সৈয়দ ছায়েদ আহমদ, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে তিন নদীতে অবৈধ বাঁশের খাঁটি দিয়ে চলছে অবাধে মাছ শিকার। এতে নদী ও জলাশয়ে হ্রাস পাচ্ছে প্রাকৃতিক মাছের উৎপাদন। ফলে মাছের প্রকৃতিক প্রজনন ও পানির গতি প্রবাহে মারাত্মক বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে। এসব নদী ও ছড়ায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে বাঁশের খাঁটি বসিয়ে মাছ শিকার করলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নির্বিকার রয়েছে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, ভারতীয় সীমান্ত এলাকার আদমপুরে পাহাড়ি এলাকা থেকে লাঘাটা নদীর উৎপত্তি হয়ে আদমপুর, আলীনগর, শমশেরনগর ও পতনউষার ইউনিয়নের হাওরের মাঝ দিয়ে লাঘাটা, পলক ও খিন্নী নদী রাজনগর উপজেলায় মনু নদীতে গিয়ে পতিত হয়েছে। এই নদীকে কেন্দ্র করে হাওর, বিল, জলাশয়ে দেশীয় মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি ও কৃষি চাষাবাদে সেচের সুবিধাও রয়েছে। ঝোপ জঙ্গলে ও পলিবালি জমে ভরাট হওয়ায় এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে গত বছরে পুন:খনন হয় লাঘাটা নদী।
খনন কাজ শেষ হতে না হতেই একটি অসাধু মাছ শিকারী চক্র নদীর শ্রীরামপুর, গোপীনগর এলাকায় অবৈধ বাঁশের খাঁটি স্থাপন করে মাছ শিকার করছে। একইভাবে মুন্সীবাজার নারায়নক্ষেত্র এলাকায় খিন্নি ছড়া ও পলক নদীতেও কয়েকটি বাঁশের খাঁটি বসানো হয়েছে। ফলে মাছের অবাধ গতি ও প্রবাহে এবং মৎস্য প্রজননে মারাত্মক বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে। খাঁটিতে পুতে রাখা খাঁচায় আটকে মাছ, ব্যাঙ, সাপ, কুচিয়াসহ নানা প্রজাতির জলজ প্রাণী মারা যাচ্ছে। কৃষকদেরও পানি তুলতে সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। স্থানীয়রা জানান, ছোট্র একটি পলক নদীতে প্রতিবছর একাধিক বাঁশের খাঁটি বসানো হয়। এতে পানি নিস্কাশন, মাছের প্রজনন বাঁধাগ্রস্ত হয় স্থানীয় অনেক কৃষক সময় মতো চাহিদা অনুযায়ী পানি না পেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। অবৈধভাবে বাঁশের খাঁটি স্থাপনকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা না নিলে এসব রোধ সম্ভব হবে না।
কৃষক আক্তার মিয়া, সমাজকর্মী তোয়াবুর রহমান বলেন, কয়েক বছর আগেও লাঘাটা নদী ও কেওলার হাওরে দেশীয় মাছের আনাগোনা দেখা গেলেও এখন মাছ দুরের কথা হাওরগুলো হয়েছে বিরাম ভূমি। প্রশাসনের নাকের ডগায় তারা নদী সেচ, বাঁশের খাটি স্থাপন করে মাছ শিকার করলেও তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না।
তারা আরও বলেন, যদি একটি মহলের অবৈধ পন্থায় মাছ শিকার বন্ধ করা যেত তাহলে চলতি মৌসুমে মনু নদীর মাছে লাঘাটা নদী ভরপুর হয়ে উঠতো। এভাবে স্থানে স্থানে বাঁশের খাঁটি দেওয়ার কারণে মাছ উজানে উঠতে পারছে না।
এ ব্যাপারে মৌলভীবাজার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. এমদাদুল হক বলেন, এটি কোন অবস্থাতেই ঠিক নয়। গুরুত্ব সহকারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য করুন