নূরুজ্জামান ফারুকী হবিগঞ্জ থেকে।
নবীগঞ্জে বিলুপ্তির পথে ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলা। এক সময় খুব জনপ্রিয় ছিলো এই খেলা। প্রতিটি পাড়া মহল্লায় খেলোয়াড়দের দলনেতার উদ্যোগে গড়ে উঠত লাঠি খেলার দল। আর পাড়ায় পাড়ায়, গ্রামে গ্রামের মধ্যে অনুষ্ঠিত হতো এই খেলা।
ঢাক-ঢোল পিটিয়ে প্রচার করা হতো কোন গ্রামের কোন মাঠে বা কার বাড়িতে কোন সময় এই খেলা অনুষ্ঠিত হবে। নিজেদের নিত্যদিনের কাজ দ্রুত সমাপ্ত করে ছুটে যেত খেলা দেখার জন্য। বাড়ির আঙিনায় এই খেলা দেখার জন্য ঘরের চালে গাছের ডালে ভীড় জমাতো যুবকেরা আর বেড়ার ফাঁকে, জানালা খুলে খেলা দেখতো মা-বোনেরা । আর সে দিনের সেই কাঠের টুল আর পিড়ি পেড়ে বসে খেলা দেখত বৃদ্ধরা । দর্শকদের হাতে তালি আর মুখের জয়ধ্বনি খেলোয়াড়দের আনন্দ যোগাত।
কিন্তু কালের আবর্তে লাঠি খেলার সেই বিনোদন ভুলতে বসেছে দেশের মানুষ। বর্তমানে নতুন করে লাঠি খেলার কোনো সংগঠন বা দল তৈরি হচ্ছে না। কালের আর্বতে সেই লাঠি খেলার স্থান দখল করে নিয়েছে ক্রিকেট, ফুটবল, ভলিবল, ব্যাটমিন্টন। তাছাড়াও অতীতের খেলার পরিবর্তে মোবাইলে চলছে পাপজি, ফিরিফার্য়ার সহ বিভিন্ন ধরনের খেলা। যেখানে ধনাঢ্য পরিবারের সদস্যেরা স্থান পেলেও গ্রাম-বাংলা দরিদ্র পরিবারের লোকেরা আধুনিক যুগের খেলা দেখার জন্য ছুটি যায় প্রতিবেশীদের ঘরের টিভির কাছে, কিন্তু শত বাধা-বিপত্তিকে উপেক্ষা করে গ্রাম-বাংলায় আজও দুয়েকটি জায়গায় চলে অতীতের লাঠি খেলা।
খেলার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ঢোল আর লাঠির তালে তালে নাচ, অন্যদিকে প্রতিপক্ষে লাঠির আঘাত হতে আত্মরক্ষার কৌশল অবলম্বনের প্রচেষ্টায় টান টান উত্তেজনায় বিরাজ করত খেলোয়াড় ও দর্শকদের মাঝে।
মন্তব্য করুন