আঃজলিল,যশোরঃ
যশোরের শার্শা-বেনাপোলে ব্যাপক হারে বেড়েই চলেছে মাদকদ্রব্য গাঁজা ও ফেনসিডিল জাতীয় নেশা দ্রব্যের। আর হাত বাড়ালেই শার্শা-বেনাপোলে মিলছে গাঁজা ও ফেনসিডিল। সেই সাথে প্রশাসনিক তৎপরতায় আটকও হচ্ছে প্রতিদিন কোন না কোন মাদক ব্যবসায়ী।
শার্শা উপজেলার বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে এসব মাদকদ্রব্য দেশে প্রবেশ করে পুটখালী, বারপোতা, দৌলতপুর, গাতিপাড়া, সাদিপুর, রঘুনাথপুর, ঘিবা, ধান্যখোলা, বেনাপোল রেল ষ্টেশন, ভবেরবেড়, নারানপুর, নামাজগ্রাম, দুর্গাপুর এলাকায় অনেকটাই প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে। ফলে এলাকার উঠতি বয়সী অনেক স্কুল-কলেজ গামী ও যুবকরা নেশাগ্রস্থ হয়ে পড়ছে।
আর এসব মাদকের সাথে জড়িতরা হরহামেশাই ধরা পড়ছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে।
আবার অনেকে কোর্ট থেকে জামিনে বাইরে এসে আবারও জড়িয়ে পড়ছে চিরচেনা সেই মাদক ব্যবসায়।
বিগত দেড় মাসের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ১৪ই ফেব্রুয়ারী ২নং ঘিবা ও গাতিপাড়া সীমান্ত থেকেৃ পুলিশের অভিযানে ২ কেজি গাঁজা, ২ বোতল বিদেশী মদ ও ৮ বোতল ফেনসিডিল সহ বেনাপোল পোর্ট থানার ঘিবা ২নং দক্ষিনপাড়ার মুজিবার রহমানের ছেলে আলমগীর হোসেন (৪০), গাতিপাড়া গ্রামের ফজলুর রহমানের ছেলে জনি হোসেন (২৬), ১২ই ফেব্রুয়ারী ভবেরবেড় গ্রামে আসামির নিজ বাড়ি থেকে ১২৬ বোতল ফেনসিডিল সহ নুর নবীর স্ত্রী সালেহা খাতুন (৪৯), ১১ ফেব্রুয়ারী ভবেরবেড় গ্রাম নিজ বাড়ি থেকে ২২ বোতল ফেনসিডিল সহ মৃতঃ আব্দুর রশিদ ঢালীর ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (৩৫),
১০ই ফেব্রুয়ারী রাজাপুর গ্রাম থেকে ১০০ বোতল ফেনসিডিল বেনাপোল পোর্ট থানার রাজাপুর গ্রামের আলী হোসেনের ছেলে ইমরান (২১), শার্শা থানার কন্যাদহ গ্রামের আমজেদ আলীর ছেলে রাশেদুল ইসলাম (২১), ৮ ই ফেব্রুয়ারী শার্শার যাত্রী ছাউনি ও খড়িডাঙ্গা গ্রাম থেকে ২১৫ বোতল ফেনসিডিল বেনাপোল পোর্ট থানার তালশারী গ্রামের মৃতঃ জামশেরের ছেলে রাশেদ (৪৫), একই এলাকার জামশেরের ছেলে রেসত রহমান শিমন হাফিজ (২০), ভবেরবেড় মধ্যপাড়ার মৃতঃ বাবর আলী মোড়লের ছেলে তৈয়েব মোড়ল (৫৬), খড়িডাঙ্গা গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে মনিরুজ্জামান মনিরুল (৪৮), একই এলাকার মৃতঃ গোলাম হোসেনের ছেলে আঃ সালাম (৩৬), ০২ রা ফেব্রুয়ারী ডিবির অভিযানে শার্শা থানার পাকশিয়া এলাকা থেকে ৩৩ বোতল ফেনসিডিল সহ পাকশিয়া খালপাড়ার সুলতান খাঁ ছেলে ফুলছুদ্দিন খাঁ (৪০), ২৮ শে জানুয়ারী পুলিশের অভিযানে শার্শা থানার কামারবাড়ী মোড় এলাকা থেকে ২ কেজি গাঁজা বেনাপোল পোর্ট থানার সাদিপুর গ্রামের হামিদ মুন্সির ছেলে রিয়াজুল ইসলাম (৩২), একই এলাকার বিল্লাল খাঁর ছেলে লিটু খাঁ (২৬), অভয়নগর থানার শুভরাড়া উত্তরপাড়ার শহিদ ফকিরের ছেলে ইমরান ফকির (২৭), ২৪ শে জানুয়ারী ডিবির অভিযানে ৩০১ বোতল ফেনসিডিল সহ বারপোতা এলাকা থেকে বেনাপোল পোর্ট থানার পুটখালী গ্রামের আঃ রাজ্জাকের ছেলে আলম হোসেন (৩০), শার্শা থানার গোপীনাথপুর বটতলা গ্রামের মৃতঃ আব্দুল শুকুরের ছেলে আব্দুল অহেদ (৫২), একই এলাকার আব্দুল বারেকের ছেলে স্বপন হোসেন (৩৩), ২৩শে জানুয়ারী বোয়ালীয়া গ্রাম থেকে ৫ কেজি গাঁজা সহ মনিরামপুর থানার গোপালপুর গ্রামের রবিউল ইসলামের স্ত্রী পারভীন বেগম (৩৫), কোতয়ালী থানার বসুন্দিয়া (সদুল্লাহপুর) গ্রামের আঃ গফ্ফার খানের স্ত্রী ফাতেমা খাতুন (৩৫), বেনাপোল পোর্ট থানার কাগজপুকুর উত্তরপাড়ার মৃতঃ আফছার মোড়লের আনিচুর রহমান (৪৮), ২২শে জানুয়ারী ডিবির অভিযানে ভবেরবেড় গ্রাম থেকে ২ কেজি গাঁজা সহ ৩ বেনাপোল পোর্ট থানার সরবাংহুদা গ্রামের জামাত আলী মোড়লের ছেলে জামাল মোড়ল কুশই (৪৫), ভবেরবেড় মধ্যপাড়ার মৃতঃ আবেদ আলী ঘরামীর ছেলে শওকত (৪৩), একই এলাকার মৃতঃ রুস্তম আলীর ছেলে জাকির (৪২), ১৯শে জানুয়ারী পুলিশের অভিযানে বাগআচড়া সাতমাইল এলাকা থেকে ২৬ বোতল ফেনসিডিল সহ ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী থানার গোহাল বাড়ি গ্রামের মনোয়ার মিয়ার ছেলে মশিউর রহমান (৩২) শার্শা থানার গোগা কারিগর পাড়ার ইয়াছিন আলীর ছেলে শরিফুল ইসলাম (৩৫), ১৬ই জানুয়ারী সাদিপুর সীমান্ত থেকে বিজিবির অভিযানে পরিত্যক্ত অবস্থায় ২ হাজার ৯৮৮ বোতল ফেনসিডিল, ১০ই জানুয়ারি ডিবির অভিযানে মানকিয়া গ্রাম থেকে ১০ কেজি গাঁজা সহ মানকিয়া দক্ষিণপাড়া গ্রামের কদম আলীর ছেলে আবু তালেব খোকন (৪০), ০৯ই জানুয়ারী পুলিশের অভিযানে সাদিপুর খেয়াঘাটপাড়া এলাকা ৪৪৭ বোতল ফেনসিডিল সহ বেনাপোল পোর্ট থানার কাগমারী (এ/পি সাং-ভবেরবেড়) গ্রামের মৃতঃ আহম্মেদ খাঁর ছেলে শাহ আলম (৪০), একই এলাকার শাহ আলমের ছেলে আরজু ইমরান (১৯), বড় আচঁড়া গ্রামের মৃতঃ মঞ্জুরুল ইসলামের ছেলে আক্তারুল ইসলাম (২৭), ০৯ই জানুয়ারী র্যাবের অভিযানে ভবেরবের গ্রাম থেকে ৬৭১ বোতল ফেন্সিডিলসহ বিল্লাল ফারাজী (৪০) খুলনা কেএমপি’র খালিশপুর থানার উত্তর কাশিপুর গ্রামের মৃত ফারুক ফারাজীর ছেলে, জয়নুদ্দিন (৪৫) একই এলাকার মৃত আশরাফ চৌধুরীর ছেলে, ০৪ঠা জানুয়ারী র্যাবের অভিযানে ভবেরবেড় গ্রাম থেকে ৭০ পিস ইয়াবা ও ৩ গ্রাম (৩৯ পুরিয়া) হেরোইনসহ ভবেরবেড় গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে শাহাবউদ্দিন (৪০)।
এব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিজিবির এক কর্মকর্তা বলেন, মাদক চোরাচালানিদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তাদের সাথে কোন আপস নয়। প্রায় এসব চোরাচালানি বিজিবির কাছে আটক হলেও সীমান্তর এলাকা বড় হওয়ায় কিছু চোরাচালানি চোখ ফাঁকি দিয়ে যেতে পারে। তবে কোন প্রকার এসব মাদক ব্যবসায়িদের ছাড় দেওয়া হবে না।
বেনাপোল পোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসন ভুঁইয়া বলেন, আমি সবে মাত্র বেনাপোল পোর্ট থানায় যোগদান করেছি। আর এসময়ের মধ্যে কয়েকটি চালান আটকও করেছি। মাদকের ব্যাপারে আমরা সচেতন আছি। যারা এই পেশার সাথে জড়িত তাদের চিহিৃত করে আইনের আওতায় আনা হবে।
মন্তব্য করুন