয়া হয়েছিল। নাশকতা রোধে আমরা মাঠে রয়েছি’।
মাধবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ শহিদ উল্যা বলেন, ‘এখন পর্যন্ত মাধবপুর উপজেলায় কোনো ধরনের নাশকতা বা অপ্রিয় ঘটনা ঘটেনি। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বিত তৎপরতায় পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে’।
হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম শাহাবুদ্দিন শাহীন বলেন, ‘আমরা নাশকতা রোধে তৎপর রয়েছি। পুলিশ প্রত্যেকটি স্পটে দায়িত্ব পালন করছে। যানবাহনসহ গুরুত্বপূর্র্ণস্থানে পুলিশের তদারকি অব্যাহত আছে’।
মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদ বিন কাসেম বলেন, ‘বাজারে খোলা বোতলে তেল বিক্রির কারণে অসাধু ব্যক্তিরা সহজেই তা ব্যবহার করে নাশকতা ঘটাতে পারে, যা জননিরাপত্তার জন্য বড় ঝুঁকি। তাই উপজেলা প্রশাসন এই ধরনের বিক্রি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে এবং নিয়মিত নজরদারির আওতায় এনেছে’।
আপনার মতামত লিখুন :