
নুরুজ্জামান ফারুকী হবিগঞ্জ থেকে ॥
সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে হবিগঞ্জ-১ (নবীগঞ্জ-বাহুবল) আসনে ধানের শীষের মনোনয়ন পেলেন সদ্য বিএনপিতে যোগ দেওয়া অর্থনীতিবিদ ড. রেজা কিবরিয়া। গতকাল বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রেজা কিবরিয়া মরহুম সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়ার ছেলে।
বিএনপির মতো একটি দলের মনোনয়ন পেয়ে খুবই আনন্দিত হয়েছেন বলে জানান ড. রেজা কিবরিয়া। তিনি বলেন, ‘এর ফলে আমি আমার এলাকা নবীগঞ্জ-বাহুবলের জন্য কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। প্রথমেই আমার বাবার অসমাপ্ত কাজগুলো শেষ করতে চাই। উন্নতমানের কলেজ, টেকনিক্যাল কলেজ, নার্সিং কলেজ করতে চাই। আন্তর্জাতিকমানের শিক্ষিত লোক তৈরির জন্য যা যা করার দরকার সবই আমি করতে চাই।’ মনোনয়ন পাওয়ার পর সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে প্রচারণা করেছেন তিনি।
এই আসনে আরও ৪জন ধানের শীষের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। তবে আলোচনায় ছিলেন সাবেক এমপি শেখ সুজাত মিয়া এবং কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ মুখলেছুর রহমান মুখলিস।
তবে ইতোপূর্বে ২৩৭ আসনে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হলেও নবীগঞ্জ বাহুবল আসনটি ফাকা রাখা হয়। এর পর থেকেই আলোচনায় উঠে আসেন ড. রেজা কিবরিয়া। তিনি বিএনপিতে যোগ দিয়ে দলীয় মনোনয়ন পেতে পারেন বলেই বেশি আলোচনা ছিল। দিন যত ঘনিয়ে আসছিল ততই আলোচনায় আসে তিনি বিএনপিতে যোগ দিয়ে ধানের শীষের প্রার্থী হচ্ছেন। এসব আলোচনার মধ্যেই গত সোমবার (১ ডিসেম্বর) আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগ দেন রেজা কিবরিয়া। এ উপলক্ষে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
যোগদানের পর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মন্তব্য করেন, ‘রেজা কিবরিয়া শুধু তার এলাকায় নয়, সারা বাংলাদেশে প্রভাব বিস্তার করবে। তার মেধা ও দক্ষতা নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে সহায়তা হবে।’
এদিকে ড. রেজা কিবরিয়ার দলীয় মনোনয়ন নিয়ে বিএনপি এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে কিছুটা মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। সাধরণ মানুষ মনে করছেন, তিনি ব্যক্তিগতভাবে ক্লিন ইমেজের একজন মানুষ। তিনি নিরহংকারী ও মিতভাষী এবং কথার চেয়ে কাজে বিশ্বাসী বলে মনে করছেন অনেকে।
এ ব্যাপারে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক এমপি শেখ সুজাত মিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই মুহুর্তে কোন প্রতিক্রিয়া জানাতে আগ্রহ প্রকাশ করেননি। তিনি বলেন, অসুস্থ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে দেখতে ঢাকায় অবস্থান করছেন। এলাকায় ফিরে আনুষ্টানিক প্রতিক্রিয়া জানাবেন। আরেক মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক মেয়র ছাবির আহমেদ চৌধরী তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, তৃণমুলের প্রত্যাশা পুরণ হয়নি। এর বাহিরে কোন মন্তব্য করতে রাজি নন তিনি। বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এবং সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান শেফু বলেন, দলের হাইকমান্ডের সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাই। তবে এই মুহুর্তে এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে চাই না। মনোনয়ন বঞ্চিতদের নিয়ে এক সাথে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিক্রিয়া জানানো হবে।
হবিগঞ্জ-১ আসনে ভোটার আছেন ৪ লাখ ৬১ হাজার ২৮৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৩৩ হাজার ১৬ জন এবং নারী ২ লাখ ২৮ হাজার ২৬৮ জন। নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে ১৭৭টি কেন্দ্র ও ৯০৫টি ভোটকক্ষ চূড়ান্ত করেছে।।
আপনার মতামত লিখুন :