মাধবপুর ধর্মঘর ডিগ্রি কলেজে নির্মিত হয়নি শহীদ মিনার
দ্যা সিলেট পোস্ট
প্রকাশের সময় : ফেব্রুয়ারী ২১, ২০২৫, ১০:৩৩ পূর্বাহ্ন /
০
নুরুজ্জামান ফারুকী হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার ধর্মঘর ইউনিয়নে অবস্থিত ধর্মঘর ডিগ্রি কলেজে গত ৩২ বছরেও নির্মাণ করা হয়নি শহীদ মিনার। ডিগ্রি কলেজের মতো একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার না থাকাটা লজ্জাজনক এ কথা স্বীকার করে কলেজটির অধ্যক্ষ আলী আসগর দাবি করেছেন আর্থিক সংকটের কারণেই শহীদ মিনার নির্মাণ করা সম্ভব হচ্ছে না।
জানা যায়, ধর্মঘর ডিগ্রি কলেজটি কালিকাপুর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম ১৯৯৩ সালে প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৯৯ সালে কলেজটির উচ্চ মাধ্যমিক স্তর এমপিওভুক্ত হয়। ২০১৩ সালে কলেজে মানবিক বিভাগ দিয়ে ডিগ্রি ক্লাস চালু করা হয়। এ ক্ষেত্রে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ডিগ্রি পর্যায়ে কমপক্ষে দুইটি বিভাগ চালুর কঠিন শর্ত দেওয়ার কারণে এবং প্রয়োজনীয় বিভাগ চালু করতে না পারায় ধর্মঘর ডিগ্রি কলেজের স্নাতক পর্যায় এখনও এমপিওভুক্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন অধ্যক্ষ আলী আসগর।”
তিনি জানান,’বর্তমানে মানবিক, বিজ্ঞান ও বাণিজ্য বিভাগে ৮ শত ছাত্রছাত্রী অধ্যয়নরত রয়েছে। প্রতি বছর কলেজটি থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ছাত্রছাত্রী উচ্চ মাধ্যমিক ও ডিগ্রি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে থাকে। ফলাফলও আশাব্যঞ্জক। কিন্তু কলেজটিতে একটি শহীদ মিনার না থাকার ফলে কলেজ শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ভাষা শহীদদের পুষ্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কলেজ অধ্যক্ষ হিসাবে এটা আমার জন্যও লজ্জাজনক।
তবে গত জুন মাসে (২০২৪) উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) কার্যালয় থেকে শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য ১ লাখ টাকা বরাদ্ধ পান। কিন্তু জুন ফাইনালের কারণে টাকা তোলা কিংবা নির্মাণ কাজে হাত দেওয়া হয়ে ওঠেনি। এখন প্রাপ্ত বরাদ্ধের সাথে কলেজ তহবিল থেকে কিছু টাকা দিয়ে একটি শহীদ মিনার নির্মাণ কাজ কীভাবে সুন্দরভাবে করা যায় সেই লক্ষ্যে কলেজের বিদ্যোৎসাহী সদস্য মাধবপুর উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি সাবেক ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শামসুল ইসলাম কামালকে আহবায়ক করে একটি কমিটি করা হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যেই কাজ শুরুর চেষ্টা থাকবে আমাদের।’
অধ্যক্ষ আলী আসগর জানান, ধর্মঘর ডিগ্রি কলেজে ৩২ শতাংশ জায়গার উপর একটি ৪ তলা ভবন ও ২ টি আধাপাকা টিনশেড ঘরে শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। বর্তমানে ২৭ জন শিক্ষক ও ৮ জন কর্মচারী রয়েছেন। শিক্ষকদের মধ্যে ১৮ জন এমপিওভুক্ত। বাকি ৯ জন খণ্ডকালীন। ছাত্র বেতন ছাড়া কলেজের আর কোনো আয়ের উৎস নেই। কলেজের তহবিল সংকটের কারণে ইতোপূর্বে গভর্নিং বডির মিটিংগুলোতে তিনি শহীদ মিনার নির্মাণের বিষয়টি উল্লেখ করলেও লাভ হয়নি। তহবিল সংকটের কারণে শিক্ষক কর্মচারীদের বেতনের কলেজ প্রদত্ত অংশের টাকা গত ৫/৬ মাস ধরে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তবে কলেজে একটি শহীদ মিনার নির্মাণ করা খুব দরকার এবং তিনি মনেপ্রাণে এটা চান বলেও দাবি করেন অধ্যক্ষ আলি আসগর।
ধর্মঘর আমবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা হবিগঞ্জ সরকারী মহিলা কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুজ জাহের বলেন, সিলেট বিভাগের মধ্যে ইউনিয়ন পর্যায়ে শিক্ষায় ধর্মঘর অনেকদিন ধরেই শীর্ষস্থানে রয়েছে অথচ এমন একটি এলাকার একটি ডিগ্রি কলেজে ৩০ বছরেও শহীদ মিনার নির্মাণ করতে না পারাটা খুবই দুঃখজনক ও নিন্দনীয়।
কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি ও মাধবপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জাহিদ বিন কাশম জানান, এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
আপনার মতামত লিখুন :