মঈনুদ্দীন শাহীন কক্সবাজার প্রতিনিধি ;
প্রধানমন্ত্রী কক্সবাজার আসছেন তাই সেঁজেছে রূপের নগরী। চীরচেনা কক্সবাজার য্যেনো আর সেই কক্সবাজার নেই। চারিদিকে আলোর ঝলকানিতে ঝিলমিল করছে পর্যটন নগরী কক্সবাজার। সর্বত্র চলছে উৎসবের আমেজ। বিলবোর্ড, ব্যানার, ফেষ্টুন আর রঙ বেরঙ এর পোষ্টারে ছেয়ে গেছে পুরো কক্সবাজার। শহরের বিভিন্ন দালান ও সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকেও সাজানো হচ্ছে বিভিন্ন রঙ এ আর আলোর জ্বলখানিতে। শিল্পীরা দেয়ালে আঁকছেন স্বাধীনতার বিভিন্ন চিত্রকর্ম। শহর সপ্তাহ ধরে সরগরম রয়েছে আওয়ামীলীগ ও বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের মিছিলে মিছিলে। শহর ছাড়িয়ে উপজেলা সহ গ্রামগঞ্জের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ও ছড়িয়ে পড়ছে প্রধানমন্ত্রীর আগমনী উৎসবের আমেজ, কখন আসবেন প্রধানমন্ত্রী।
দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রায় সাত বছর পর (৭ ডিসেম্বর) আওয়ামীলীগের জনসভায় যোগ দিতে কক্সবাজার আসছেন। প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে কক্সবাজার পৌরসভা, উখিয়া, টেকনাফ, রামু, ঈদগাও, চকরিয়া, পেকুয়া, কুতুবদিয়া, মহেশখালী থেকে প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানাতে এবং জনসভাকে জনস্রোতে রূপ দিতে দলীয় নেতা কর্মীরা রাতদিন কাজ করে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে বাড়ানো হয়েছে কঠোর নজরদারি, রাস্তায় টহল দিচ্ছে পুলিশের বিশেষ টিম। সন্দেহজনক প্রতিটি গাড়ীকে তল্লাশির আওতায় আনা হচ্ছে।
উল্যেখ্য যে, কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভ সড়কের ইনানী-পাটোয়ারটেক সৈকত এলাকায় অনুষ্ঠিতব্য তিন দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক নৌশক্তি মহড়ার উদ্বোধন করার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। বাংলাদেশ নৌবাহিনী আয়োজিত নৌশক্তি মহড়ায় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত, চীনসহ বিশ্বের বেশ কিছু দেশ অংশগ্রহণ করবে বলে জানা গেছে। মহড়া শেষে বেলা আড়াইটার দিকে সৈকতের লাবনী পয়েন্টের শেখ কামাল আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে আওয়ামী লীগের দলীয় জনসভায় বক্তব্য রাখবেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামীলীগ সভানেত্রী। প্রধানমন্ত্রীর সমাবেশ শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ও আয়োজন করা হয়েছে স্টেডিয়ামের আলাদা মঞ্চে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর আগে ২০১৭ সালের ২২ সেপ্টেম্বর কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শনে এসে একই স্টেডিয়ামে দলীয় জনসভায় ভাষণ দিয়েছিলেন।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর সফরকে ঘিরে শহরকে নতুন রূপ দেয়ার পাশাপাশি শহরের উপসড়কগুলোর জরুরি মেরামত, পরিচ্ছন্নতা, ও লাইটিং ব্যবস্থার সংষ্কার কাজ চলছে তড়িৎ গতিতে। শহরের অসম্পূর্ণ প্রধান সড়কের পাকা করনের কাজ ও প্রায় শেষ পর্যায়ে। জনসভাস্থলের সার্বিক প্রস্তুতিও সম্পন্ন। তোরণ, ব্যানার ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে পুরো সমাবেস্থল ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমনের বিষয়ে কক্সবাজার পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান বলেন, সারাদেশের তুলনায় কক্সবাজারেই বেশি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র, গভীর সমুদ্র বন্দর, কক্সবাজার রেল লাইন প্রকল্প, কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর, মেরিন ড্রাইভ প্রশস্থকরণ,কুতুবদিয়া বিদ্যুৎ প্রকল্প, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ, সাবরাং এক্সক্লেুাসিভ ট্যুরিজম জোন, মহেশখালী এল.এম.জি টার্মিনালসহ অসংখ্য মেগা প্রকল্পের কারণে প্রধানমন্ত্রীর এবারের আগমনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যার কৃতজ্ঞতা স্বরূপ ৭ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে লাখো জনতা জনসভাস্থলে আসবে বলে মেয়র আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রীর জনসভাস্থল ছাড়াও কক্সবাজার শহরের পুরো এলাকা লোকে লোকারণ্য থাকবে। প্রায় ৪ লক্ষাধিক লোকের সমাগম হবে বলে তিনি জানান। যার কারনে শহরে দুই শতাধিক মাইক লাগানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
জেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম চৌধুরী বলেন, সকাল ১০টা থেকে শেখ কামাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জনসমাগম শুরু হবে। কক্সবাজারের বিভিন্ন উপজেলা থেকে আগত অনেকেই সমাবেশের আগের দিন কক্সবাজারে আসবেন। তারাও স্টেডিয়ামে অবস্থান করবেন। কক্সবাজারে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দর থেকে শহরের কলাতলী মোড় পর্যন্ত পুরো সড়কে তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। সমাবেশস্থলে মঞ্চ তৈরির কাজ ও প্রায় শেষ পর্যায়ে।
জনসভা সফল করতে মাঠে দিনরাত কাজ করছেন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। কক্সবাজার উন্নয়ন কতৃপক্ষ, কক্সবাজার পৌরসভা, জেলা পরিষদ, সহ কক্সবাজারের বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে কলাতলী সড়কের বিভিন্ন স্থানে বড় বড় ব্যানার-বিলবোর্ড টাঙ্গানো হয়েছে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সার্বিক নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে। দায়িত্ব বন্ঠনের মাধ্যমে রুটিন কাজের প্রস্তুতি শেষ করেছে। নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সকল প্রকার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :