নজরুল ইসলাম ll
শত ঘাত প্রতিঘাতে বিবর্জিত একটি রাজনৈতিক দলের, একটি রাজনৈতিক পরিবারের, রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত দেশের প্রধানমন্ত্রী ও তার পরিবারের আস্থাভাজন বিশ্বস্ত হওয়া কঠিন কাজ। এখানে কঠিন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়। আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী সেই পরীক্ষায় ইতিমধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছেন এমনটাই মনে হচ্ছে।
নির্বাচনে বিপুল ভাবে জিতলেই একজন নেতা বা নেত্রী মনে করেন যে তিনি যোগ্য, সফল এবং শক্তিশালী। জনপ্রিয় হওয়া আর যোগ্য হওয়া এক কথা নয়। আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর রাজনৈতিক উত্থান গত ২০ বছর ধরে দেখার সুযোগ হয়েছে। তিনি ব্যক্তি স্বার্থে অন্ধ বধির নহে। আত্মবিশ্বাস ও দৃঢ়তার সহিত কাজ করে চলছেন। রাজনীতিতে তৈরি করেছেন নিজস্ব বলয়। দলীয় রাজনীতির পাশাপাশি দলের পক্ষে দায়িত্ব পালন করতে, মানুষের দ্বারে সেবা পৌঁছে দিতে তিনি তৎপর। আত্মবিশ্বাস ও দৃঢ়তার সহিত প্রায়ই বলে থাকেন, দল আমাকে যে দায়িত্ব দেবে সে দায়িত্ব পালন করতে আমি সদা প্রস্তুত। রাজনীতি করতে গিয়ে এই বাক্যটি যারা হৃদয়ে লালন করেন তারা সত্যিকার অর্থে নেতা হয়ে উঠতে পেরেছেন। আনোয়ারুজ্জামান তেমনি একজন
বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে যুক্তরাজ্য প্রবাসী নেতা আনোয়ারুজ্জামান এর অংশগ্রহণ নিয়ে সিলেট ও বহি:বিশ্বে আওয়ামীলীগ ও তার অঙ্গ সংগঠন নেতৃবৃন্দের মধ্যে তুমুল আলোচনা সমালোচনা চলছিল। বিভিন্ন সূত্রের বরাতেই জানা যাচ্ছিল যে, সিলেটের মেয়র পদে প্রয়াত বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের বিকল্প হিসাবে আওয়ামী লীগ আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীকেই ভাবছে। দলীয় হাইকমান্ড ইতিমধ্যে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গেল বৃহস্পতিবার ( ২৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীকে নির্বাচন করার প্রস্তুতি নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন এবং বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্বয়ং আওয়ামীলীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঐদিন সন্ধ্যায় আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী গণভবনে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামীলীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সাথে সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হয়েছিলেন, নানা বিষয়ে আলোচনা হয়। এক পর্যায়ে সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাচন প্রসঙ্গও উঠে।
সৌজন্য সাক্ষাত শেষে বেরিয়ে গণমাধ্যমের সাথে আলাপকালে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী নিজেই বিষয়টি পরিস্কার করেছেন। জানিয়েছেন, আগামী সিসিক নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে তাকে প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য বলেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগ সভানেত্রী। এর আগে তিনি সৌজন্য সাক্ষাত করেন দলীয় সাধারণ সম্পাদক, সড়ক যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সাথে। এমন খবরে সিলেট ও লন্ডন বহি:বিশ্বে আওয়ামী ঘরানার নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ বিরাজ করছে।
সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র পদটি দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের দখলেই ছিল। তখন দলটির ভরসা ছিলেন প্রয়াত বদর উদ্দিন আহমদ কামরান। বদর উদ্দিন কামরানের শূন্যতা, দলীয় অভ্যন্তরীন নানা সমস্যায় সেটি হাতছাড়া হয়ে যায়। এবার তা উদ্ধারে আওয়ামী লীগ আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীরকে নিয়ে ভাবছেন। ইহা আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর রাজনৈতিক জীবনের সফলতার প্রথম সিঁড়ি।
যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগে নেতা হিসাবে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ইতিমধ্যে নিজের একটা শক্ত অবস্থান গড়ে তুলেছেন। একজন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা হিসাবেও সিলেটে রাজপথে তার ব্যাপক পরিচয় আছে। দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতার মাধ্যমে রাজনীতির আঁকাবাঁকা পথ গুলোর সাথে তিনি আরেকটা পরিচিত হয়ে উঠেছেন। যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাথে জড়িত থেকে তিনি সিলেটের আওয়ামী রাজনীতিতে সবসময়ই ভূমিকা রেখেই চলেছিলেন।
আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী সিলেট-২ (ওসমানীনগর-বিশ্বনাথ) এলাকার সর্বস্তরের জনসাধারণের অত্যন্ত প্রিয়মুখ। রাজনীতির চড়াই-উতরাইয়ে তিনি অনেকটা পরিক্ষিত। তাহার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা দূরদর্শিতা ও কঠোর পরিশ্রম তাকে রাজনীতিতে সফলতায় এনে দিয়েছে। আওয়ামী লীগ অনেকটা কাজের মানুষকে কাজে লাগাতে চায়। সেই হিসেবে সিলেটের মেয়রের পদটি পুনরুদ্ধারে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীকেই বেছে নিয়েছেন।
আধুনিক রাষ্ট্রচিন্তাবিদগণ বলছেন, নেতার গ্ল্যামার, ক্যারিসমা, জনপ্রিয় জনমোহিনী শক্তি, যাই হোক না কেন আসলে নেতৃত্ব শক্তিশালী হতে পারে একমাত্র যৌথ নেতৃত্বের মাধ্যমেই।আনোয়ারের জামান চৌধুরী সকলকে নিয়ে কাজ করার অনেক দৃষ্টান্ত ইতিমধ্যে স্থাপন করেছেন। বিশ্বাস সেই ধারা তিনি অব্যাহত রাখবেন।
রাজনীতির সঙ্গে ‘নীতি’ কথাটা যুক্ত আছে। নীতি হলো কিছু আদর্শ নিয়ম-কানুন। অতীতে আমরা দেখেছি যারা রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থেকেছেন, তারা নীতি-নৈতিকতার চর্চা করেছেন। রাজনীতিবিদদের মানুষ শ্রদ্ধা করত। তাদের কথায় জীবন উৎসর্গ করতেও দ্বিধা বোধ করত না। রাজনীতি ছিল এক সময় দেশ ও মানুষের সেবা করার সবচেয়ে উত্তম পন্থা। যারা রাজনীতির খাতায় নাম লেখাতেন তারা আত্মস্বার্থ কখনো বিবেচনায় রাখতেন না। দেশ-জাতি, মানুষের কল্যাণই ছিল তাদের মূল উদ্দেশ্য। জনগণের স্বার্থকে সবার উপরে স্থান দিয়ে সত্য ও ন্যায়ের পথে এগিয়ে চলতেন সব ধরনের ভয়-ভীতি, লোভ-লালসাকে উপেক্ষা করে। আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর কাছে প্রবাসীদের অনেক প্রত্যাশা। একজন প্রবাসী সকল সার্থক নেতা হিসেবে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী উল্লিখিত বিষয়গুলো মাথায় রেখে দায়িত্ব পালনের সচেষ্টা হবেন।
যুক্তরাজ্যে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীকে সিসিক প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করায় জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তাৎক্ষণিক মিষ্টিমুখ ও আনন্দ প্রকাশ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আহাদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে এতে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগে যুবলীগ স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতৃবৃন্দ। অনুষ্ঠানে নেতৃবৃন্দ আগামী সিসিক নির্বাচনে জননেতা আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীকে জয় নিশ্চিত করার জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হলে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীকে সহযোগিতা করার জন্য প্রবাস থেকে শত শত নেতাকর্মী নির্বাচনে সহযোগিতা করার জন্য দেশে আসবেন বলে প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।
লেখক: জার্নালিস্ট, মেম্বার- ন্যাশনাল অটিস্টিক সোসাইটি, ইউনাইটেড কিংডম, ওয়ার্কিং ফর ন্যাশনাল হেল্প সার্ভিস, ইউনাইটেড কিংডম।
আপনার মতামত লিখুন :