হবিগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধাসহ ৩ ব্যক্তির লাশ উদ্ধার
দ্যা সিলেট পোস্ট
প্রকাশের সময় : অক্টোবর ২৪, ২০২৫, ১০:৩৩ অপরাহ্ন /
০
হবিগঞ্জ প্রতিনিধি ॥
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে বীর মুক্তিযোদ্ধা, বানিয়াচঙ্গের সবজি ব্যবসায়ী ও বাহুবলের টমটম চালকের লাশ শায়েস্তাগঞ্জ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। একই দিনে পৃথক স্থান থেকে ৩টি লাশ উদ্ধারের ঘটনায় জনমনে অস্বস্থির সৃষ্টি হয়েছে। যদিও ওই ৩ ব্যক্তি স্বেচ্ছায় আত্মহত্যা করেছেন না কি তাদের হত্যা করা হয়েছে তা নিশ্চিত করা যায়নি। তবে এসব বিষয় নিয়ে জনসাধারণের মনে নানা প্রশ্নের দেখা দিয়েছে। নিখোঁজের ১ দিন পর শৌলাগড় হাওরের একটি জলাশয় থেকে মানিক লাল দাশ (৭০) নামে এক বীর মুক্তিযোদ্ধার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) সন্ধ্যায় উপজেলার বড় ভাকৈর (পশ্চিম) ইউনিয়নের চরগাঁও এলাকার শৌলাগড় হাওর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত মুক্তিযোদ্ধা মানিক লাল দাশ ওই ইউনিয়নের সোনাপুর গ্রামের মৃত রসময় দাশের ছেলে। পুলিশ জানায়, বুধবার সকালে প্রতিদিনের মতো হাঁটতে বের হয়েছিলেন মানিক লাল দাশ। এরপর তিনি আর বাড়ি ফেরেননি। অনেক খোঁজাখুঁজির পর পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় স্থানীয় জেলেরা শৌলাগড় হাওরের জলাশয়ে লাশ ভাসতে দেখে থানায় খবর দেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, “নিখোঁজের একদিন পর শৌলাগড় হাওর থেকে মুক্তিযোদ্ধা মানিক লাল দাশের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।”
এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা মরহুমের আত্মার শান্তি কামনা করেছেন।
বানিয়াচং উপজেলা সদরের ৪নং দক্ষিণ-পশ্চিম ইউনিয়নের পাঠানটুলা মহল্লা থেকে গ্যানিংগঞ্জ বাজারের সবজি ব্যবসায়ী শহীদ মিয়ার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) সকালে স্থানীয়দের খবরের ভিত্তিতে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সকালে এলাকার লোকজন গাছের সাথে ফাঁস লাগানো অবস্থায় শহীদ মিয়ার ( ৪৫) মরদেহ দেখতে পেয়ে থানায় খবর দেন। পরে বানিয়াচং থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে একটি চিরকুটও উদ্ধার করা হয়। বানিয়াচং থানার অফিসার ইনচার্জ মিজানুর রহমান জানান, প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যা বলে ধারণা করা হচ্ছে। উদ্ধার করা চিরকুটের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হবিগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। শহীদ মিয়া দীর্ঘদিন ধরে গ্যানিংগঞ্জ বাজারে সবজি (কাঁচামাল) ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করতেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। বাহুবলের টমটম চালকের লাশ শায়েস্তাগঞ্জের মহাসড়ক থেকে উদ্ধার করেছে হাইওয়ে পুলিশ। তবে তার টমটম গাড়ির খোঁজ মিলেনি। বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) ভোররাতে শায়েস্তাগঞ্জ হাইওয়ে থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য হবিগঞ্জ মর্গে প্রেরণ করে। নিহত টমটম চালক সুজন মিয়া বাহুবল উপজেলার মিরপুর ইউনিয়নের ভুগলী গ্রামের ফিরোজ মিয়ার ছেলে।
সুজন মিয়ার পিতা ফিরোজ মিয়া জানান, বুধবার সকালে জীবিকার তাগিদে টমটম নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয় সুজন। রাত ১০ টার দিকেও সুজন বাড়ি না ফেরায় আত্মীয় স্বজন সহ বিভিন্ন স্থানে খোঁজ খবর নিয়েও গভীর রাত পর্যন্ত তার কোন সন্ধান পাননি। বৃহস্পতিবার সকালে ছেলে নিখোঁজের বিষয়ে ফিরোজ মিয়া বাহুবল মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন। এর কিছুণ পরই শায়েস্তাগঞ্জ হাইওয়ে থানার মাধ্যমে সুজন মিয়ার লাশ উদ্ধারের তথ্য জানতে পেরে ফিরোজ মিয়া সেখানে গিয়ে লাশ সনাক্ত করেন।
জানা গেছে, বুধবার রাত ৮ টার দিকে মিরপুর থেকে শায়েস্তাগঞ্জে যেতে অকেজো মোটরসাইকেল বহনের জন্য আড়াইশ টাকায় ভাড়া নেয় অজ্ঞাত দূর্বৃত্তরা। এরপর থেকেই সুজনের সন্ধান পাওয়া যায়নি। শায়েস্তাগঞ্জ হাইওয়ে থানার ওসি (অপারেশন) সঞ্চয় চক্রবর্তী জানান, ভোররাত ৪ টার দিকে শুধু লাশটি উদ্ধার করা হয়েছে। তবে টমটম গাড়ি বা অন্য কিছু পাননি।
আপনার মতামত লিখুন :