ডেস্ক রিপোর্টঃ শরীয়তপুরের জেলা যুবলীগের বর্ধিত সভাকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর) সকালে পালং বাজার এলাকায় দফায় দফায় ককটেল বিস্ফোরণ ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ২১টি ফাঁকা গুলি করে পুলিশ।
এসময় সংঘর্ষে ১০ জন আহত হয়ে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। এদের মধ্যে সদর উপজেলার চর পালং গ্রামের মোঃ জাকির সরদার (৩২), সদর উপজেলার কেবলনগর গ্রামের আক্তার ঢালী (৪২) ও সদর উপজেলার চন্দ্রপুর গ্রামের তামিম ফকির (২০) শিশু পরিবারের শিক্ষক মোঃ শামীম হোসেন (৩০), চয়ন বিশ্বাস (২৮) কে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এছাড়া সভাকে কেন্দ্র করে সদর হাসপাতালের সামনে, রাজগঞ্জ ব্রিজ, চৌরঙ্গীর মোড় ও পুলিশ বক্স এলাকাসহ সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পৃথক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। সংঘর্ষ এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করে বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে।
প্রত্যেক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, নেতাকর্মীদের মধ্যে দুইটি গ্রুপ সংঘর্ষে দুটির নেতৃত্ব দিয়েছেন পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর বাচ্চু ব্যাপারী এবং অন্য পক্ষের নেতৃত্ব দেন পৌর মেয়র পারভেজ রহমান জন ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিক পাহাড়।
পুলিশ জানায়, যুবলীগের বর্ধিতসভা উপলক্ষে পদ প্রত্যাশীরা তাদের সমর্থকদের নিয়ে মঙ্গলবার সকাল থেকে শহরের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেন। এ কারণে বর্ধিত সভাকে ঘিরে শহরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পরে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ২২ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়েছে। আতঙ্কে পালং বাজারের ব্যবসায়ীরা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে রাখেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
শরীয়তপুর জেলা যুবলীগের সভাপতি এমএম জাহাঙ্গীর বলেন, বর্ধিতসভা যেহেতু সাংগঠনিক সভা তাই জেলার নির্বাহী কমিটি, প্রতিটি উপজেলা কমিটির ৯ জন করে ও সদর পৌরসভার ৯ জন প্রতিনিধি যোগ দিয়েছেন। আর ৬ জন কেন্দ্রীয় নেতা উপস্থিত ছিলেন। এর বাইরে কাউকে অনুষ্ঠানে আসতে দেয়া হয়নি। লোক মুখে শুনেছি অনেকে শোডাউন করার জন্য লোকজন জোড়ো করেছেন। তারা বিশৃঙ্খলা করেছেন। এর দায় জেলা যুবলীগ নেবেনা।
শরীয়তপুর সদর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি বিল্লাল হোসেন দীপু মিয়া বলেন, যুবলীগের বর্ধিতসভাকে কেন্দ্র করে একটি মহল অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চাচ্ছিলো। আমরা তা প্রতিহত করার জন্য শহরের বিভিন্ন স্থানে কর্মীদের জড়ো করেছি। আমাদের কেউ সংঘর্ষে জড়ায়নি।
পৌর মেয়র পারভেজ রহমান জন বলেন, দীর্ঘ দিন পর যুবলীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম হচ্ছে। অনেক নেতা-কর্মীরা অনুষ্ঠানে যাবে। কিন্তু একটি পক্ষ অনুষ্ঠানে যেতে বাঁধা সৃষ্টি করেছে। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটিয়ে শহরে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছেন। ২০০১ সালের আজকের দিনে আওয়ামী লীগের একটি সভায় আমার বাবা ও চাচাকে হত্যা করা হয়েছে। আমাকে অনুরূপভাবে হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নড়িয়া-সদর সার্কেল) মিজানুর রহমান বলেন, সারা শহরে বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়েছিলো। পুলিশ দক্ষতার সাথে তা নিয়ন্ত্রণে এনেছে। এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ২২ রাউন্ড ফাঁকা গুলি করেছে। যারা অস্ত্র প্রদর্শন করে মিছিল করেছেন তাদের চিহ্নিত করতে ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হবে।
এদিকে কড়া পুলিশ প্রহরায় শরীয়তপুর জেলা যুবলীগের বিশেষ বর্ধিত সভা জেলা যুবলীগ সভাপতি এমএম জাহাঙ্গীর এর সভাপতিত্বে আওয়ামী লীগ অফিস কার্যালয়ের সম্মুখে সম্পন্ন হয়েছে।
মন্তব্য করুন