মোঃ খাদেমুল ইসলাম,জেলা প্রতিনিধি,পঞ্চগড়:
দেশের উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ারউপজেলার সীমান্ত নদী মহানন্দা নদীতেব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনায় সনাতন সম্প্রদায়ের হরিজনদের ছট পূজা শুরু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (০৭ নভেম্বর) বিকেলে উপজেলার সদর ইউনিয়নের ঈদগাঁহবস্তী এলাকার মহানন্দা নদীর তীরে এই পূজা অনুষ্ঠিত হয়। সূর্যোদয়ের সময় স্নান, পূজা-অর্চনা এবং প্রার্থনার মধ্য দিয়ে শেষ হয় তিন দিনের পূজার আনুষ্ঠানিকতা। মনোবাসনা পূর্ণ, আপদ-বিপদ দূরীকরণ, বিভিন্ন মানত পূরণে এই তিন সম্প্রদায়ের মানুষ ছট ব্রতের মাধ্যমে সূর্য নারায়ণের পূজা করেন তারা। এ পূজায় বিভিন্ন সম্প্রদায়ের হাজার হাজার পুণ্যার্থীর সমাগম ঘটে।
জানা গেছে, দেশ স্বাধীনের আগে ও পরে বাংলাদেশ ভারত দুই দেশের সনাতন ধর্মাবলম্বীরা একই সাথে উদযাপন করতো ছট পুজো। মাঝখানে সীমান্ত আইনের কারণে আটকে যায় একই সাথে উভয়ের দেশের নাগরীকদের এই ছট পুজা পালন। তবে হারিয়ে যায় সীমান্ত থেকে ছুট পুজা পালনের এই দৃশ্য।
ওপারে ভারত, এপারে বাংলাদেশ আর দু দেশকে ভাগ করেছে মহানন্দা নদীর তীরে দু’দেশের নাগরিকরা পালন করছে উৎসবটি। সীমান্ত আইন মেনে বিজিবির পাহাড়ায় তেঁতুলিয়ার সদরের ইউনিয়নের ঈদগাঁহ বস্তী সীমান্তের মহানন্দা নদীতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ছট পূজা। দিনভর চলে ছট পূজোর প্রস্তুতি, আর প্রথম সন্ধ্যা থেকে শুরু হয় আনুষ্ঠানিকতা। পরদিন সূর্য ওঠার সাথে সাথে আবারও শুরু হয় ছুট পূজা। নানা আয়োজনে মধ্যে দিয়ে শেষ হয় পূজা।
শান্তি লাল ও নন্দিনী লাল বলেন,সূর্যকে পূজাকরা হয় বলে এটিকে সূর্য পূজা বলা হয়। এ পূজায় আমরা খুব আনন্দ করি। এ পূজায় তিন দিন উপবাস থাকতে হয়। এখানে ভারতের লোকজন পূজা করে, আমরাও তাদের সাথে এ উৎসবে অংশ নিয়ে আনন্দ উপভোগ করি।
তেঁতুলিয়া সদর ইউনিয়নের সাহেবজোত এলাকার কৃষাণ লাল জানান,আমার বাসা তেতুলিয়ায়। গত ২০-২২ বছর ধরে সূর্যপূজা করে আসছি। আমরা এটাকে ছট পূজা বলে থাকি। ইন্ডিয়া ও বাংলাদেশ মিলেগত সুষ্ঠু ভাবে মহানন্দা নদীর দু’পাড়ে এই পূজা করে যাচ্ছি । বর্তমান বাংলাদেশ সরকারকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। আমরা ঢ়েন আরও সুযোগ-সুবিধা পাই। যাতে পরবর্তীতে আরও ভালোভাবে করতে পারি।
পঞ্চগড় ১৮ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্ণেল জিয়াউল হক জানান, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য উদাহরণ এবং সেই সাক্ষ্য বহন করে আজকের এই পুজা। যেখানে বাংলাদেশের হরিজন পল্লীর সদস্যরা সূর্যপূজা (ছটপূজা) করেছে এবং অপর দিকে ভারতের যারা এই সম্প্রদায়ের সদস্য আছেন তারাও করেছেন। তবে মহাপরিচালক বিজিবির এক অনন্য নির্দেশ হচ্ছে বিজিবি হবে সীমান্তের নিরাপত্তার ও আস্থার প্রতীক। সেই ধারাবাহিকতায় বিজিবি সার্বক্ষণিক
তার দায়িত্ব পালন করছে সীমান্তের জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য,সে যে সম্প্রদায়ের হোক,যে ধর্মেরই হোক। তো আমরা এই অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে শুভকামনা করছি।
মন্তব্য করুন