২৯ জুন শনিবার সকাল বেলায় জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে “গভর্নেন্স এবং পলিসি রিসার্চ” এর উদ্যোগে “সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার অন্তরায় ও করনীয়” শীর্ষক একটি সেমিনার শিক্ষবিদ ড. মাহবুব উল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।
এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক কর্ণেল মোহাম্মদ আবদুল হক, পিএসসি (অবঃ)। অনুষ্ঠানে কর্ণেল মিয়া মশিউজ্জামান, লে. কর্ণেল আবু ইউসুফ যোবায়ের উল্লাহ, ব্যারিস্টার সরোয়ারসহ বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাবেক নির্বাচন কমিশনার বিচারপতি মোহাম্মদ আবদুর রউফ বাংলাদেশে চলমান সমস্যায় ভারতের অন্তর্ভুক্তি প্রসঙ্গে বলেন “ভারত বাংলাদেশ নিয়ে চরম আতংকে রয়েছে। বাংলাদেশের ভূখন্ড ব্যবহার করে ভারতের সেভেন সিস্টার্সসহ বাংলাদেশের কিছু অংশ নিয়ে আলাদা একটি রাষ্ট্র গঠনের আন্তর্জাতিক চেষ্টা চলমান থাকাটাই ভারতের আতংকের প্রধানতম কারণ। ভারত আতংকে থাকায় দূর্বল ও জনবিচ্ছিন্ন শেখ হাসিনা সরকার থেকে একের পর এক সুবিধা আদায় করে নিচ্ছে। সম্প্রতি সম্পাদিত রেল ট্রানজিট চুক্তি তারই অংশ বিশেষ। ভারতের জায়গায় আমি থাকলে আমিও তাই করতাম।” “ভারতের জায়গায় আমি থাকলে আমিও তা-ই করতাম”- এরকম বক্তব্য বিগত চার বছরে আমি অনেকবার দিয়েছি -এ যেন আমার বক্তব্যের প্রতিধ্বনি।
প্রধান অতিথি সাবেক নির্বাচন কমিশনার বিচারপতি মোহাম্মদ আবদুর রউফ যাকে ইসলামী মুল্যবোধে বিশ্বাসী বিএনপি ঘরানার লোক হিসেবে মনে করা হয় তাছাড়া অনেকে তাঁকে জামায়াতের লোক বলেও মনে করে থাকেন-সেই তিনি তাঁর পূর্বে কয়েকজন বক্তা ইসলামি সমাজ ব্যবস্থা সম্পর্কিত বক্তব্য রাখলে তিনি তাদের বক্তব্যের মৃদু সমালোচনা করে প্রশ্ন তুলেন, “ধর্মের কতটুকু আপনারা বুঝেন?” ধর্মীয় বিভিন্ন বিষয়ে ধর্মীয় রাজনীতিবিদদের মতদ্বৈততার প্রসঙ্গ টেনে বিভিন্ন উদাহরণের মাধ্যমে বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে ধর্মীয় বিষয় আপাতত টেনে না আনার জন্য পরামর্শ দেন তিনি। তাঁর বক্তব্য বিভিন্ন সময়ে আমি শুনে আসলেও আমার বক্তব্যের সাথে মিলে সেরকম বক্তব্য পাইনি কিন্তু ২৯ জুন ২০২৪ তারিখে তাঁর দেওয়া বক্তব্য বিগত চারবছর ধরে আমি যেভাবে বক্তব্য দিয়ে আসছি হুবহু সেরকম বক্তব্য শুনে আমি আমার ফর্মূলার গ্রহণযোগ্যতার বিষয়ে শতভাগ আশাবাদী হয়ে যাই।
আমার নিম্নোক্ত বক্তব্যগুলোসহ সব বক্তব্য সামনে এরকম ব্যক্তিরা দেশকে বাঁচানোর স্বার্থে বলবেন-এ ব্যাপারে আমি নিশ্চিত। দেশের চূড়ান্ত ক্ষতি হওয়ার আগে দেশবাসীকে আমার ফর্মূলা নিয়ে চিন্তা করার আহবান জানাচ্ছি।
বিএনপির আমলে (২০০৪ সালে) ১০ ট্রাক অস্ত্র কান্ডের মাধ্যমে ভারতের কাছে চরম আতংকের কারণ হিসেবে ধরা পড়ে বাংলাদেশ। সেই আতংক হেতু ভারত এতোবছর আওয়ামীলীগকে সব ধরনের অনৈতিক সহযোগিতা দিয়ে আসছে। অন্যদিকে আওয়ামীলীগও বিএনপির কারণে চরম আতংকে আছে। আতংকে থাকা দুটি পক্ষ এক হয়ে বাংলাদেশের সর্বনাশ করে আসছে এবং ভবিষ্যতে আরো করতে থাকবে। এটা বুঝতে পেরে চার বছর আগে বাংলাদেশ ঐক্য পার্টি গঠন করে ভারত ও আওয়ামীলীগকে আতংকমুক্ত করে বাংলাদেশকে রক্ষার জন্য আমি চেষ্টা চালিয়ে আসছি। আমার চেষ্টার ফর্মূলা আমার মাধ্যমে বাস্তবায়ন হতে হবে এরকম স্বার্থপরতা আমার মধ্যে না থাকায় আমার ফর্মূলা বাস্তবায়নে প্রায় সব দলকে বিগত চার বছর ধরে আহবান জানিয়ে আসছি।
দেশ বাঁচলেই তো আপনারা আপনাদের দলের আদর্শ দেশে বাস্তবায়ন করতে পারবেন। এখন তো দেশ চূড়ান্তভাবে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। দেশ ধ্বংস হয়ে গেলে কোথায় আপনাদের আদর্শ বাস্তবায়ন করবেন? আর তাই আপাতত নিজেদের ব্যক্তিগত কিংবা দলীয় আদর্শ সাময়িকভাবে স্থগিত রেখে কিংবা দলীয় আদর্শ প্রচারের পাশাপাশি দেশ বাঁচাতে আপনাদের সবাইকে কিছু সর্বজনীন বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ঐক্যমত ও ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশকে বাঁচিয়ে দিয়ে ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ফিরিয়ে এনে পুনরায় আপনারা আপনাদের নিজেদের আদর্শ বাস্তবায়নে পূর্ণ মনোযোগ দিতে পারবেন। আর তাই দেশ বাঁচানোর সর্বজনীন প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ ঐক্য পার্টিতে যোগদান করে কিংবা বাংলাদেশ ঐক্য পার্টির ফর্মূলা নিজেরা গ্রহণ করে দেশকে বাঁচিয়ে দেওয়ার জন্য আমি উদাত্ত আহবান জানাচ্ছি।
দেশীয় ও আঞ্চলিক সংকট শান্তিপূর্ণভাবে সমাধানের প্রবক্তা ও প্রতিষ্ঠাতা বাংলাদেশ ঐক্য পার্টি।
মন্তব্য করুন