নূরুজ্জামান ফারুকী হবিগঞ্জ থেকে ॥
বানিয়াচং হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচ এন্ড এফপিও) ডাক্তার শামীমা আক্তার সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। ফলে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সেবা প্রার্থীরা।প্রতিটি হাসপাতাল ক্যাম্পাসে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কোয়ার্টার রয়েছে। সেখানে তিনি অবস্থান করার কথা। কিন্তু ডাক্তার শামীমা আক্তার বানিয়াচঙ্গে যোগদানের পর থেকে একদিনও হাসপাতাল ক্যাম্পাসে ২৪ ঘন্টা অবস্থান করেননি। তিনি হবিগঞ্জ শহরে বসবাস করে থাকেন। সেখান থেকে সকাল সাড়ে ১০টা/১১টার দিকে বানিয়াচং হাসপাতালে আসেন, তা-ও অনিয়মিত। যেদিন আসেন সেদিন দুপুর দেড়/২টার পরই পুনরায় হবিগঞ্জ চলে যান। তিনি কর্মস্থলে বসবাস না করায় বানিয়াচং হাসপাতাল থাকে অভিভাবক শূন্য। এর ফলে বানিয়াচং হাসপাতালে চিকিৎসা ক্ষেত্রে দেখা দিয়েছে চরম অব্যবস্থাপনা। বানিয়াচং উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন থেকে প্রতিদিনই শতশত রোগী এখানে আসেন চিকিৎসা সেবা নেয়ার জন্য। কিন্তু পান না সুচিকিৎসা। হাসপাতালে ভর্তি হলে পড়তে হয় নার্সদের রোষানলে। সেবার বদলে তাদের সাথে করা হয় দূর্ব্যবহার। বানিয়াচং হাসপাতালে এহেন চিত্র ধরা পড়েছে হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য বানিয়াচং প্রেসক্লাব সভাপতি ইমদাদুল হোসেন খান ও সদস্য বানিয়াচং উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক আঙ্গুর মিয়ার আকস্মিক পরিদর্শনে। শনিবার রাতে পরিদর্শনকালে তাদের চোখে ধরা পড়ে শ্বাসকষ্ট, পেটের ব্যাথা, জ্বর, ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগাক্রান্ত মানুষ ভর্তি রয়েছেন। কিন্তু সঠিকভাবে সেবা পাচ্ছেন না। এনিয়ে রোগীদের স্বজনরা তাদের কাছে অভিযোগ করেন। জরুরী বিভাগে একজন ঔষধ কোম্পানির রিপ্রেজেনটেটিভের শ্যালক রোগী দেখছেন এবং প্রেসক্রিপশন করছেন। তার কথামতো রোগী ভর্তি করা হচ্ছে, লোকটির নাম জহিরুল। তিনি হাসপাতালের ডাক্তার না হয়েও সরকারি চেয়ারে বসে রোগী দেখেন, নিম্নমানের ঔষধ লিখেদেন বলে লোকজন অভিযোগ জানান। পরিদর্শনকালে ২য় তলায় গিয়ে দেখা যায় ডাক্তার সুস্মিতা রাউন্ড দিচ্ছেন, তাঁর সামনেই রোগীদের অনেক অভিযোগ। সব ইনজেকশন নাকি বাহির থেকে কিনে আনতে হয়, নার্সদের সাথে নাকি একবারের বেশি দুইবার কথাই বলা যায় না, বললেই দুর্ব্যবহার করা হয়। শুধু তাই নয় নার্সদের পছন্দমত কোম্পানীর ঔষধ না নিয়ে আসলে পুনরায় আবার তাদেরকে নিম্নমানের কোম্পানীর ঔষধ আনতে বাধ্য করা হয়। প্রচন্ড তাপদাহে যখন বিদ্যুৎ চলে যায় তখন রাজারহালে ডিউটি ডাক্তার ও নার্সস্টেশন রুমে আইপিএস দ্বারা বৈদ্যুতিক পাখা ও লাইট সচল রেখে আরাম আয়েশ করতে থাকেন। কিন্তু ওয়ার্ডগুলোতে আইপিএস কিংবা জেনারেটর দ্বারা বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয় না। এসময় চরম কষ্ট পোহাতে হয় ভর্তিকৃত রোগীদের। খাবার নিয়েও রোগী এবং তাদের সাথে থাকা স্বজনরা অভিযোগ করেন। ১ জুন সকালে যেসব রোগীরা ভর্তি হয়েছেন তাদেরকে সকাল, দুপুর এবং রাতের বেলা খাবার দেয়া হয়নি। ৫/৬ দিন ধরে যেসব রোগী ভর্তি রয়েছেন তারা জানালেন সবাইকে নাকি ভর্তি হওয়ার একদিন পর খাবার দেয়া হয়। খাবারের মান নিয়েও রোগীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে ধরেন রোগী ও তাদের স্বজনরা। ডিউটিরত ডাক্তার সুস্মিতার সামনে যখন রোগী এবং তাদের স্বজনরা এসব অভিযোগ করছিলেন তখন তিনি এসব বিষয়ে কোন সদুত্তোর দিতে পারেননি।
অনুসন্ধানে জানা যায়, বানিয়াচং হাসপাতালের ইউএইচ এন্ড এফপিও ডাক্তার শামীমা আক্তার কর্মস্থলের বাহিরে অবস্থান করেন। তিনি হবিগঞ্জ শহরে একাধিক প্রাইভেট হাসপাতালে চেম্বার ও অপরেশন করেন।
রোববার সকাল ১১ টার দিকে বানিয়াচং হাসপাতাল সরেজমিন পরির্শনকালে ডাক্তার শামীমা আক্তারকে কর্মস্থলে পাওয়া যায়নি। এসময় তার অফিসে খোঁজ নিলে তারা জানায় উনি অসুস্থ। এজন্য হাসপাতাল আসেন নি। সাংবাদিক পরিচয় জানতে পেরে হাসপাতালে সেবা নিতে আসা প্রদীপ, তোফাজ্জ্বলসহ একাধিক লোক অভিযোগ করে বলেন, আমরা গ্রামের মানুষ অনেক দূর থেকে আসি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে। কিন্তু এখানে এসে পড়তে হয় চরম বিরম্ভনায়। এসকল বিষয়ে হাসপাতালের বড় ডাক্তার (ইউএইচ এন্ড এফপিও) এর কাছে অভিযোগ জানাতে গেলে তাকে পাই না। অন্য কাউকে জিগাইলে তারা বলেন উনি কোথায় আছেন এটা জেনে আপনাদের দরকার কি?
রোববার সকাল ১১ টার দিকে বানিয়াচং হাসপাতাল সরেজমিন পরির্শনকালে ডাক্তার শামীমা আক্তারকে কর্মস্থলে পাওয়া যায়নি। এসময় তার অফিসে খোঁজ নিলে তারা জানায় উনি অসুস্থ। এজন্য হাসপাতাল আসেন নি। সাংবাদিক পরিচয় জানতে পেরে হাসপাতালে সেবা নিতে আসা প্রদীপ, তোফাজ্জ্বলসহ একাধিক লোক অভিযোগ করে বলেন, আমরা গ্রামের মানুষ অনেক দূর থেকে আসি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে। কিন্তু এখানে এসে পড়তে হয় চরম বিরম্ভনায়। এসকল বিষয়ে হাসপাতালের বড় ডাক্তার (ইউএইচ এন্ড এফপিও) এর কাছে অভিযোগ জানাতে গেলে তাকে পাই না। অন্য কাউকে জিগাইলে তারা বলেন উনি কোথায় আছেন এটা জেনে আপনাদের দরকার কি?
এসব অনিয়মের বিষয়ে ইউএইচ এন্ড এফপিও ডাক্তার শামীমা আক্তার’র সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমি হবিগঞ্জ আছি। বানিয়াচং হাসপাতালে না থেকে আপনি হবিগঞ্জে কেন এ প্রশ্ন করলে তখন তিনি বলেন, আমি অসুস্থ এজন্য আজকে বানিয়াচং হাসপাতালে যাইনি। হাসপাতালে কোয়াটারে না থাকার বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি এড়িয়ে যান।
এসকল বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডাক্তার মোহাম্মদ নূরুল হক’র দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বানিয়াচং হাসপাতালের এহেন কর্মকান্ড সম্পর্কে অবগত নন বলে জানান। ডাক্তার শামীমা আক্তার কর্মস্থলে না থেকে হবিগঞ্জে অবস্থান করেন, এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। যদি এমন হয়ে থাকে অবশ্যই এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ReplyForward |
মন্তব্য করুন