আব্দুল কুদ্দুস, কুলাউড়া (মৌলভীবাজার) থেকে:
কুলাউড়া উপজেলা বিএনপির সম্মেলন ও কাউন্সিল ঘিরে উচ্ছ্বসিত দলের নেতাকর্মীরা। প্রথমবারের মতো দলের তৃণমূলের ভোটাররা সরাসরি ভোটের মাধ্যমে তাদের নেতা নির্বাচন করতে যাচ্ছেন। শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) শহরের অবস্থিত কুলাউড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত হচ্ছে উপজেলা বিএনপির দ্বি বার্ষিক সম্মেলন ও কাউন্সিল। দুটি অধিবেশন ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি ও সাজসজ্জা করা হয়েছে। ব্যানার, ফেস্টুন ও তোরণে সজ্জিত করা হয়েছে অনুষ্ঠানস্থলসহ শহর এলাকা। সম্মেলন ও কাউন্সিলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। প্রধান বক্তা দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জি কে গউছ এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী, সাবেক এমপি এম নাসের রহমান, জেলা বিএনপির আহবায়ক ফয়জুল করিম ময়ুন, সদস্য সচিব আব্দুর রহিম রিপনসহ জেলা নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন।
দলীয় সূত্র জানায়, উপজেলা বিএনপির ৫ পদের বিপরীতে ১৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা দিনরাত বিরামহীনভাবে ১৩ ইউনিয়নের কাউন্সিলারদের কাছে ভোট প্রার্থনা করছেন। তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের ভোট উৎসবে সম্পৃক্ত হওয়া ও তাদের প্রত্যক্ষ ভোটে দলীয় সভাপতি, সম্পাদকসহ ৫ পদে যোগ্য নেতৃত্ব বাছাইকে ঘিরে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে বিএনপি অনুসারীদের মধ্যে। গত কয়দিন থেকে উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে হাটে-বাজারে চায়ের আড্ডায় কাউন্সিলের উত্তাপ বইছে। বিএনপি ছাড়াও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও সুশীল সমাজের মধ্যে আলোচনায় স্থান পাচ্ছে কুলাউড়া উপজেলা বিএনপির কাউন্সিল। দলের
কেউ কেউ মনে করছেন এখন তরুণ নেতৃত্বের যুগ। বিএনপির তরুণ ভোটারদের সমর্থন থেকেই এবার নেতা নির্বাচিত হবেন। বিএনপির ইউনিয়ন কমিটিগুলোতে তরুণ ভোটার থাকায় বিভিন্ন পদের প্রার্থীরা তাদের দিকে নজর বেশি রাখছেন।
জানা গেছে, কুলাউড়া উপজেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক কাউন্সিল ও সম্মেলনে সভাপতি পদে সাবেক দুই সভাপতি মুখোমুখি হচ্ছেন। তার মধ্যে দুইবারের সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব শওকতুল ইসলাম শকু, সাবেক সভাপতি ও কুলাউড়া পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর আলহাজ্ব জয়নাল আবেদীন বাচ্চু রয়েছেন।
সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে চারজন লড়ছেন, তারা হলেন বিএনপি নেতা ও ভূকশিমইল ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান মনির, বিএনপি নেতা ও রাউৎগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল জামাল, উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক বদরুল হোসেন খান ও বিএনপি নেতা জয়নুল ইসলাম জুনেদ।
সাধারণ সম্পাদক পদে ৩ প্রার্থী হলেন সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কুলাউড়া ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি বদরুজ্জামান সজল, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রনেতা সুফিয়ান আহমদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদ চৌধুরী।
সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন ৩ জন প্রার্থী। তন্মধ্যে জয়চণ্ডী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক ছাত্রনেতা কমর উদ্দিন আহমদ কমরু, উপজেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক মইনুল হক বকুল, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক আহবায়ক সারোয়ার আলম বেলাল।
সাংগঠনিক সম্পাদক পদে ৫ জন প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। তারা হলেন সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, ইউপি সদস্য আব্দুল মুক্তাদির মনু, সাবেক ছাত্রনেতা নুরুল ইসলাম ইমন, ব্রাহ্মণবাজার বিএনপি নেতা মহিউদ্দিন স্বপন, ভাটেরা বিএনপি নেতা সিপার আহমেদ।
এদিকে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক হিসেবে রয়েছেন এডভোকেট আবেদ রাজা। নির্বাচন পরিচালনার জন্য ৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটিতে উপজেলা বিএনপির আহবায়ক রেদোয়ান খান প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্বে রয়েছেন।
মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির আহবায়ক ফয়জুল করিম ময়ূন বলেন, এবারের কাউন্সিলে কুলাউড়া উপজেলার ১৩ ইউনিয়নের ৯২৩ জন কাউন্সিলার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। বিএনপির মধ্যে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া আছে। এই প্রক্রিয়ায় নেতা নির্বাচন দলের জন্য অত্যন্ত ইতিবাচক। নেতাকর্মীসহ বিএনপির সমর্থকেরা উচ্ছ্বসিত।
আপনার মতামত লিখুন :