শেখ হাসিনা যেভাবেই চেষ্টা চালাক না কোনো -শেখ হাসিনার দ্বারা দেশের ক্ষতির স্রোত বন্ধ করা অসম্ভব।


দ্যা সিলেট পোস্ট প্রকাশের সময় : মে ২৪, ২০২৪, ৯:১৬ অপরাহ্ন /
শেখ হাসিনা যেভাবেই চেষ্টা চালাক না কোনো -শেখ হাসিনার দ্বারা দেশের ক্ষতির স্রোত বন্ধ করা অসম্ভব।

মুহাম্মদ আবদুর রহীম চৌধুরী

শেখ হাসিনারই সামনের সময়গুলোতে ক্ষমতায় থাকা জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন শেখ হাসিনাকে চরমভাবে অপছন্দ করা বিরোধী দলীয় এক নেতা।
তার যুক্তি শেখ হাসিনা সীমার বাইরে নেওয়া বিদেশি ঋণের কিস্তি যখন দিতে পারবেন না, চরম বেকায়দায় পড়বে, লেজে গুবরে অবস্থা হবে শেখ হাসিনার। শেখ হাসিনার বেহাল সেই দশা দেখতে চাই। এই অবস্থা থেকে উত্তরণে তখন তিনি বিরোধীদলের লোকদের পাশাপাশি তার দলের ব্যবহৃত ব্যক্তি যাদের আর দলে দরকার নাই -তাদের থেকে তাদের অবৈধ সম্পদের বিশাল অংশ ফেরত নিয়ে আর্থিক সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করবেন। চট্টগ্রামের সাবেক এক মেয়র থেকে এরকম পাঁচ হাজার কোটি টাকা ৩ বছর পূর্বে ফেরত নেওয়া হয়েছে বলে চট্টগ্রামের রাজনৈতিক সচেতন অনেকে তখন বলাবলি করেছিল।

বেনজীরের অবস্থাও একই রকম হচ্ছে তবে তফাৎ হলো চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র থেকে ফেরত নেওয়া টাকা অপ্রকাশ্যে আর বেনজীরের টাকা প্রকাশ্যে ফেরত নেওয়া হচ্ছে। আরো তফাৎ হলো বেনজীর থেকে রাজনৈতিক ফায়দা নেওয়ার সুযোগ আওয়ামীলীগের কাছে আর না থাকলেও চট্টগ্রামের সাবেক সেই মেয়র থেকে এখনো সরকার রাজনৈতিক ফায়দা নিচ্ছে। অর্থ্যাৎ ব্যবহৃত টিস্যু পেপারের মতো বেনজীরকে পুরোপুরি ব্যবহার করে ফেলায় আর ব্যবহারের সুযোগ নাই অন্যদিকে চট্টগ্রামের সাবেক সেই মেয়র পুরোপুরি ব্যবহার না হওয়ায় এখনও ব্যবহারযোগ্য। ব্যবহারযোগ্য হওয়ার কারণে সামান্য তথা পাঁচ হাজার কোটি টাকা ফেরত নেওয়া হয়েছিল তবে ব্যবহারযোগ্য না হলে ফেরত নেওয়ার পরিমানটা আরো কয়েকগুণ হতো।

শেখ হাসিনা যেভাবে ডিভাইড এন্ড রুল পলিসি অবলম্বন করে শক্ত হাতে বিরোধীদের নিয়ন্ত্রণ করে আসছে ঠিক একইভাবে টাকা ফেরতেও ডিভাইড এন্ড রুল পলিসি অবলম্বন করবেন। তবে তার দলের সবাই একই সাথে ক্ষেপে গিয়ে তার ক্ষমতাচ্যুতি যাতে না ঘটায় তারজন্য তার দলের অভ্যন্তরে সম্পদের পাহাড়গড়াদের মধ্যে ডিভাইড এন্ড রুল পলিসি অবলম্বন করে দুর্নীতিবাজ একটা পক্ষকে সাথে রেখে অপর পক্ষ থেকে টাকা ফেরত নিয়ে দায় মিটানোর চেষ্টা করবে-এমনটাই শেখ হাসিনাকে চরম অপছন্দ করা বিরোধী জোটের ওই নেতা আমাকে বলেন। শেখ হাসিনা এভাবে টাকা উদ্ধার করে সমাধানের যে চেষ্টা করছেন-তাতে দেশের টাকা লুটপাটের ধারা বন্ধ না হয়ে আরো অনেকগুণ বেড়ে যাবে বলে আমি শতভাগ বিশ্বাস করি। দেশে থাকা সম্পদ ক্রোক করে ফেরত নেওয়ার সুযোগ থাকায় দুর্নীতিবাজরা বেনজীরের মতো সম্পদ দেশে গড়ে বোকামি না করে অন্য অনেক দুর্নীতিবাজের মতো বিদেশে গড়বেন তবে পাশ্চাত্য দেশগুলো ঝামেলা করছে বিধায় সেসব দেশের পরিবর্তে মিডল ইস্টের দেশগুলোতে সম্পদের পাহাড় গড়ার দিকে মনোযোগ দিবে ও দিচ্ছে। দেশে সম্পদের পাহাড় গড়া দুর্নীতিবাজ যাদের সাথে আওয়ামীলীগের সুসম্পর্ক আছে তারা দ্রুত পাশ্চাত্য দেশগুলোর পরিবর্তে মিডল ইস্ট এর দেশগুলোতে টাকা পাচার করে দেশের সম্পদ নদীর স্রোতের মতো বিদেশে পাঠিয়ে দিবে। আমার দৃষ্টিতে বর্তমান প্রেক্ষাপটে শেখ হাসিনা যেভাবেই চেষ্টা চালাক না কোনো -শেখ হাসিনার দ্বারা দেশের ক্ষতির স্রোত বন্ধ করা অসম্ভব। ঋণের দায়ে জর্জরিত ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি নিরুপায় হয়ে আত্মহত্যা কিংবা ফেরারি হয়ে যায়, শেখ হাসিনারও কিন্তু সেরকম অবস্থা। তবে ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি এবং ক্ষমতায় থাকা অজনপ্রিয় ঋণগ্রস্ত সরকার দুইটার প্রতিক্রিয়া কিন্তু এক হয় না। ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি ফেরারি হয়ে যাওয়া কিংবা আত্মহত্যা করলেও রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাধর ঋণগ্রস্তরা ফেরারি কিংবা আত্মহত্যা না করে নিজেদের সেফটি ঠিক রাখার স্বার্থে প্রয়োজনে দেশ বিকিয়ে দিতেও দ্বিধা করে না। সিকিমের প্রধানমন্ত্রী লেন্দুপ দর্জি তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ। তবে তখন লেন্দুপ দর্জি তার ও তার দলের সেফটির নিশ্চয়তা পেলে ভারতের অঙ্গরাজ্যে তার দেশকে পরিণত করে দিতো না।

শেখ হাসিনার চারিদিকে অন্ধকার ও বিপদ। সবচেয়ে বড় বিপদ হচ্ছে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিএনপি-জামায়াতই ক্ষমতায় এসে যাবে। “ভবিষ্যতে এলাকায় এলাকায় সাইনবোর্ড দেখা যাবে যে আওয়ামীলীগমুক্ত এলাকা”- বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এর উপরোক্ত হুমকিসহ বিএনপির প্রায় সব কেন্দ্রীয় নেতা আওয়ামীলীগসহ প্রশাসনকে হুমকি দিতে থাকায়, আওয়ামীলীগ ও প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের জন্য এটাই সবচেয়ে বড় বিপদ। এই বিপদের শংকা দূরীভূত করার পরিকল্পনা নিয়ে বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বের বাইরে কোনো রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম এগিয়ে আসলে এবং সেই প্ল্যাটফর্ম ক্ষমতায় যাওয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি করতে পারলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস চারিদিকের সব ধরনের বিপদের কথা চিন্তা করে এবং নিরাপত্তার কার্যকর গ্যারান্টি পেলে আওয়ামীলীগ অবশ্যই সুষ্ঠু নির্বাচন দিয়ে দেশের ক্ষতি করা থেকে নিজেদেরকে ফিরিয়ে নিয়ে আসবে। আমার উপরোক্ত কথা শুনে উক্ত ব্যক্তি বলেন, “আমরা শেখ হাসিনার শেষ পরিণতি দেখতে চাই।” তখন আমি বললাম, শেখ হাসিনা এখন যে অবস্থায় আছেন-সেই অবস্থায় আপনি তার শেষ পরিণতি দেখতে যে চাচ্ছেন-তার শেষ পরিণতি দেখার আগে আপনাকে দেশের শেষ পরিণতি দেখতে হবে। দেশের তুলনায় শেখ হাসিনা কিছুই নয় আর তাই ছোট্ট একজনের শেষ পরিণতি দেখার উল্লাসের অপেক্ষায় থেকে দেশের ক্ষতি দেখার দেশপ্রেমহীন অপেক্ষা আমাদের কারো উচিত নয়। আপনার কথা মতো শেখ হাসিনা ডুববে তা আমি মানি তবে শেখ হাসিনা দেশকেও সাথে নিয়ে যে ডুববে যেটা বুঝার পরেও দেশের স্বার্থে শেখ হাসিনাকেও বাঁচিয়ে দেওয়ার ফর্মূলা প্রতিহিংসাবশত কেনো আপনি মানছেন না? না মানার কারণে দেশ ধ্বংস হলে সেটার দায় আপনার উপরও বর্তাবে।

বাংলাদেশ ঐক্য পার্টি দেশের স্বার্থে সবার জন্য দায়মুক্তি ফর্মূলা এবং কারো আতংকের কারণ যাতে না হয় সেরকম ব্যক্তিদের নিয়ে অভূতপূর্ব সর্বজনীন প্ল্যাটফর্ম গড়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। প্ল্যাটফর্মটি দেশব্যাপী পরিচিত ও মোটামুটি সৎ ব্যক্তির সন্ধানে কাজ করে যাচ্ছে। পরিচিত ব্যক্তি না হলেও বাংলাদেশ ঐক্য পার্টির ফর্মূলা গ্রহণযোগ্য হওয়ায় জনগণ গ্রহণ করে নিবে তবে দেশব্যাপী পরিচিত ব্যক্তি বাংলাদেশ ঐক্য পার্টির ফর্মূলা প্রচারে ভূমিকা রাখলে দেশবাসী সহজে গ্রহণ করে নেবে। সময় কম লাগবে। বর্তমানে আমরা খুবই কম পরিচিত যারা প্রচার করছি – খুবই কম পরিচিতির কারণে সফল হতে সময় বেশি লাগবে। যেহেতু দেশ দ্রুত অতল গহবরে তলিয়ে যাচ্ছে-সেহেতু বেশী সময় নিতে গিয়ে দেশ তলিয়ে গেলে দেশ উদ্ধার সম্ভব হবে না বিধায় তলিয়ে যাওয়ার আগেই দেশব্যাপী ভাইরাল ব্যক্তির সন্ধানে আমরা চেষ্টা চালাচ্ছি যাতে সেই ভাইরাল ব্যক্তির মাধ্যমে আমাদের ফর্মূলা দেশবাসীকে জানান দিয়ে দেশবাসীর সমর্থন নিয়ে যাতে আমরা দেশকে ধ্বংস হওয়া থেকে বাঁচাতে পারি। দেশবাসীর দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করে লিখার ইতি টানলাম।

মুহাম্মদ আবদুর রহীম চৌধুরী
দেশে চলমান রাজনৈতিক সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানের প্রবক্তা ও প্রতিষ্ঠাতা বাংলাদেশ ঐক্য পার্টি।