স্টাফ রিপোর্ট
অপরাজনীতিমুক্ত থেকে সম্পূর্ণ নতুন ধারায় রাজনীতি করার ঘোষণা দিয়ে ৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ খ্রিস্টাব্দে আত্মপ্রকাশকৃত দল বাংলাদেশ ঐক্য পার্টি আজ বুধবার (৭ মে ২০২৫) রাজনৈতিক দল নিবন্ধন প্রক্রিয়ার প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার নিকট দলটির সভাপতি লে. কর্ণেল (অব.) আবু ইউসুফ যোবায়ের উল্লাহ, পিএসসি ও দলের মুখপাত্র মুহাম্মদ আবদুর রহীম চৌধুরী স্বাক্ষরিত একটি স্মারকলিপি জমা দেয়।
স্মারকলিপির বিষয়বস্তু নিম্নে তুলে ধরা হলো:
একটি দেশের জনগণ কী পদ্ধতিতে কিংবা কিভাবে নিজেদেরকে পরিচালিত করবে তার নীতিমালার নামই রাজনীতি। তা হতে পারে গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, রাজতন্ত্র কিংবা যে কোনো তন্ত্রমন্ত্র। বহুদলীয় গণতন্ত্রের দেশে একজন নাগরিক যে কোনো রাজনৈতিক দলে অংশগ্রহণ করতে পারে কিংবা একটি দলের নেতৃত্ব গ্রহণ করতে পারে। বাংলাদেশের গণতন্ত্র একটি বহুদলীয় রাজনীতির নীতিমালা অনুসরণ করে। যদিও বাকি সব গণতান্ত্রিক দেশের মত এখানেও মেজর দুইটি দল এবং এক ঝাঁক ছোট দল রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। এরাই নির্বাচনের সময় হয় একা কিংবা নিজেরা জোট বাঁধে কিংবা বড় যে কোনো দলের সাথে জোট বেঁধে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। তৃতীয় বিশ্বের দেশ সমূহে নির্বাচনকে সামনে রেখে যে সকল ব্যক্তি বা দল জোটবদ্ধ হয়, তা প্রায় ক্ষেত্রে ব্যক্তি বা দলীয় স্বার্থ হাসিলের লক্ষেই। তাদের কাছে গণতান্ত্রিক পদ্ধতির মাধ্যমে দেশ ও জাতির উন্নতি মুখ্য নয়, গৌণ। এহেন পরিস্থিতিতে জনগণের কল্যাণ ও গণতান্ত্রিক আশা-আকাঙ্খা কোন পদ্ধতি প্রয়োগের মাধ্যমে আদায় হবে তা বিবেচ্য বিষয়। এরকম বিবেচনা করে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার অনুকূলে নতুন অনেক দল সৃষ্টি হচ্ছে। এ দেশের জঘন্যতম স্বৈরাচারকে ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং এর মাধ্যমে ক্ষমতায় বসানোর জন্য সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ২০০৭ ও ২০০৮, দুই বৎসর ক্ষমতায় ছিল। সে সময় পরিকল্পনার অংশ হিসাবে অবৈধ সেনা সমর্থিত সরকার রাজনৈতিক দল নিবন্ধনকরণ পদ্ধতি চালু করে। দলের ক্ষেত্রে নির্বাচনের জন্য একটা নির্দিষ্ট সময়ে নিবন্ধন বাধ্যতামূলক অথচ স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্ষেত্রে নিবন্ধনের প্রয়োজন নেই। এখানেও বৈষম্য। বৈষম্যমূলক ও অবৈধ এই আইনটি গণতন্ত্রের মূল চেতনার পরিপন্থী। তাছাড়া একটি নির্বাচিত সরকারকে মিলিটারি ক্যূ এর মাধ্যমে বিতারিত করে যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় এসেছিল, তা ছিল একটি অবৈধ সরকার আর সে অবৈধ সরকারই চালু করে এই নিবন্ধন পদ্ধতি। তাই বর্তমান বিপুল জনসমর্থিত ইউনুস সরকারের উচিত হবে নির্বাচন পদ্ধতির সংস্কারের সময় এই নিবন্ধন পদ্ধতি সর্বাগ্রে বাতিল করা। ১/১১ এর কুশীলবদের চালুকৃত অন্যায্য পদ্ধতি বর্তমান জনসমর্থিত সরকারের চালু রাখা উচিত নয়।
১/১১ এর সেনা অভ্যুত্থান ছিল ইতিহাসের এক ভয়ংকর স্বৈরাচার হাসিনাকে ক্ষমতায়নের প্রাথমিক পদক্ষেপ। পরবর্তীতে একটি ভুয়া নির্বাচনের মাধ্যমে হাসিনাকে ক্ষমতায়ন করে সকল কুশীলব বিদেশে পাড়ি জমায়। কারো নিবন্ধন কেড়ে নেয়া কিংবা মন মতো কাউকে নিবন্ধন দিয়ে নিজেদের কূটকৌশল বাস্তবায়ন করার জন্যই মূলত দল নিবন্ধন পদ্ধতি চালু করা হয়।
তফসিল ঘোষণার পূর্ব মুহূর্তে কোনো ব্যক্তি দল গঠনপূর্বক নিবন্ধিত দল সমূহের চেয়ে উল্লেখযোগ্য উপযুক্ততা নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ইচ্ছা পোষণ করলে নিবন্ধিত না থাকার কারণে দেশ উক্ত অপেক্ষাকৃত ভালো সেবা থেকে বঞ্চিত হবে। তাই দেশকে কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে উন্নীত করতে নিবন্ধন প্রক্রিয়া বাতিল করার আবেদন জানাচ্ছি। উল্লেখ্য যে সামগ্রিক মিশন-ভিশনহীন অসৎ প্রার্থীর ছড়াছড়ি রোধে জামানতের টাকা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি করা যেতে পারে ।
আপনার মতামত লিখুন :